Cvoice24.com

বাজার বসিয়ে টাকা কামালেও রঙ বদলায়নি যাত্রী ছাউনির

মো. নুরুল আলম, চন্দনাইশ

প্রকাশিত: ২১:৫৩, ২১ এপ্রিল ২০২১
বাজার বসিয়ে টাকা কামালেও রঙ বদলায়নি যাত্রী ছাউনির

ছবি: সিভয়েস

চন্দনাইশের সাতবাড়ীয়া মহুরীহাট-দেওয়ানহাট বৈলতলী সড়কের যাত্রী ছাউনিটি অযত্নে-অবহেলায় পড়ে আছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে এটি। অথচ শুধু যাত্রী ছাউনি হিসেবে নয়, সপ্তাহে দুবার নিয়মিত হাট বাজার হিসেবেও ব্যবহার করা হয় এটিকে। এতে করে একদিকে যেমন পথচারীরা দুর্ভোগ পোহান, অন্যদিকে পথচারীরা।

গায়েব হয়ে গেছে চালার টিন। ঢলে পড়েছে চালার অন্যান্য সরঞ্জাম। মেঝের ফ্লোর ভেঙ্গে চৌচির। এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থাতেই সপ্তাহে দুবার সকাল-সন্ধ্যা চলছে বাজার। বছরের পর বছর বাজারটি থেকে রাজস্ব আয় হলেও উন্নয়ন হয়নি কিঞ্চিৎ পরিমাণ। 

পথচারী, দোকানি, হাটে আসা মানুষজনের আক্ষেপের শেষ নেই এনিয়ে। তারা বলছেন, সারাবছর যাত্রী ছাউনিটিকে বাজারের অংশ হিসেবে ইজারা দিয়ে রাজস্ব আয় করেছে প্রশাসন। কিন্তু উন্নয়ন করেনি বিন্দুমাত্র।

পথচারীদের অভিযোগ, রোদ-বৃষ্টিতে আশ্রয় নিতেই প্রয়োজন হয় যাত্রী ছাউনির। অথচ তারা এটি ব্যবহার করতে পারছেন না। একই অভিযোগ বাজারে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের। 

তাদের অভিযোগ, প্রখর রোদে কষ্ট করে হলেও বেচাকেনা করা যায়। পেটের তাগিদে তারা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থাতেই তাদের কাজ সারছেন। তবে বৃষ্টিতে বেচাকেনা গুটিয়ে সরে যেতে হয় তাদের।  

রাকিব হাসান নামে এক পথচারী বলেন, যাত্রী ছাউনিতে শুধু বাসের যাত্রীরা অপেক্ষা করে না। অনেক দূর থেকে আসা পথচারীরাও বিশ্রাম নেয়। বিশেষ করে, রোদ বৃষ্টি থেকে আশ্রয় নিতে যাত্রী ছাউনির প্রয়োজন অনেক বেশি। প্রশাসনের উচিত সহসা এটি সংস্কার করা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, মোহাম্মদখালী, হাজীর পাড়া, ধনার পাড়া, পলিয়া পাড়া, বহরম পাড়া, ছলিয়ার পাড়া, হাছনদন্ডী, তালুকদারসহ আরও বিভিন্ন জায়গা থেকে বাজার করতে আসে। এছাড়া চন্দনাইশ সদর, দোহাজারী, দেওয়ানহাট, বাগিচাহাট, ভগবানহাট চৌধুরী হাট, নাজিরহাট, বৈলতলী ইউনুস মার্কেটসহ বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া যায়। সবমিলিয়ে প্রাচীনতম এ বাজারে সাধারণ মানুষের বসার উপযোগী করে যাত্রী ছাউনিটি নির্মাণ করা হয়। পাশাপাশি বাজারের শেড হিসেবে ব্যবহার করা হয় এটিকে। ছাউনির উপরের অংশে টিন নেই। বের হয়ে গেছে লোহার রড। ক্ষয়ে গিয়ে নড়বড়ে হয়ে গেছে খুঁটিগুলো। পুরোই বেহাল দশা। 

স্থানীয়রা জানান, যাত্রী ছাউনিটি প্রায় দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কার না করায় উপরের ছাদের অংশ ভেঙ্গে পড়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বাজারের ব্যবসায়ীরা উদ্যোগ নিয়ে সামান্য সংস্কার করেছে। তবে বেশিদিন টেকসই হয়নি এটি। আবারও লোহা রড ভেঙ্গে পড়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। 
     
এ ব্যাপারে বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও ইজারাদার মো. আকতার হোসেন বলেন, উপজেলার প্রাচীনতম এ বাজারটি এখনো এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র। তবে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়লেও বাজারের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। দীর্ঘদিন যাবৎ বাজারের জনবহুল এলাকায় যাত্রী ছাউনিটি জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। 

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন উন্নয়ন না করায় এ যাত্রী ছাউনিতে পথচারীবান্ধব পরিবেশ নেই। বসারও ব্যবস্থা নেই। উপজেলার প্রাচীনতম পণ্য বেচা কেনার কেন্দ্র আশরাফ মুহুরীহাট বাজারের এমন বেহাল দশা। দীর্ঘদিন ধরে কোনো উন্নয়ন ও সংস্কারের উদ্যোগ না থাকায় বাজারের এ রকম শোচনীয় অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আহমুদুর রহমান বলছেন, বাজার ফান্ডের আয়ের সঙ্গে উন্নয়ন বাজেটও অত্যন্ত কম। এসব কাজ বাজার উন্নয়ন বাজেট থেকে করতে হয়। তবুও সরেজমিনে পরিদর্শন করে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমতিয়াজ হোসেনকে জানানো হলে তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়