ফুটপাতে ভাসমান দোকান, নিষিদ্ধ গাড়ির দখলে সড়ক
জাহেদুল ইসলাম, লোহাগাড়া
দক্ষিণ চট্টগ্রামের ব্যস্ততম চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। লোহাগাড়ার বটতলি মোটর স্টেশন খ্যাতি পেয়েছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মিনি শহর নামে। ব্যস্ততম সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে কয়েক হাজার ছোট-বড় গাড়ি। এই স্টেশনে যানবাহন চলাচলে কোন নিয়ম শৃঙ্খলা নেই। ক্রমাগত বাড়ছে নৈরাজ্য। ভাসমান দোকান, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারি চালিত রিকশার দাপটে প্রতিদিনই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বাসের যাত্রী ও পথচারীদের।
লোহাগাড়ায় যানজট নিরসনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে গত বছরের ১৩ অক্টোবর মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় আমিরাবাদ বটতলি মোটরস্টেশনে ফুটপাত দখল করে গড়ে ওঠা ভাসমান দোকান/হকারদের স্থানান্তর, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল বন্ধ রাখা, বাস কাউন্টার স্থানান্তর, হাইওয়ে পুলিশের বিশেষ অভিযান পরিচালনা, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ, মূলসড়কের সোল্ডার সমান, সিএনজি ও অটোরিকশা বন্ধের জন্য মাইকিং, বটতলি মোটর স্টেশনে বিভিন্ন সুবিধাভোগীদের নিয়ে আলোচনা ও ট্রাফিক পুলিশের জনবল বৃদ্ধির তৎপরতসহ মোট ১৩টি পদক্ষেপের উপর আলোচনা হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আলোচনা টেবিলেই শেষ সব পদক্ষেপ।
স্থানীয়রা মনে করছে, ট্রাফিক পুলিশ তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে যানজট নিরসন সম্ভব হবে। এছাড়া সন্ধ্যা হওয়ার সাথে সাথে মহাসড়ক হকারদের দখলে চলে যায়। ভাসমান দোকান আর দোকান। বটতলি মোটর স্টেশন যানজট নিরসনতো দূরের কথা, যানজটের স্টেশনে পরিণত হবে বটতলি মোটর স্টেশন। এদিকে ভাসমান দোকানদাররা জানান, দৈনিক কয়েক দফায় চাঁদা দিয়ে ফুটপাতে দোকানপাট বসিয়েছি। সন্ধ্যা হলেই চাঁদা তুলতে হাজির হন কর্তার লোকজন।
আমিরাবাদ ইউপি সদস্য শারফু সিকদার জানান, রক্ষক যখন ভক্ষক হয় লোহাগাড়ায়তো যানজট হবেই। আগে ট্রাফিক পুলিশকে তাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করুক, তখনই দেখা যাবে যনজট নিরসন হচ্ছে কিনা। এছাড়া বটতলি স্টেশনে যারা ভাসমান দোকান বসিয়ে যানজট সৃষ্টি করছে তাদের আগেই উচ্ছেদ করা প্রয়োজন। উপজেলা প্রশাসন যানজট নিরসনের জন্য সভা করেছে, কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এ ব্যাপারে নজরদারি থাকলে সফলতা আসতো।
নিরাপদ সড়ক চাই (নিশচা) লোহাগাড়া শাখার সভাপতি মো. মোজহিস হোছাইন সাগর বলেন, মহসড়কে হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার কারণে লোহাগাড়া বটতলি মোটর স্টেশনে নিয়মিত যানজটের অন্যতম মাধ্যম। স্থায়ী কোন সমাধান না হলে এ যানজট তীব্র থেকে তীব্রতর হবে।
লোহাগাড়া ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ (টিআই) তরুন চাকমা বলেন, মহাসড়কের উপর দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা ও ফুটপাত দখল হওয়ায় যানজট একটু লেগে যায়। তবে যানজট নিরসনের জন্য কাজ করছি। এছাড়া লোহাগাড়া ট্রাফিকে জনবল কম থাকায় হিমশিম খেতে হয়।
লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, লোহাগাড়া বটতলি মোটর স্টেশনে যানজট নিরসনের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকতে হবে। তাহলে সম্ভব হবে যানজট নিরসন করা। যোগদানের পরদিন যানজট নিরসনে মাঠে নেমেছিলাম। দুঃখজনক হলেও সত্য, ট্রাফিক পুলিশকে ওদিন সঙ্গে নিতে পারি নাই। তাদের দুর্বলতা কোথায় জানা নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ উল্যাহ বলেন, লোহাগাড়া বটতলি মোটর স্টেশনে যানজট নিরসনে উপজেলা প্রশাসন শতভাগ আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে।