হালদায় বেড়েছে নমুনা ডিমের পরিমাণ, অপক্ষোয় শত শত নৌকা
হাটহাজারী প্রতিনিধি
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম মৎস্য প্রজননক্ষেত্র বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীতে শত শত নৌকা নিয়ে অপেক্ষায় ডিম আহরণকারীরা। সকাল থেকে রাত পার করছেন হালদাতেই। কখনো জোয়ার কখনো ভাটায় নদীর বিভিন্ন স্থানে তারা নদীতে জাল ফেললেও মিলছে নমুনা ডিম।
রবিবার সকালে জোয়ারের সময় প্রতি নৌকায় ১৫০ থেকে ৫০ গ্রাম নমুনা আসতে দেখা গেছে। তবে আশার গল্প হচ্ছে নমুনা ডিমের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই রবিবার রাত সাড়ে ১০ টার জোয়ারে পুরোদমে ডিম ছাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুরোদমে ডিম ছাড়বে কি ছাড়বেনা এনিয়ে অনেক ডিম সংগ্রহকারী হতাশায় ভুগছেন। কেননা আর মাত্র দুয়েকদিন সময় চলমান জো'র এবং এ জোঁ এ মৌসুমের শেষ জোঁ। দুই মাস ধরে অন্য পেশা বাদ দিয়ে তারা ডিমের আশায় নদীতে অবস্থান করছেন। অনেকের সংসার চলছে চরম কষ্টে। ধারদেনা করে পরিবারের ব্যয় মেটাচ্ছেন। তাই ডিম না ছাড়লে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন অনেকে।
সরেজমিনে ডিম সংগ্রহকারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবার যদি ডিম না ছাড়ে আগামীবার মনে হয়না কোন ডিম সংগ্রহকারী এ পেশায় থাকবেন। রেণু ও পোনা ব্যবসা করে পুরো বছরের সংসারের খরচ মেটান অনেকে। মৌসুমের জন্য অধিকাংশ ডিম সংগ্রহকারী নৌকা ভাড়া করেছেন। কয়েকদিন চোখে ঘুম নেই। সারাক্ষণ নদীতে। সকালের নাস্তা, দুপুর ও রাতের খাবার নদীতেই চলছে।
শেষ সময়ে ডিম না ছাড়ার প্রশ্নে ক্ষোভ প্রকাশ করে অনেকেই বলেন, হালদাকে তার নিজস্ব গতিতে ছেড়া দেয়া হোক। সনাতন পদ্ধতিতে নদী থেকে বালু উত্তোলনের ব্যবস্থা করতে হবে না হয় অচিরেই পুরোদমে ভরাট হবে নদী। আগে যেখানে ১শ হাত গভীরে রশি যেত আজ মাত্র ১০ থেকে ২০ হাত। এসবের কারণে মা মাছ ডিম ছাড়ছেনা।
তারা বলেন, হালদার সঠিক গবেষণার অভাব। সবাইকে এক টেবিলে বসে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বিশ্বে হালদা যে পরিচিতি অর্জন করেছে তা ভেস্তে যাবে।
হালদা গবেষক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ অনূকুলে আশা করা যাচ্ছে রবিবার রাতে বা চলমান জোঁতে (২১ তারিখের মধ্যে) মা মাছ পুরোদমে ডিম ছেড়ে দিবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহিদুল আলম বলেন, শনিবার থেকে অমাবস্যার জোঁ শুরু হয়েছে। ডিম সংগ্রহকারীরা নদীতে অবস্থান করছে। প্রশাসন সরেজমিনে পরিদর্শন করছে। সরকারি প্রতিটা হ্যাচারী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশা করছি এবার পুরোদমে ডিম ছাড়বে মা মাছ।