ট্রাক কাভার্ড ভ্যান ভাড়া প্রথায় শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের উদ্যোগ
ছবি : সিভয়েস
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস হওয়া পণ্য পরিবহনে ট্রাক কাভার্ড ভ্যান ভাড়ায় দীর্ঘদিনের নৈরাজ্যের অবসান হতে চলেছে। এজন্য বন্দোবস্ত প্রথা চালু করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ(সিএমপি)। প্রথার অংশ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্রোকারদের ডাটাবেজ তৈরী করছে সিএমপি। দেয়া হচ্ছে পরিচয় পত্র বা স্মার্ট কার্ড।
দীর্ঘদিন ধরে এ সেক্টরে ট্রাক কাভার্ড ভ্যান ভাড়া নিয়ে অরাজকতা চলে আসছে। সাধারনত চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য অন্য জেলায় পরিবহনে আমদানিকারক কিংবা সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান পরিবহন মালিকের দ্বারস্থ হন।কিন্তু গাড়ী স্বল্পতা কিংবা নানা জটিলতায় গাড়ি না পেলে তারা ব্রোকারদের শরণাপন্ন হন। ব্রোকাররা কমিশনের ভিত্তিতে গাড়ী ভাড়া দিয়ে থাকেন।গাড়ি ঠিক করে কমিশন নিলেও তারা গাড়ির মালিক নন। অনেক পরিবহন মালিক এসব ব্রোকার তৈরী করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।অবশ্য এলাকার প্রভাবশালীরাও জোর করে ব্রোকারের কাজ নিয়ে থাকে।তাদের কাছে জিম্মি, পরিবহন মালিক।
চট্টগ্রামে আন্তঃজেলা পণ্য পরিবহনে সবচেয়ে বড় ঘাঁটি নগরীর কদমতলী ও মাঝির ঘাট এলাকা ।একাজে নিয়োজিত কয়েক হাজার ব্রোকার কাজ করে আসছে। তবে তাদের সঠিক পরিসংখ্যান ট্রাক মালিকদের কাছেও নেই।মূলত এলাকার প্রভাবশালীরাই এ কমিশন ব্যাবসা নিয়ন্ত্রন করে থাকে। এনিয়ে অতীতে বহুবার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।অপরাধ করে অনেকে এলাকা ছেড়ে লাপাত্তা হয়ে যায়। সঠিক তথ্য না থাকায় পুলিশও তাদের ধরতে হিমশিম খায়।
গত ডিসেম্বরে কমিশন বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে কদমতলীতে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় যুবদল নেতা হারুনকে। তারপর থেকে পুলিশ প্রশাসন ব্রোকারদের নিয়ন্ত্রনে আনতে এই উদ্যোগ গ্রহন করে।
তারই ধারাবহিকতায় ব্রোকারদের পরিচয় পত্র স্মার্ট কার্ড দেয়া হচ্ছে । শনিবার থেকে সিএমপি এই কাজ শুরু করেছে। প্রথম দফায় ৩১৯ জনকে স্মার্ট কার্ড দেয়া হয়েছে। এতে একটি অঙ্গিকারনামা তৈরী করে তাতে প্রত্যেক ব্রোকারের নাম, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা,জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর, মোবাইল নম্বর, মালিক সমিতির সুপারিশ সহ বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। পুলিশের অনুমোদন নিয়ে ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি এসব কার্ড বিতরণ করছে। পর্যায়ক্রমে বাকীদেরও এর আওতায় আনা হবে।
এবিষয়ে সিএমপির অতিরিক্ত উপ কমিশনার(দক্ষিন)শাহ মোঃ আবদুর রউফ সিভয়েসকে জানান,এতদিন এ সেক্টরটিতে নৈরাজ্য বিরাজ করছিল। ব্রোকারদের নাম ছাড়া আর কোন পরিচয় ছিলনা। এখন ডাটবেজ তৈরী করে একত্রে তাদের একটি শৃংখলার মধ্যে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু করেছি।
পুলিশের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে চট্টগ্রাম ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক জাফর আহমদ বলেন, আশাকরি পণ্য পরিবহন নিয়ে যে জটিলতা ছিলো এতোদিন, প্রশাসনের এধরনের উদ্যোগে তা নিরসন হবে। আশাকরি এর ধারাবাহিকতা থাকবে।
-সিভয়েস/এইচআর
9