Cvoice24.com

টেকনাফে ভোটার হতে পদে পদে ভোগান্তি

টেকনাফ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫:২০, ৫ আগস্ট ২০২২
টেকনাফে ভোটার হতে পদে পদে ভোগান্তি

কক্সবাজারের টেকনাফে ১ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে ভোটার হালনাগাদ। আগামী ২২ আগস্ট পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলমান থাকবে। নতুন ভোটার হতে উইপোকার মত ছুটছে ভোটার প্রত্যাশীরা। সংগ্রহ করছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি। একজন ভোটার প্রত্যাশীকে সংগ্রহ করতে হচ্ছে ১৫ থেকে ২২ প্রকারের ডকুমেন্ট। এসব ডকুমেন্টে ভিন্ন ভিন্ন স্বাক্ষর প্রয়োজন হওয়ায় যেতে হচ্ছে চেয়ারম্যান, মেম্বার, ইউপি সচিব, চৌকিদার, ভূমি অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে। ফলে পদে পদে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ ভোটার প্রত্যাশীরা।

ভোটার প্রত্যাশীদের অভিযোগ এসব কাগজপত্র সংগ্রহ করতে গিয়ে দিতে হচ্ছে টেবিলে টেবিলে উৎকোচ। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে, ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাক্ষর মিললেও টাকা ছাড়া ফাইল ছাড়েনা বলে অভিযোগ ভোটার প্রত্যাশীদের। অনেক মহিলারা ছোট ছোট বাচ্চা কোলে নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে স্বাক্ষর ছাড়াই চলে যাচ্ছেন। পরের দিন সকালে এসেও দেখে একই চিত্র। 

এইদিকে ভূমিহীন মানুষগুলো অতুলনীয় ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। নিয়মানুযায়ী ভূমিহীন সনদে চেয়ারম্যান কর্তৃক স্বাক্ষরের পর ভূমি অফিস থেকে স্বাক্ষর নেয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে হ্নীলা ভূমি অফিসের কিছু অসাধু কর্মচারী যাচাই-বাছাইয়ের নামে ফাইল প্রতি কমপক্ষে ১শ টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। 

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরফানুল হক বলেন, এখনো পর্যন্ত এই ধরণের কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে প্রমাণসহ অভিযোগ পেলে অবশ্যই কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তদুপরি, কাগজপত্র সংগ্রহ তথা যাচাই-বাছাইয়ে কালক্ষেপন হওয়ায় নির্বাচন অফিসের বেঁধে দেয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভোটার হতে পারবে কিনা তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছে ভূমিহীন মানুষগুলো। 

অন্যদিকে, উপজেলার প্রায় ইউনিয়ন পরিষদে উদ্যোক্তাদের উৎকোচ নেয়ার বিষয়ে অভিযোগ ওঠলেও সবকিছু চাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শেখ ফরিদ আলম। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগের পাহাড়। খোদ ওই ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্যরাও তার অনিয়ম ও দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ বলে জানিয়েছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ইউপি সদস্য  ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ইউপি সচিব (শেখ ফরিদ) ইউপি সদস্যদের পর্যন্ত পাত্তা দেয়না। ইউপি সদস্য হওয়ার পরেও কোনো কাগজে স্বাক্ষর করার অনুরোধ করলে নানা অজুহাত দিয়ে কালক্ষেপন করে। তার এমন কর্মকাণ্ডে পরিষদে যেতে অনিহা চলে আসছে।’

ভুক্তভোগী ভোটার প্রত্যাশীরা অভিযোগ করে বলেন, প্রতি ফাইলে ১শ টাকা থেকে শুরু করে ইচ্ছেমতো টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওই ইউপি সচিব। কোনো ভাবেই টাকা ছাড়া সে ফাইল ছাড়ে না। তাছাড়া এমন ভাবখানা দেখায় সে, যেন মন্ত্রিপরিষদের সচিব।

অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দরজা সেবাগ্রহীতাদের জন্য সবসময় খোলা থাকলেও ইউপি সচিবের কক্ষের দরজা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে এইদিক থেকে ইউপি সচিব সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। কক্ষের দরজা বন্ধ রাখলেও জানালা দিয়ে ঠিকই ফাইল আদান-প্রদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। চাহিদামতো উৎকোচ দিলেই তবে মিলছে সীল, স্বাক্ষর। 

এবিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে হ্নীলা ইউপি সচিব শেখ ফরিদ আলম বলেন, আমি মিটিংয়ে আছি, পরে ফোন দেবো বলে লাইন কেটে দেয়।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়