Cvoice24.com

মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী ও শেখ মনির ছবি ভাংচুরে মামলা

সিভয়েস প্রতিবেদক
১০:৪৪, ৩ মে ২০২৩
মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী ও শেখ মনির ছবি ভাংচুরে মামলা

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের ঈদ শুভেচ্ছার পোস্টার ছিঁড়ে নেতাকর্মীদের মারধরের ঘটনায় আদালতে পৃথক দুটি মামলার আবেদন করেছেন উপজেলা যুবলীগের দুই নেতা। উপজেলা যুবলীগ নেতা আছিফুর রহমান ও আইনুল কবির বাদী হয়ে ওই অভিযোগে মাহফুজুল হক জুনু (৫৮), তানভীর হোসেন চৌধুরী তপু (৩১), মো. মাসুদ করিম রানার (২৯), নাজিম উদ্দিন রুবেল (৪৬), মো. মুসলিম (২৮), মাহফুজ উদ্দিনসহ (২৬) ৪২ জনের নাম উল্লেখ করেছেন। অজ্ঞাতনামা রয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।

আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এজাহারভুক্ত করে ২ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে জোরারগঞ্জ ও মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২ মে) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার ইকবালের আদালত শুনানি শেষে এ নির্দেশ দেন। 

গত ১৮ ও ২০ এপ্রিল যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের পক্ষে কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের পোস্টার লাগানোর সময় নেতাকর্মীদের মারধর করে ঈদের বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত পোস্টারগুলো ছিঁড়ে রাস্তায় ফেলে দেন।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের পক্ষে ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে মিরসরাই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত পোস্টার লাগানোর উদ্যোগ নেন কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিট। গত ১৮ এপ্রিল বারৈয়ারহাট পৌরসভা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে মিরসরাই উপজেলা যুবলীগ নেতা আসিফুর রহমানের নেতাকর্মীরা পোস্টার লাগাতে গেলে অজ্ঞাত ২০-২৫ জন লোক মাইক্রোবাস ও সিএনজি নিয়ে নেতাকর্মীদের কার নির্দেশে পোস্টার লাগানো হচ্ছে জানতে চেয়ে মারধর শুরু করে পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে। এসময় নেতাকর্মীরা মোবাইল ফোনে ঊর্ধ্বতন নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে আহতবস্থায় তাদের জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে বারৈয়ারহাট মসজিদের সামনে নিয়ে যুবলীগ নেতৃবৃন্দকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে আবারও মারধর করে পোস্টার লাগালে প্রাণনাশের ‍হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় যুবলীগ নেতারা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করায়। 

এ ঘটনার দুদিন পর ২০ এপ্রিল দুপুর আড়াইটার দিকে মিরসরাই ভূমি অফিসের সামনে মিরসরাই উপজেলা যুবলীগ নেতা আইনুল কবিরের নেতৃত্বে কর্মীরা পোস্টার লাগাতে শুরু করলে আসামিরা দেশিয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা চালিয়ে জোরপূর্বক মোবাইল ফোন ছিনিয়ে সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুর করে। এসময় আসামিরা তাদের নেতার বাইরে অন্য কারও পোস্টার লাগালে, তাদের কথা না শুনলে প্রাণে হত্যার হুমকি দিয়ে লাগানো পোস্টারগুলো ছিড়ে ফেলে। 

মিরসরাই উপজেলা যুবলীগ নেতা আছিফুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিট দীর্ঘদিন যুবলীগ নেতাকর্মীদের সংগঠিত করে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে পক্ষে সামাজিক, মানবিক কর্মসূচিসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন। তাতে ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রভাবশালী একটি চক্র নানাভাবে বাধা সৃষ্টি করছে।

ঈদ উপলক্ষে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের পক্ষে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সাঁটিয়েছেন। তারা ঈর্ষান্বিত হয়ে তাতে বাধা দিয়ে নেতাকর্মীদের মারধর করেছে। বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত পোস্টার ছিঁড়ে রাস্তায় ফেলে বঙ্গবন্ধু-প্রধানমন্ত্রীকে অসম্মান করেছেন। 

বাদীপক্ষের আইনজীবী সাইফুল চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে সিভয়েসকে বলেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের পোস্টার ছিড়ে নেতাকর্মীদের মারধরের ঘটনায় মিরসরাই উপজেলা যুবলীগের দুজন নেতা বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলার আবেদন করেছিলেন। আদালত ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা নিতে মিরসরাই ও জোরারগঞ্জ থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, কিছু দুষ্কৃতিকারী রয়েছে যারা ব্যানার, পোস্টার ছেড়া, কর্মসূচিতে বাধা, সংঘর্ষের মতো ঘটনা ঘটিয়ে দলকে বিব্রত করার চেষ্টা করে। ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলে তারা কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতার পোস্টার ছিঁড়ে বঙ্গবন্ধু ও প্রধামন্ত্রীর ছবির অবমাননা করেছেন। একইসঙ্গে যুবলীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মানহানি করার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সময়ের দাবি।

চট্টগ্রাম (মহানগর, উত্তর, দক্ষিণ) সব খবর