ফটিকছড়িতে পশুর হাট জমজমাট
মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ফটিকছড়ি
শেষ সময়ে এসে জমজমাট হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির কোরবানির পশুর হাট। উপজেলার নাজিরহাট, বিবিরহাট, নানুপুর, চামার দিঘি, ইসলামিয়া হাট, কাজীরহাট, চিকনচড়া, বাগানবাজার,দাঁতমারা, শান্তিরহাটসহ সবকটি পশুর হাট ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমাগমে মুখরিত হয়ে উঠেছে। বাদ যাচ্ছে না গরুর শোরুম খ্যাত বিভিন্ন খামারও। তবে দাম এখনও চড়া বলে জানান ক্রেতারা।
সরেজমিনে উপাজেলার বিভিন্ন বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রচুর গরু এনেছেন বিক্রেতারা। তবে ক্রেতাও কম নয়। শেষ মুহূর্তের বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। তবে বিক্রেতারা গরুর দাম বেশি হাঁকছেন বলে জানান ক্রেতারা। তারপরও যারা দরদামে মিলাতে পারছেন তারা কিনে নিয়ে নিচ্ছেন।
নাজিরহাট বাজারে গরু কিনতে আসা সোহেল নামে একজন বলেন, বাজার ঘুরে গরু দেখছি, দরদামে হলে কিনে নিয়ে বাড়ি ফিরব।
জসিম নামে এক বিক্রেতা বলেন, নিজের পালিত দুটো গরু নিয়ে এসেছি। তিন লাখ টাকা দাম চেয়েছি। কাছাকাছি উঠেছে। আরেকটু বাড়তি পেলে ছেড়ে দিব। আরেক বিক্রেতা মোজাহের বলেন, ‘ক্রেতা আসছে দাম জিজ্ঞেস করছে। তবে আমার চাওয়া অনুযায়ী দাম উঠছে না।
নাজিরহাট বাজারের ইজারাদার মো. ইউসুফ জানান, গতবারের চেয়ে গরু ২০-২৫ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু বিক্রেতারা দাম বেশি চাওয়ায় এখন পর্যন্ত বিক্রি কম। তবে শেষ সময়ে বাড়বে আশা করছি।
এদিকে কোরবানকে সামনে রেখে উপজেলার বিভিন্নস্থানে স্থায়ী খামারের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গরু মহিষ সংগ্রহ করে উপজেলার প্রায় শতাধিক মৌসুমি খামার গড়ে উঠেছে। এসব খামারের অধিকাংশই প্রধান সড়কগুলোর পাশে। যাতায়াতের সুবিধা এবং চাহিদানুযায়ী পশু থাকায় অনেকে ভিড় করছে এসব খামারে। তাছাড়া এসব খামার থেকে পশু কিনলে হাঁচিল দিতে হয় না।
মোহাম্মদ আলমগীর নামে এক ব্যক্তি জানান, বাজার থেকে গরু কিনতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়, ভিড়ের মধ্যে দেখেশুনে গরু নেওয়া যায় না। এসব এড়াতে খামার থেকেই গরু কিনতে আসলাম।
মৌসুমী গরুর ব্যাবসায়ী আলম বলেন, আমরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দেখে-শুনে গরু সংগ্রহ করে এনেছি। আমাদের ছোট বড় বিভিন্ন সাইজের গরু রয়েছে। ভালই বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে যত্রতত্র অস্থায়ী গরুর হাট বসানোর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারের স্থায়ী ইজারাদাররা। তারা জানায়, লাখ লাখ টাকা দিয়ে আমরা বাজার নিলাম নিয়েছি। আশায় থাকি কোরবানের মৌসুমে আমাদের টাকা উঠে আসবে। কিন্তু এসব অস্থায়ী বাজার থেকে পশু কেনার কারণে লোকসানের শিকার হচ্ছি আমরা।
ইজারাদার মোহাম্মদ সফিউল আলম বলেন, এসব অস্থায়ী খামার গড়ে ওঠায় বিগত কয়েকবছর যাবৎ হাটবাজারে কোরবানি পশু বেচা-বিক্রি অনেকটা কমে গেছে। বিনিয়োগ করা টাকা তুলে আনতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বিবিরহাট বাজারের ইজারাদার মো. বদিউল আলম বলেন, যত্রতত্র অস্থায়ী গরুর হাট বসানোর কারণে অনেক বেপারী ও ব্যবসায়ীরা বাজারে গরু এনে মার খাচ্ছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে দিলেও কোন প্রতিকার পাইনি।