Cvoice24.com

বান্দরবানে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর গুলি বিনিময়, ১ সেনা কর্মকর্তাসহ নিহত ৪

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০:৪০, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২
বান্দরবানে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর গুলি বিনিময়, ১ সেনা কর্মকর্তাসহ নিহত ৪

নিহত সেনা সদস্য, উদ্ধার করা অস্ত্র ও গুলি এবং তিন সন্ত্রাসীর মরদেহ। ছবি : আইএসপিআর।

বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনীর টহল দলের ওপর জেএসএস সন্তু গ্রুপের সদস্যরা হামলা চালিয়েছে। এ সময় গুলিতে সেনাবাহিনীর একজন সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার সহ তিনজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিহত এবং একজন সেনা সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছে। 

গত বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রুমার পাংখো পাড়ায় এই হামলার এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)। 

আহত ও নিহত সেনা সদস্যরা হলেন— নিহত সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান ও আহত সৈনিক ফিরোজ।

ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে ১ টি এসএমজি, ২৭৫ রাউন্ড তাজা গুলি, ৩ টি এম্যোনিশন ম্যাগাজিন, ৩ টি গাদা বন্দুক, গাদা বন্দুকের ৫ রাউন্ড গুলি, ৪ জোড়া ইউনিফর্ম এবং চাঁদাবাজির নগদ ৫২ হাজার ৯০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে সেনা টহল দল উক্ত এলাকায় ব্যাপক তল্লাশী জারি রেখেছে এবং স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। 

আইএসপিআর জানিয়েছে, জেএসএস সন্ত্রাসীদের একটি দল রুমা উপজেলার বথিপাড়া এলাকায় চাঁদাবাজি জন্য আগমন করবে এমন তথ্যের ভিত্তিতে রাইং খিয়াং লেক আর্মি ক্যাম্প থেকে সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবের নেতৃত্বে একটি টহল দল বথিপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বুধবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে টহল দলটি উক্ত এলাকায় পৌঁছালে পাড়ার নিকটস্থ একটি জুম ঘর থেকে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত গুলি বর্ষণ করে।

জবাবে সেনা টহল দলের সাহসী পাল্টা হামলায় সন্তু লারমার মদদপুষ্ট জেএসএস মূল দলের তিনজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। এ সময় পলায়নপর সন্ত্রাসীদের এলোপাথাড়ি গুলিতে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে টহল কমান্ডার সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন এবং ফিরোজ নামে এক জন সেনাসদস্য ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। আহত সেনা সদস্যকে বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। 

আইএসপিআর আরও জানিয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির অনুচ্ছেদ ‘ঘ’ এর ধারা অনুযায়ী সকল অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দেওয়ার মাধ্যমে তৎকালীন শান্তিবাহিনী সকল সদস্যের আত্মসমর্পণের শর্ত থাকলেও সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস তা ভঙ্গ করে। চুক্তি সম্পাদনের পরবর্তী সময় থেকেই সশস্ত্র সন্ত্রাসী লালন করে আসছে। যদিও প্রায় সময়ে সন্তু লারমা ও তার দল সরকারের বিরুদ্ধে শান্তি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ ও বাস্তবায়ন না করার অভিযোগ করে থাকে।

বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে তৎপর চারটি আঞ্চলিক দল হত্যা, গুম ,চাঁদাবাজি ইত্যাদি দুষ্কৃতিমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার মাধ্যমে পাহাড়ের নিরীহ সাধারণ মানুষের জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। পাশাপাশি সশস্ত্র আন্দোলনের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ হতে বিচ্ছিন্ন করে স্বাধীন জুম্মল্যান্ড সৃষ্টি পায়তারা করছে, যা নিঃসন্দেহে দেশদ্রোহিতার শামিল। এ পরিস্থিতিতে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী বুকের রক্ত দিয়ে হলেও দেশের স্বাধীনতা ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষায় বদ্ধপরিকর।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়