Cvoice24.com

কালুরঘাট সেতু পার হতে গিয়ে নদীতে নারী

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:৩৭, ২৭ জুন ২০২১
কালুরঘাট সেতু পার হতে গিয়ে নদীতে নারী

ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে কালুরঘাট সেতু। ছবি: সিভয়েস

একপাশ থেকে গাড়ির লাইনে অন্যপাশ বন্ধ। সময় বাঁচাতে হেঁটে জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতু পার হতে গিয়ে ভাঙা রেলিংয়ে পা পিছলে পড়ে গেছেন এক পথচারী নারী। রবিবার (২৭ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ইমরান হোসেন ইমন সিভয়েসকে এ তথ্য জানান। খবর পেয়ে সিভেয়সের পক্ষ থেকে বোয়ালখালী ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমে বিষয়টি জানানো হলে তারা দ্রুত ওই নারীকে উদ্ধারে টিম রওনা দেওয়ার কথা জানান।

বোয়ালখালী ফায়ার সার্ভিসের লিডার মোস্তাফিজুর রহমান সিভয়েসকে বলেন, আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ওই নারীকে উদ্ধারে টিম পাঠিয়েছি। যদি ডুবুরীর প্রয়োজন হয় তাহলে আগ্রাবাদ থেকে আনা হবে।’

পরে সিভয়েসকে ফিরতি কলে কালুরঘাট ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র স্টেশন অফিসার কাজল মিয়া বলেন, ‘যে নারী নদীতে পরে গিয়েছে তার সাথে থাকা মহিলাটির সাথে আমরা কথা বলেছি। তার ভাষ্য মতে, মেয়েটি তিন ঘণ্টা ধরে সেতু পার হওয়ার চেষ্টা করছিল। এর মধ্যে কিছু ছেলে ওই নারীকে তাড়া করলে সে নদীতে ঝাঁপ দেয়। তবে নদীতে ঝাঁপ দেওয়া ও সাথে থাকা নারী মাদকাসক্ত হতে পারে।’

গেল শুক্রবার সরেজমিনে পুরো সেতু হেঁটে পরিদর্শনে দেখা যায়, পুরো সেতু অন্ধকারচ্ছন্ন। কয়েকটা এলইডি লাইট দেখা গেলেও একটিও জ্বলছে না। গাড়ির সাথে পাল্লা দিয়ে ওই সেতু দিয়ে লোকজন ঝুঁকি নিয়ে হাটছেন। উভয় পাশের ডেক এবং লোহার বেড়া প্রায়শই নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনেকে পা গলে নদীতে পড়তে গিয়েও আবার সাবধান হয়ে রক্ষা পাচ্ছেন। কেননা ওই সেতু দিয়ে কার বা মাইক্রো ধরনের গাড়ি গেলে বেশি জায়গা না থাকায় এসব লোহার বেড়া ধরেই দাড়াতে হয়। কিন্তু বেশিরভাগ স্থানেই লোহার পাইপ নেই আর গাছ নেই। সেকারণে যে কোনও মুহুর্তে পা ফসকে নদীতে পরে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। 

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হওয়ায় কর্ণফুলী নদীর উপরে ব্রিটিশ-যুগের সেতুটি ব্যবহার এখন অনিরাপদ হয়ে পড়েছে এবং অনেক সময় ধরে এ অবস্থা চলছে। উভয় পাশের ডেক এবং লোহার বেড়া প্রায়শই নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এবং সেতুর সারফেসে গর্ত তৈরির ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হওয়ায় সেতুটি দিয়ে চলাচল করা কয়েকশো যানবাহনকে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। চলাচলের উপযোগী রাখার জন্য কর্তৃপক্ষকে মাঝে মধ্যেই সেতুটিকে মেরামত করতে হয়। ষোলশহর থেকে দোহাজারী অংশে যেখানে সেতুটি অবস্থিত সেখানে রেলের সর্বোচ্চ গতিসীমা প্রতি ঘণ্টায় মাত্র ৩০ কিলোমিটার। বোয়ালখালী উপজেলা, পটিয়ার পূর্ব এবং রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মানুষের নদী পার হওয়ার জন্য সেতুটির বিকল্প নেই।

জানতে চাইলে কালুরঘাট সেতুর পশ্চিম পাড়ের লাইনম্যান বলেন, ‘ ব্রিজে কোনও লাইট নেই। কয়েকটি থাকলেও সেগুলো নষ্ট হওয়ায় জ্বলে না। 

এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বোয়ালখালীর চরণদ্বীপের বাসিন্দা মোহাম্মদ সাহেদ বলেন, এ ব্রিজটি বোয়ালখালীবাসীর জন্য অভিসাপ। নতুন ব্রিজতো হচ্ছে না। এর মধ্যে আবার মানুষ পায়ে হেঁটে যে ব্রিজটি পার হবে তাও পারছে না। খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে ব্রিজটি।’ 

ব্রিজ পার হতে হতে মোহাম্মদ আসিফ নামে এক পথচারী বলেন, ‘রেলওয়ের মানুষজন কি এসব দেখে না। ব্রিজ পার হতে গিয়ে অন্ধকারে যে কোনও সময়ে যে কেউ নদীতে পরে যেতে পারে।’ 

-সিভয়েস/এমএম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়