সংযোগই অবৈধ, ১০ বছর গ্যাস বিল দেয় না রেলের লাইনম্যান সুফিয়ান
সিভয়েস প্রতিবেদক

নিজের নামে রেলওয়ের কোয়ার্টার বরাদ্দ থাকা সত্বেও তা ভাড়া দিয়ে ৫ মাস আগে অন্য একটি কোয়ার্টার দখল করে সেখানেই সস্ত্রীক থাকতে শুরু করেছেন তিনি। অন্যদিকে নিজের নামে বরাদ্দ হওয়া কোয়ার্টারটিতে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে তা বহাল তবিয়তে ব্যবহার করেছেন ১০ বছর ধরে—অভিযোগটি উঠেছে রেলওয়ে কর্মচারী বিদ্যুৎ লাইনম্যান সুফিয়ান রহমানের বিরুদ্ধে । এছাড়াও বিদ্যুতের সংযোগও তিনি অবৈধভাবে ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, গ্যাসের বিল সরকারি কোয়ার্টার নেওয়া কর্মচারীদের বেতন থেকে কেটে রাখার নিয়ম কিন্তু সংযোগ অবৈধ হওয়ার কারণে তার বেতন থেকে কোন টাকা কাটা পড়েনি। রেলের সরকারি কোয়ার্টারে ডাবল বার্নার চুলার গ্যাসের বিল ধরা হয় মাসে ১০৮০ টাকা। সে হিসেবে ১০ বছরে বিদ্যুৎ লাইনম্যান সুফিয়ান ফাঁকি দিয়েছেন ১ লাখ ২৯ হাজার ৬শ টাকা।
জানা যায়, ২০১৪ সালে লাকসামের কাঠালবাগান কলোনিতে বাসা (ই/৫৮ডি) বরাদ্দ হয় সুফিয়ানের নামে। পরে সেটি ভাড়া দিয়ে অফিসের একটি রুমে ব্যাচেলর হিসেবে থাকতে শুরু করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার এক সহকর্মী সিভয়েসকে বলেন, ‘১৪ সাল থেকে তার নামে বরাদ্দকৃত বাসা বহিরাগত মানুষের কাছে ভাড়া দিয়ে রেখেছে। সর্বশেষ ৫ মাস আগে বিয়ের পর আরেকটি কোয়ার্টার দখল করে লাকসাম রেস্ট হাউজের পাশে (টি/৭-সি) বাসা সিলগালা অবস্থায় তালা ভেঙ্গে দখল করে। সেখানে ৫ মাস যাবত থাকছে।’
এদিকে রেল সূত্রে জানা যায়, প্রতি মাসে দুটি চুলার জন্য গ্যাস বিল ১০৮০ ও এক চুলার জন্য ৯৯০ টাকা মাসিক বেতন থেকে কাটা হয়। তবে রেল কর্তৃপক্ষের অগোচরে গ্যাস সংযোগ ব্যবহার থাকায় প্রতি বছর রাজস্ব হারাচ্ছে ১২ হাজার ৯শ ৬০ টাকা। দীর্ঘ ১০ বছর সুফিয়ানুর রহমান দুই চুলা ব্যবহারের পর টাকা না কাটার ফলে রেলওয়ে রাজস্ব হারিয়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ৬০০ টাকা।
এছাড়াও সুফিয়ানের বিরুদ্ধে রয়েছে বৈদ্যুতিক সংযোগ বাইপাস করে বিদ্যুৎ ব্যবহারের অভিযোগও। মিটার ব্যবহার না করে বছরের পর বছর বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে রেলের এ কর্মচারি। বর্তমানে দখল করা বাসায় কোন বিদ্যুৎ মিটার নেই। প্রধান সংযোগ থেকে বৈদ্যুতিক তার বাইপাস করে ব্যবহার করছে সুফিয়ান।
সুফিয়ান রহমান সিভয়েসকে বলেন, সবাই সরকারি কোয়ার্টার বরাদ্দ নিয়ে ভাড়া দিচ্ছে তাই আমিও বাসা পরিচিত মানুষের কাছে ভাড়া দিয়েছি। প্রতি মাসে ৩৫শ টাকা ভাড়া নিই। আর ভাড়াটিরা নিজেরা যদি গ্যাস সংযোগ নিয়ে ব্যবহার করে এক্ষেত্রে আমি মানা করছি না। আমি এখন গিয়ে ভাড়াটির সাথে কথা বলছি।
তার এ অনিয়ম দখলের বিষয়ে জানিয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে অভিযোগপত্র পাঠায় রেলওয়ে কাঠালবাগান কলোনির বাসিন্দারা। চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক আবেদুর রহমান সিভয়েসকে বলেন, ‘সুফিয়ানের এইরকম অনিয়ম ও অভিযোগপত্র বিষয়টি জানা ছিল না। আগামীকাল অভিযোগপত্র দেখে তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার দুর্নীতির প্রমান পেলে দাপ্তারিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’