মানববন্ধন করতে ঢাকায় যাওয়ার পথে সলিমপুরের ৬৩ বাসিন্দা আটক
সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি
মানববন্ধন করতে ঢাকায় যাওয়ার পথে সলিমপুরের ৬৩ বাসিন্দাকে আটক করে পুলিশ
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর জেলা প্রশাসনের উচ্ছেদের প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সংঘর্ষের ঘটনা চালিয়ে যাচ্ছে সেখানকার অবৈধ বাসিন্দারা। এনিয়ে দফায় দফায় প্রশাসনের সঙ্গে সংর্ঘষেও জড়িয়েছে তারা। মামলার আসামিও হতে হয়েছে। সীতাকুণ্ডে প্রশাসনের বাধার মুখে কোণঠাসা হয়ে পড়া অবৈধ বসতি গড়া এসব বাসিন্দারা এবার ঢাকায় যাচ্ছিলেন প্রতিবাদী মানববন্ধন করতে। তবে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বেশি দূর এগুতে পারেনি তারা। সীতাকুণ্ড থানা এলাকা পার হতেই পুলিশর হাতে আটক হতে হয়েছে মানববন্ধনের উদ্দেশ্যে ঢাকার পথে রওনাকারী ৬৩ বাসিন্দা।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে থানা এলাকা থেকে তাদের আটক করে সীতাকুণ্ড থানার পুলিশ ।
সীতাকুণ্ড থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সুমন বণিক সিভয়েসকে বলেন, 'জঙ্গল সলিমপুর থেকে কিছু সন্ত্রাসী দুটি বাসে করে ঢাকা যাচ্ছে এমন খবরের ভিত্তিতে রাত দেড়টার দিকে অভিযান চালিয়ে শান্তি পরিবহন ও পাহাড়িকা পরিবহনের দুটি বাস থেকে সর্বমোট ৬৩ জনকে আটক করা হয়। আটককৃতদের সীতাকুণ্ড থানায় রাখা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সাম্প্রতিক সময়ে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করার উদ্দেশ্যে ঢাকা যাচ্ছিল বলে জানায়।'
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, আটককৃতদের থানায় রাখা হয়েছে। যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। যাচাই-বাছাই শেষে অপরাধীদের আদালতে প্রেরণ করা হবে। নিরীহ কেউ থাকলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে।
গত ৮ সেপ্টেম্বর পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী জঙ্গল সলিমপুরে আটকে রাখা বাসিন্দাদের নিরাপদে বের করে আনতে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রশাসনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় সন্ত্রাসীরা। এসময় প্রশাসনের উপর তারা ককটেল ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও আত্মরক্ষার্থে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে।
এর আগে, গত ৩০ আগস্ট জঙ্গল সলিমপুরে অবৈধ বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং করা হয়। একইসঙ্গে নিজ দায়িত্বে মালামাল সরিয়ে জায়গা খালি না করলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ করা হবে বলে আল্টিমেটাম দেয় জেলা প্রশাসন।
তারও আগে, গত ৭ আগস্ট সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরের আলীনগরের পাহাড়, টিলা, বনভূমি এবং এখানকার পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র রক্ষাকল্পে হাইকোর্ট এক নির্দেশনা দিয়েছেন। এতে সেখানে পাহাড়-টিলা দখল করে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের সব স্থাপনা উচ্ছেদ এবং বৈধ জমির মালিকদের মালিকানা নিশ্চিত করতে বলা হয়। এর অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে সেখানে খাসজমি চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে এবং বৈধ ভূমির মালিকদের ২০ আগস্টের মধ্যে সীতাকুণ্ডের সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি যারা অবৈধ উপায়ে সেখানে পাহাড়-টিলা দখল করে কেটে বসত ঘর বা স্থাপনা নির্মাণ করে বসবাস করছেন তাদেরকে বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যে অবশ্যই এলাকা ছেড়ে যেতে হবে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানায় প্রশাসন।