Cvoice24.com

চট্টগ্রামে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব: নগরে সুযোগ মিললেও বঞ্চিত উপজেলার ১৯০টি প্রতিষ্ঠান

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:৪০, ২ আগস্ট ২০২২
চট্টগ্রামে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব: নগরে সুযোগ মিললেও বঞ্চিত উপজেলার ১৯০টি প্রতিষ্ঠান

তৃণমূল পর্যায়ে শিক্ষার উন্নয়নে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ ও আইসিটি শিক্ষা সম্প্রসারণ লক্ষ্যে ২০১৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত উচ্চ মাধ্যমিক ও মাদ্রাসায় সারাদেশে ৪ হাজার ১টি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়। গতানুগতিক শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের অধীনে দক্ষ জনশক্তি গড়তে শুরু হয় ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থা।
 
এরই আওতাধীন  ২০১৭-২০২২ সালে দুই ধাপ মিলে চট্টগ্রাম জেলার নগর ও উপজেলা ভিত্তিক মোট ৪১৮ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয় ডিজিটাল ল্যাব।

নগর ভিত্তিক শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন ছাত্রছাত্রীদের মাঝে আগ্রহের পরিমাণ দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়। সিএমপি স্কুল এন্ড কলেজ ৯তম শ্রেণীর ছাত্র আর্য দাশ সিভয়েসকে বলেন, ডিজিটাল ল্যাবে ক্লাস করার মাধ্যমে আইসিটির সিলেবাসে থাকা এচটিএমএল নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারছি। এছাড়াও আইসিটির যেকোন বিষয় প্রাক্টিক্যালি ক্লাস থেকে জানতে, শিখতে ও বুঝতে পারছি। 

অন্যদিকে ৪৫ মিনিটের ক্লাসে বসে নানো-টেকনোলজি দিয়ে প্রাথমিক ধারণা হয় তারেক হোসেনের। তিনি সিভয়েসকে বলেন, বর্তমান যুগ আইসিটির যুগ। আমাদের দৈনন্দিন জীবন দিনকে দিন ডিজিটাল নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। এই আধুনিকায়নের যুগে এইরকম ডিজিটাল ব্যবস্থায় পাঠদানের কারণে আগামিতে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে ভূমিকা পালন করবে। 

ডিজিটাল ল্যাবকে ঘিরে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নিয়ে আগ্রহ দেখে আরেকটি ল্যাব স্থাপন করতে চায় সিএমপি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, বর্তমানে এক ক্লাসে ৩২ জন শিক্ষার্থী ক্লাস করতে পারলেও এই ডিজিটাল ল্যাবকে ঘিরে ছাত্র ছাত্রীদের উৎসাহ উদ্দীপনা দেখে আরো একটা ল্যাব করে স্থাপনের জন্য আইসিটি অধিদপ্তরে আবেদন করেছি। এখানে ডিজিটাল স্মার্ট বোর্ড থাকায় ক্লাস আরো প্রাণবন্ত হয়েছে। 

তবে নগর ভিত্তিক ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন সুফল বয়ে আনলেও উপজেলা পর্যায়ে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পরেও চালু হয়নি ল্যাব।  শুধুমাত্র আইসিটি বিভাগের জন্য শিক্ষক নেই এমন দোহাই দিয়ে ডিজিটাল ল্যাব স্থাপনে ঢিলেমি করা হচ্ছে।

রাউজানের ডাবুয়া তারাচরণ শ্যামাচরণ উচ্চ বিদ্যালয় নেই আইসিটি বিষয়ে কোন শিক্ষক। সিভয়েসের প্রতিবেদক সরেজমিনে গিয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রণজিৎ দাসের সাথে। তিনি সিভয়েসকে বলেন, এক মাসে আগে ঢাকা থেকে লোক এসে ল্যাবের জিনিসপাতি বসিয়ে চলে যায়। আইসিটি বিষয়ে আমাদের কোন শিক্ষক নেই। আমরা এখনও জানি না আইসিটি বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ আমাদের পক্ষ থেকে হবে নাকি আইসিটি অধিদপ্তর থেকে। 

একই অবস্থা দেখা গেছে গর্জনীয়া রহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় (ডিগ্রী)। ফাজিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ রফিক আহমদ ওসমানী সিভয়েসকে বলেন, ল্যাব নিয়মিত চালানোর জন্য একজন শিক্ষক লাগবে। এইছাড়ও এইসবের সুনির্দিষ্ট ব্যবহার নিয়ে আমাদের জানানো হয়নি। ডিজিটাল ল্যাব আমাদের মাদ্রাসার ছাত্রদের জন্য সুফল বয়ে আনবে। কিন্তু যথোপোযুক্ত ব্যবহার করতে না পারলে বাংলাদেশ সরকারের এই পদক্ষেপ কাজে আসবে না। 

চট্টগ্রামে স্থাপিত প্রতিটি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবে আছে ১৭টি উচ্চ ক্ষমতা সপন্ন ল্যাপটপ। আছে ৩২ জন শিক্ষার্থী এক সাথে ক্লাস করার সুবিধা। এর পাশাপাশি আছে ডিজিটাল স্মার্ট বোর্ড, ওয়াই-ফাই রাউটার, আছে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন। 

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর প্রধান সাঈফ মো. জুলকার নাঈন চৌধুরী (প্রোগ্রামার) সিভয়েসকে বলেন, চট্টগ্রামের প্রতিটি সংসদ আসন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম আসলে আইসিটি অধিদপ্তর থেকে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের কাজ এখনো প্রক্রিয়াধীন। এই বছরের মধ্যে চট্টগ্রামে প্রতিটি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবে পাঠদান কর্মসূচি পুরোদমে চলতে থাকবে।

চলছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব। অনান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখতে আইসিটি অধিদপ্তর থেকে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের পাশাপাশি ইউরোপীয় শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে অনুকরণ করে চট্টগ্রামের প্রতিটি আসনে থাকবে ‘স্কুল অব ফিউচার’। বর্তমানে নগরের পাথরঘাটা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন অবস্থায় আছে ‘স্কুল অব ফিউচার’। 

সিভয়েস/ডিসি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়