Cvoice24.com

সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের পরিচালকের কোমড়ে দড়ি, ফেসবুকে সমালোচনার ঝড়

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:২৬, ১৫ মার্চ ২০২৩
সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের পরিচালকের কোমড়ে দড়ি, ফেসবুকে সমালোচনার ঝড়

সীমা অক্সিজেন কারাখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক পারভেজ উদ্দিন সান্টুকে আদালতে হাজির করার সময় কোমরে দড়ি বাঁধা একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান অনেকে। এদিকে, ছবিটি ভাইরালের পরপরই দায়িত্বরত চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের উপ-পরিদর্শককে (এসআই) শোকজ করা হয়।

বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম নাজমুন নাহারের আদালতে হাজির করার সময় হাতে হাতকড়া ও কোমরে দড়ি বাঁধা হয় পারভেজ উদ্দীনের। 

প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মোহাম্মদ রাজা নামের একজন লিখেছেন, ‘মরহুম শফি সাহেব এবং তার পরিবারকে আমরা সবসময় বিপদে পাশে পেয়েছি। আজ তার সন্তানদের এভাবে দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারছি না। সীতাকুণ্ডে এমন কোনো মসজিদ মাদ্রাসা নাই যেখানে তাদের দান পৌঁছাইনি। তারমধ্যে করোনা মহামারিতে ফ্রি অক্সিজেন সেবা প্রাদান করেন। গাউসিয়া কমিটিকে সহয়াতা করে মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সর্বোপরি সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো শ্রমিক ও আহতদের সকলকে চিকিৎসা উনাদের প্রাপ্তির চেয়ে বেশি ক্ষতিপূরণ প্রদান করে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এনারা তো চোর বা ডাকাত নয়? এদের কোমরে দড়ি কেনো?’

আশরাফুল ইসলাম নিজামি লিখেছেন, ‘খুব খারাপ লাগলো ছবিটা দেখে.... একজন সহজ সরল মানবিক হৃদয়ের মানুষ হিসেবে সীতাকুণ্ডের সবাই উনাকে জানেন। দুর্ঘটনার পরপর উনার পক্ষ থেকে যেই পদক্ষেপ নিয়েছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার ছিলো। অথচ ফলাফল উনার কোমরে দড়ি! যারা উনার সম্মান হানি করেছে তাদের বিচার আল্লাহ করবে আশা করি। উনি একজন শিল্পপতি ও সন্মানিত নাগরিক। আদালতে হাজির করার সময় তার কোমরে রশি বাঁধা অত্যন্ত অমানবিক ও পুলিশের বাড়াবাড়ি এবং সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র।’

কাইয়ুম চৌধুরী লিখেন, এমন আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই। তাঁর কারকানায় সীতাকুণ্ডবাসীর ৯০% লোক চাকরি করে। দশ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিয়েও এমন আচরণ। শিল্প পুলিশ একজন শিল্পপতিকে এমনভাবে কোমরে দড়ি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যাওযা বড়ই দুঃখজনক। আইন কি শক্তের বক্ত নরমের জম? ৫১ জন হত্যাকারীরা কি আইনের ঊর্ধ্বে?’

তবে ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ছবিটি দেখে জেলা প্রশাসক নিজেও মর্মাহত হয়েছেন। এবং সঙ্গে সঙ্গে শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপারকে ফোন দিয়ে যে বা যারা এই অপকর্মটি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, দুই-একজন অতি উৎসাহী হয়ে কাজটি করেছে। ইতোমধ্যে তাদেরকে শোকজ করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ৪ মার্চ শনিবার সীমা অক্সিজেন অক্সিকো নামক একটি অক্সিজেন তৈরির কারখানায় বিস্ফোরণে ৭ জন নিহত ও ৩৫ জন আহত হন। বিস্ফোরণে নিহতরা হলেন— শামছুল আলম (৫৬), মো. ফরিদ (৩৬), রতন লকরেট (৪৫), আবদুল কাদের (৫৮), মো. সালাহ উদ্দিন (৩০), সেলিম রিচিল (৪০) ও প্রবেশ লাল শর্মা (৫৫)। বিস্ফোরণে নিহত এক শ্রমিকের স্ত্রী দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

গতকাল মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় নগরের জিইসি মোড় থেকে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের পরিচালক পারভেজ আহমেদকে গ্রেপ্তার করে শিল্প পুলিশ। পুলিশ জানায়, বিস্ফোরণে নিহত এক শ্রমিকের স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় এজাহারনামীয় ১৬ আসামির মধ্যে তিনি মামলার দুই নম্বর আসামি।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়