Cvoice24.com

অজপাড়া গাঁয়ে শিক্ষার দ্যুতি ছড়াচ্ছেন অধ্যাপক তৈয়বুর

মো. নুরুল আলম, চন্দনাইশ

প্রকাশিত: ১৯:৩২, ২৫ এপ্রিল ২০২১
অজপাড়া গাঁয়ে শিক্ষার দ্যুতি ছড়াচ্ছেন অধ্যাপক তৈয়বুর

ছবি: সিভয়েস

তৈয়বুর রহমান। পেশায় পটিয়ার হুলাইন ছালেহ-নূর ডিগ্রি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। ত্রিশ বছর আগে বেতনের টাকা, স্ত্রী’র গয়নাগাটি বেচে চন্দনাইশের দক্ষিণ গাছবাড়িয়া এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেন ছৈয়দ মোহাম্মদ পাড়া রহমানিয়া আহমদিয়া এ, এস সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসা। উদ্দেশ্য, অজপাড়া গাঁয়ের দরিদ্র পরিবারের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়ানো।

সেই থেকে থেমে থাকেন নি। স্থানীয় মানুষজনকে সঙ্গে নিয়ে পরের বছর ১৯৯১ সালে ৬ শত জমিতে টিনশেডের ঘর বদলিয়ে ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪০ শতক ভূমিতে গড়েন তিন তলা বহুতল ভবন। সঙ্গে যোগ করেন এতিমখানা ও হেফজখানা।

সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা না তেমন একটা না জুটলেও বছরের পর বছর ব্যক্তিগত অর্থায়নে এগিয়ে নিচ্ছেন মাদ্রাসাটি। শুধু ব্যক্তিগত নয়, তিনি কলেজ শিক্ষিকা স্ত্রী ও নিজ পরিবারের উপার্জিত অর্থও ব্যয় করছেন মাদ্রাসাটির পেছনে।

তিন শিক্ষক ও ৩০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হওয়া এ প্রতিষ্ঠানে এখন শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৩০০। এতিম ও হেফজখানায় শিক্ষার্থী আছে প্রায় অর্ধশতাধিক। প্রতিবছর  কোরআনে হাফেজ হয়ে বের হচ্ছে ৬ থেকে ৭ জন শিক্ষার্থী। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকসহ মোট শিক্ষক নিয়োজিত আছেন ১১জন। দূরের শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসায় আনা নেয়ার জন্য রয়েছে নিজস্ব পরিবহণ ব্যবস্থা। আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বিশেষ সুবিধা। সরকারি ক্যারিকুলাম অনুযায়ী সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি দীনি শিক্ষাও দেওয়া হচ্ছে এ মাদ্রাসায়। পিএসসি ও জেডিসি’র ফলাফল বরাবরই সন্তোষজনক। 

শিক্ষকরা জানিয়েছেন, এলাকার দরিদ্র ঘরের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তেমন একটা বেতন আদায় করা হয়না। তাদের লেখাপড়ায় প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতার বিশেষ নজর রয়েছে। তিনি তার পারিবারিক আয় দিয়েই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছেন।

সম্প্রতি মাদ্রাসাটির সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে কথা হয় অধ্যাপক তৈয়বুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, দুনিয়ায় একজন মানুষ হিসেবে জন্মাবার প্রদিদান স্বরুপ মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেছি। মৃত্যুর পর এ প্রতিষ্ঠানটিই আমার জন্মের সাক্ষ্যবহন করব। প্রসঙ্গক্রমে তিনি জানান, প্রতিষ্ঠানটি গড়তে তার স্ত্রী ও পরিবারের সমর্থন ও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। তার সহধর্মিনীর পৈতৃক ভূ-সম্পদও মাদ্রাসাটির নামে ওয়াকফ (দান) করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যাতে তাদের অবর্তমানে মাদ্রাসাটির খরচ নির্বাহ করা যায়।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়