Cvoice24.com

‘লাইনের’ টাকা না দেওয়ায় লাইনম্যানের নেতৃত্বে সিএনজি অটোরিকশা চালক খুন

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:১২, ২৮ জানুয়ারি ২০২৩
‘লাইনের’ টাকা না দেওয়ায় লাইনম্যানের নেতৃত্বে সিএনজি অটোরিকশা চালক খুন

সীতাকুণ্ড বাইপাস রোডে সিএনজি চালাতে ‘লাইনের’ টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় লাইনম্যানের নেতৃত্বে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে সিএনজি অটোরিকশাচালক একরাম হোসেনকে (২০)।

নূর আহম্মদসহ চার সিএনজি চালককে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে এনে এসব তথ্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।  

গ্রেপ্তার বাকি তিন অটোরিকশা চালক হলেন— মো. জাহেদ হোসেন (২০), মো. মোস্তাফিজুর রহমান সাকিব (২০) ও মো. ইসমাইল হোসেন রোনা (২৪)। এদের মধ্যে জাহেদ ও মোস্তাফিজের বাড়ি সীতাকুণ্ড পৌরসভায়। আর সাকিব ও ইসমাইলের বাড়ি বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নে। তারা চারজনই সিএনজি অটোরিকশা চালানোর পাশাপাশি ‘দক্ষিণ বাইপাস সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতি’র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

পিবিআই জানায়, নূর আহাম্মদের লাইনে সিএনজি চালাতেন নিহত একরাম হোসেন। তবে নূর আহম্মদের খোলা ‘দক্ষিণ বাইপাস সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতি’তে  ৫ হাজার টাকা লাইনের চার্জ দিতে অপরাগতা জানায় একরাম। তাই একরামকে খুনের পরিকল্পনা আঁটতে গত ২২ সেপ্টেম্বর সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড বাজারে বৈঠকে বসেন তারা। সেখানে নূর আহম্মদ হত্যার ছক আঁকেন। ওদিন রাতে একরামের সিএনজি অটোরিকশাকে অনুসরণ করতে করতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মধ্যম মহাদেবপুর এলাকায় ইপসা অফিসের সামনে পৌঁছলে গতিরোধ করেন তারা। সেখানে সবাই একরামকে উপর্যপুরি মারধর ও ছুরিকাঘাত করেন। একপর্যায়ে লোকজন বেড়ে গেলে একে একে অটোরিকশা ও বাসযোগে সটকে পড়েন। তবে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে অবস্থা বেগতিক দেখে উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে একরামকে হাসপাতালে নিয়ে যায় গ্রেপ্তার জাহেদ নামে এক সিএনজি চালক। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই নুরুল হুদা বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। থানা পুলিশের পাশাপাশি মামলাটির ছায়াতদন্ত শুরু করে পিবিআই। একপর্যায়ে ২৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে চার জনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। পরদিন তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড করলে রিমান্ড শুনানি শেষে চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ খানের আদালত আসামি নূর আহাম্মদ ও জাহেদ হোসেনের চার দিন এবং সাকিব ও রানার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে আনার পর আসামিদের ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদেই এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি) নাজমুল হাসান বলেন, বেশ কয়েকজন অটোরিকশা চালকের সঙ্গে কথা বলে আসামিদের সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যায়। পরে আরও কিছু সিএনজি অটোরিকশা চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকাণ্ডের কারণ কিছুটা পরিস্কার হয়। একপর্যায়ে দুজনকে শনাক্ত করতে সক্ষম হই আমরা। তাদের দেওয়া তথ্যে বাকি দুজনকেও আমরা গ্রেপ্তার করি। এরপর রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে নেয়। তাদের নিয়ে হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন আলামত উদ্ধারে অভিযান চলছে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়