Cvoice24.com

হেফাজত নেতা নোমান ফয়েজীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:১৮, ৭ মে ২০২১
হেফাজত নেতা নোমান ফয়েজীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

হেফাজত নেতা জাকারিয়া নোমান ফয়েজী

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়েজীর বিরুদ্ধে এবার ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। হাটহাজারী থানায় বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে এক নারী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। 

মামলায় বলা হয়, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ফেসবুকের মাধ্যমে ওই নারীর সঙ্গে নোমান ফয়েজীর পরিচয় হয়। মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ চ‍্যাটিংয়ের মাধ্যমে তাকে ফুসলাতে থাকেন। পরে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ওই নারীকে হাটহাজারীতে আসতে বলেন।

সে অনুযায়ী ওই নারী হাটহাজারী এলে ওই বছরের নভেম্বরে কনক বিল্ডিংয়ের নীচ তলায় বাসা ভাড়া করে দেন নোমান। এক বছর ধরে ভাড়া বাসায় অবস্থানকালে বিভিন্ন সময়ে তিনি ওই নারীকে ধর্ষণ করেন।

পরবর্তীতে ওই নারী হাটহাজারী থেকে চট্টগ্রাম শহরে তার খালার বাসায় চলে আসেন। এরপরও বিয়ের প্রলোভন দিয়ে সুকৌশলে বিভিন্ন বাসা ও হোটেলে নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন নোমান ফরাজী।

অবশেষে নোমান ফয়েজীর প্রতারণা বুঝতে পেরে ওই নারী নিজে বাদী হয়ে হাটহাজারী মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করেন। পরে সেটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯(১) ধারায় রুজু হয়। হাটহাজারী থানার মামলা নং ৯ (তারিখ ০৭/৫/২০২১)। আরও ওই মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে এসআই মো. মুকিব হাসানের ওপর।’

হাটহাজারীতে তাণ্ডবের ঘটনায় জাকারিয়া নোমান ফয়েজীকে বুধবার (৫ মে) বিকেলে কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম। সেখানকার একটি গ্রামে হেফাজতের এই নেতা আত্মগোপনে ছিলেন।  

চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন সিভয়েসকে বলেন, ‘জাকারিয়া নোমান ফয়েজী হাটহাজারীর সহিংসতার মামলার এজহারভূক্ত আসামি। চকরিয়ায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’ 

হাটহাজারী থানায় হওয়া সহিংসতার এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে নোমান ফয়েজীকে আদালতে উপস্থাপন করে রিমান্ডের আবেদন জানায় পুলিশ। আদালত বৃহস্পতিবার তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক গতকাল বিকেলে তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘জাকারিয়া নোমান ফয়েজীর দুই নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। এ ছাড়া তিনি হাটহাজারীর সহিংসতার মাস্টারমাইন্ড।’

জাকারিয়া নোমান ফয়েজীর বাবা মরহুম আল্লামা নোমান ফয়েজীও ছিলেন হেফাজতের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। ছিলেন আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার শূরা সদস্য ও হাটহাজারী উপজেলার আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া হামিয়ুচ্ছুন্নাহ মেখল মাদ্রাসার পরিচালক।

গত ২৬ মার্চ হেফাজতের তাণ্ডবের পাঁচ দিন পর গত ৩১ মার্চ চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানা ভবনে হামলা, ভূমি অফিসে ভাঙচুর, ডাকবাংলোয় আগুন, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ছয়টি ও পটিয়াতে একটি মামলা করে পুলিশ। এর ২৭ দিন পর হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর নাম উল্লেখ করে আরও তিনটি মামলা হয়। এসব মামলায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে ২৬ মার্চ জুমার নামাজের পর ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকারি দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এর প্রতিবাদে হাটহাজারীতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা থানায় হামলা চালালে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে। এতে চারজন নিহত হন। ওই ঘটনার জেরে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা হাটহাজারী থানা, ডাকবাংলো, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে হামলা চালায়। হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি সড়কের ওপর দেয়াল তৈরি করে তিনদিন অবরোধ করে রাখে তারা।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়