Cvoice24.com

গায়ের জোর/ পটিয়ায় স্বাস্থ্যের কর্মচারী নিজ গ্রামে একাই দিলেন ২ হাজার টিকা

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩:২৪, ৩১ জুলাই ২০২১
গায়ের জোর/ পটিয়ায় স্বাস্থ্যের কর্মচারী নিজ গ্রামে একাই দিলেন ২ হাজার টিকা

উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকাদানের জন্য পাঠানো টিকা সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের দিতে নিজেই নিয়ে যান নিজ গ্রামে। দুই দিন ধরে শোভনদণ্ডী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহযোগিতায় ব্যানার টাঙিয়ে প্রায় দুই হাজার জনকে টিকা দেওয়া হয়। যার বিরুদ্ধে এ মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে তিনি হলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) রবিউল হোসেন। 

স্বাস্থ্য বিভাগের এ কর্মচারীর নিবন্ধনবিহীন টিকা বাণিজ্যের অভিযোগে খোদ তোলপাড় চলছে স্বাস্থ্য প্রশাসনেও। এ ঘটনায় স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুক্রবার ছুটির দিন ও শনিবার পটিয়ার শোভনদণ্ডী ইউনিয়নে দুইদিন ধরে এ কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন রবিউল। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) রবিউল হোসেন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এমন কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছেন। যার বিষয়ে কিছুই জানেন না স্বয়ং স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে শুরু করে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাও। অথচ ইউনিয়ন পর্যায়ে কিংবা কোন নির্দিষ্ট টিকাদান কেন্দ্রের বাইরে নতুন করে টিকা দিতে হলে সিভিল সার্জন, উপজেলা কিংবা বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমতি অত্যাবশ্যক। যদিও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে দুই হাজার ভ্যাকসিন ভাগিয়ে নিয়ে নিজ গ্রামে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ‘টিকা বাণিজ্য’ করেছেন। কিন্তু রবিউল হোসেন তা না নিয়েই ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন।

এ ঘটনায় শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। 

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালনেন্ট (অর্থো. সার্জারি) ডা. অজয় দাশকে সভাপতি, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. আসিফ খানকে সদস্য সচিব ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. নুরুল হায়দারকে সদস্য করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত পূর্বক বিস্তারিত প্রতিবেদন সুস্পষ্ট মতামত ও সুপারিশসহ দাখিল করতে বলা হয়। 

চিঠিতে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত ব্যাতিরেকে উপজেলা, জেলা কিংবা বিভাগীয় পর্যায় থেকে কোন প্রকার অনুমতি না নিয়ে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) মো. রবিউল হোসেন কর্তৃক ৩০ জুলাই ও ৩১ জুলাই সিনোফার্মের ভ্যাকসিন অন্যত্র নিয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে রেজিষ্ট্রেশন বিহীন লোকদের প্রদান করা হয়েছে। এ বিষয়ে সরেজমিনে তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হলো।’

জানতে চাইলে রবিউল হোসেন প্রথমে অস্বীকার করলেও একপর্যায়ে তা স্বীকার করে নেন। তবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে মৌখিক অনুমতি নেয়া হয়েছে। আর মাত্র দুই হাজার মানুষকে টিকা দেয়া হয়। চার হাজার নয়। মূলত মানবিক ও জনসেবা থেকে ক্যাম্পেইন পালন করা হয়েছে। তবে কোন অর্থ নেয়া হয়নি এবং যারা রেজিস্ট্রেশন করেছিল, তাদের টিকা দেয়া হয়।

কিন্তু বন্ধের দিনে কেন এমন কার্যক্রম? জানতে চাইলে প্রথমে চুপ থাকলেও এক পর্যায়ে মানবিকতা আর জনসেবার দোহাই দিয়ে যান তিনি। 

জানতে চাইলে পটিয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সব্যসাচী নাথ বলেন, কোন অনুমতিই নেয়া হয়নি। এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানতাম না। যেহেতু টিকার দায়িত্বে সে নিজেই রয়েছে। আমাদের অগোচরে এমন কাজ ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। 

জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, এসব ক্যাম্পেইন করতে হলে অবশ্যই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুমতি নিতে হবে। তাছাড়া এখনও কোন ইউনিয়ন পর্যায়ে ক্যাম্পেইনের অনুমতি নেই। নির্দেশনাও আসেনি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়