Cvoice24.com

প্রধানমন্ত্রীর উদারতায় দৃষ্টি ফিরে পেলেন ফটিকছড়ির চা শ্রমিক

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৫২, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
প্রধানমন্ত্রীর উদারতায় দৃষ্টি ফিরে পেলেন ফটিকছড়ির চা শ্রমিক

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির কর্ণফুলী চা বাগানে গত ২৫ বছর ধরে কাজ করছেন লাকী দে (৪৭)। কিন্তু গত ৭ বছর ধরে চোখের সমস্যায় (ঝাপসা দেখতেন) ভুগছেন এই চা শ্রমিক। অর্থাভাবে পারছিলেন না চিকিৎসা করাতে। গত ৩ সেপ্টেম্বর চা শ্রমিকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়াল সভায় যুক্ত হলে তখন লাকী দে তার চোখের সমস্যার কথা জানান। অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় চোখের অপারেশন শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন তিনি।

গত ৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্ণফুলী চা বাগানের শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের মজুরি বাড়ানোর দাবিতে এক ভার্চুয়াল সভা করেন। ওইদিন ভার্চুয়াল সভায় অন্য বিভাগের চা শ্রমিকদের মতো চট্টগ্রামের কর্ণফুলী চা বাগানের শ্রমিক লাকী দে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চা বাগানের শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধার কথা এবং নিজের চোখের দৃষ্টির সমস্যার কথা জানান। প্রধানমন্ত্রীও সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেন যেন তার চোখের উন্নত চিকিৎসা করানো হয়।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মতো জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় গত ৯ সেপ্টেম্বর নগরের লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালে লাকি দে’র চোখের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরে গত ২১ সেপ্টেম্বর সেই হাসপাতালে চোখের অপারেশন করানো হয়। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে গতকাল (বৃহস্পতিবার) বাড়ি ফিরেছেন চা শ্রমিক লাকি দে।

চোখের দৃষ্টি ফিরে লাকী দে নিজের অনুভূতি জানালেন সিভয়েসকে। তিনি বলেন, ‘২০ বছর চা বাগানে কাজ করি। মাঝে মায়ের সঙ্গে শহরে ছিলাম। সেখানে একটি গার্মেন্টসে কাজ করতাম। মা মারা যাওয়ার পর আবারও গত পাঁচ বছর ধরে চা বাগানে কাজ করছি। এর আগে চোখে একটু একটু সমস্যা হতো। তবে আর্থিকভাবে সমস্যা থাকার কারণে ভালো কোনো ডাক্তার দেখাতে পারেনি। গত ৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিতে ভার্চুয়ালি সভায় কথা বলি। তখন চা বাগানের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কারণে কৃতজ্ঞতা জানাই। সঙ্গে আমার চোখের সমস্যার কথাও বলি। তখন তিনিও জেলা প্রশাসক মহোদয়কে নির্দেশনা দেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এর ৬ দিন পরই নগরের হাসপাতালে নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান। পরে গত ২১ সেপ্টেম্বর সেই হাসপাতালে অপারেশন করা হয়। ঈশ্বরের আশীর্বাদে আমি এখন দু’চোখে দেখতে পারছি।’

আবেগ আপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মা বেঁচে নেই। আমি প্রধানমন্ত্রীকে আমার মা মনে করি। তিনিও আমাকে মেয়ে মনে করে দায়িত্ব নিয়ে আমার চোখ ভালো করে দিয়েছেন। আমার মা’কে প্রাণ ভরে দোয়া করি এবং তার দীর্ঘায়ু কামনা করি।’ 

শেষে তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

এদিকে চোখের অপারেশনের কারণে লাকী দে’কে সম্পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে বলেছেন ডাক্তার। সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত কাজেও যোগদান করতে পারবেন না তিনি। কিন্তু কাজে না গেলে ওনার ওষুধ খরচ এবং যাবতীয় খরচ চালাবেন কিভাবে সেই বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের কাছে।

তিনি সিভয়েসকে বলেন, ‘তিনি সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকবেন। যতদিন তিনি কাজে যোগদান করতে পারবেন না; ততদিন জেলা প্রশাসন, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও ইউএনও’র সহায়তায় ওনার দেখভালসহ যাবতীয় ব্যয় বহন করা হবে।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়