Cvoice24.com

রাঙ্গুনিয়ায় হত্যা মামলার আসামি ইউনুস গ্রেপ্তার

সিভয়েস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:২৪, ৩১ জুলাই ২০২১
রাঙ্গুনিয়ায় হত্যা মামলার আসামি ইউনুস গ্রেপ্তার

রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটায় উকিল আহমদ হত্যা মামলার পলাতক আসামি ইউনুসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে জঙ্গল সরফভাটার নিজ বাড়ি থেকে আদালতের পরোয়ানামূলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। থানা পুলিশ সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। 

রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মিল্কি গণমাধ্যমকে বলেন, রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েকদিন অভিযান চালিয়ে আদালতের পরোয়ানাভুক্ত ৮-৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলার আসামিও রয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, চাঞ্চল্যকর উকিল আহমদ হত্যা মামলার আসামি ইউনুস দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিল। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে ও অন্যদের কারাগারে পাঠানো হয়। 

জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১ মার্চ সকালে রাঙ্গুনিয়ার জঙ্গল সরফভাটার কালিছড়ি এলাকায় নিজেদের সেগুন বাগানে অবস্থান করছিলেন পশ্চিম সরফভাটা গঞ্জম আলী সরকার বাড়ির আবুল কালামের পুত্র উকিল আহমদ (৫৫) ও তার পুত্র মো. ইসমাইল (১৬)। বিক্রি করার জন্য স্থানীয় মো. আলীকে গাছ দেখাতেই তারা সেখানে যান। একপর্যায়ে সেখানে পূর্ব থেকে ওঁত পেতে থাকা ১০-১৫ জন দুর্বৃত্ত অতর্কিতভাবে ধারালো কিরিচ ও দা নিয়ে পিতা ও পুত্রের উপর হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা বৃদ্ধ উকিল আহমদকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ঘটনাস্থলেই হত্যা করেন। 

এরপর ধাওয়া করে নিহতের ছেলে মো. ইসমাইলকে কুপিয়ে ডান পা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। তার একটি হাতও প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ঘটনায় উকিল আহমদের স্ত্রী মমতাজ বেগম বাদী হয়ে ইউনুসসহ ২৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটায় ওসমান বাহিনীর ওসমান ২০১৯ সালে প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহতের পর তোফায়েল বাহিনী লিড দিয়ে আসছে। এরই মধ্যে গত ১০ এপ্রিল মো. মফিজ নামে আরেকজন প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হওয়ার পর থেকে এলাকায় ওই তোফায়েল বাহিনীর আধিপত্য বিস্তার করে। এতে এলাকার মানুষের ঘুম হারাম হয়ে যায়। গ্রেপ্তার আসামি ইউসূফ ও তোফায়েল বাহিনী দিন-দুপুরে চাঁদাবাজি, খামারের গরু, মহিষ ও ছাগল চুরি হতে শুরু সব ধরনের লুটপাট শুরু করে। এমনকি তাদের ভয়ে অনেকে এলাকা ছেড়ে চলেও গেছে বলেও জানা গেছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, একেকদিন একেক পরিবারকে এক-দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এই সন্ত্রাসীরা। এমনকি দিতে না পারলে তুলে নিয়ে দুর্গম পাহাড়ে বেঁধে মারধর করার অভিযোগও রয়েছে। এই মারধরের বিষয়ে কাউকে কিছু বললে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় এই সন্ত্রাসী বাহিনী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একজন বলেন, ‘মীরেরখীল গ্রাম নয় শুধু পুরো সরফভাটার মানুষ রাতে ভয়ে ঘুমাতে পারে না। কারণ, কখন কিভাবে কার ঘরে ঢুকে কি দাবি বসে— সেই ভয়ে থাকে সবাই। অনেকের কাছে লাখ-দেড়লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে বসে। আর তা যে কোনভাবে ব্যবস্থা করতে হবে। যদি নির্দিষ্ট সময়ে ব্যবস্থা করতে না পারে তাহলে বাড়িতে এসে নানা হুমকি-ধমকি দেয়, এমনকি মারধরও করে। প্রাণের ভয়ে এসব ঘটনা কাউকে জানায় না, থানা গিয়েও কোন অভিযোগ করে না।’

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘মানুষ ভয়ে-আতঙ্কে থাকলেও জনপ্রতিনিধিরা কোন পদক্ষেপ নেন না কিংবা দেখেও না দেখার ভান করে থাকে। যদিও তারা সবই জানেন। বলতে গেলে, এটা মগের মুল্লুক হয়ে গেছে। যখন যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছে অথচ জনপ্রতিনিধিরা নিশ্চুপ। মানুষ ভোট দিয়ে এই জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচন করেছে কেন তাহলে, যদি জনগণের নিরাপত্তা দিতে না পারে? এভাবে চুপ থাকলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়?’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়