Cvoice24.com

রাঙ্গুনিয়ায় স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন, মেয়ের পরিবারের দাবি হত্যা

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:২০, ১৪ আগস্ট ২০২১
রাঙ্গুনিয়ায় স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন, মেয়ের পরিবারের দাবি হত্যা

মাত্র চারদিন আগে কাতার থেকে দেশে ফিরেন প্রবাসী যুবক ইসকান্দর (২৬)। ১৫ মাস বয়সী একমাত্র সন্তান হোসাইনকে নিয়েই ইসকান্দর-রুমা  আকতারের সংসার ছিল। কিন্তু সব স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়ে গেছে এক অজানা কারণে। গতকাল (শুক্রবার) সন্ধায় নিজ ঘরের খুঁটির (বিম) সাথে একই রশিতে এই দম্পতির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে এঘটনায় দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। একই রশিতে স্বামী-স্ত্রীর আত্মহত্যা নাকি হত্যা করা হয়েছে— তা নিয়েই দুই পরিবার থেকে পাওয়া গেছে ভিন্ন বক্তব্য। তবে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনা আপাতত আত্মহত্যা মনে হলেও ময়নাতদন্তের রির্পোটের পরই জানা যাবে সত্যটা। 

জানা গেছে, দুই বছর আগে মো. ইসকান্দর ও রুমা আকতার সামাজিকভাবে বিয়ে করেন। ইসকান্দরে বাড়ি উপজেলার লালানগর ইউনিয়নের কুরমাইকুল এলাকায় । অন্যদিকে রুমা আকতারের বাড়ি একই থানার উত্তর ঘাটচেক গ্রামের খোন্দকার পাড়ায়। গত ১০ আগষ্ট ইসকান্দর এক বছরের বেশি সময় পরে কাতার থেকে দেশে ফিরেন। শুক্রবার দুজনের মৃত্যুর পর আজ (১৪ আগষ্ট) বিকালে ময়নাতদন্ত শেষে নিজ গ্রামে দাফন সম্পন্ন করা হয় এই দম্পতির।   

এদিকে এমন মৃত্যুকে আত্মহত্যা নয় বলে দাবি করেছেন রুমা আকতারের মা নুর নাহার বেগম। তার অভিযোগ, দুই বছর আগে রুমার বিয়ে হয়। বছরখানেক আগে রুমার ছোট বোন নাজমা আকতারকে রুমার দেবর আরিফ বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়েছিল। সে প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়ার পর থেকে রুমার ওপর নেমে আসে নির্যাতন। দেবরের পাশাপাশি রুমার শাশুড়িও তাঁর মেয়েকে তুচ্ছ ঘটনায় সব সময় নির্যাতন করতেন। তাঁর মেয়ে ও জামাতাকে মেরে ফেলা হয়েছে। 
 
একই অভিযোগের সুর ইসকান্দরের স্ত্রী রুমার বাবা জামাল উদ্দিনের। তিনি জানান, গতকাল  বিকেল ৩টায়ও মেয়ের (রুমার) সঙ্গে তার ফোনে কথা হয়। তিনি জামাইকে নিয়ে বাড়িতে বেড়াতে আসতে বলেন। প্রতি উত্তরে রুমা জানান তারা মহরমের পর আসবেন। হঠাৎ রাতে তিনি শুনেন তারা আত্মহত্যা করেছেন। তাদের মধ্যে কোনো সমস্যা হলে তখন তো তাকে জানাতেন। 

তবে ঘটনার সময় ওই ঘরের উঠানে নাতি নিয়ে বসে ছিলেন ইসকান্দরের মা ফিরোজা বেগম। তিনি বলেন,‘আমি সন্ধ্যায় নাতনিকে নিয়ে বাইরে খেলছিলাম। ঘরে এসে দেখি তাদের রুমের দরজা বন্ধ। অনেক ডাকাডাকির পরও না খোলায় জানালা দিয়ে দেখি দুজন একসঙ্গে একটি ওড়নায় ঝুঁলে আছে। পরে আশেপাশের মানুষজন ডেকে দ্রুত তাদের ফাঁস থেকে নামাই।’

এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার লালানগর ইউনিয়েনর চেয়ারম্যান মীর তৌহিদুল ইসলাম (কাঞ্চন চেয়ারম্যান) সিভয়েসকে বলেন,‘ গতকাল ঘটনাটি শুনে আমি প্রথমে পুলিশকে জানাই। যতটুকু শুনেছি গতকাল দুপুরে খাওয়ার পর স্বামী স্ত্রী দরজা বন্ধ করে রেস্টে ছিলেন। আর ছেলের মা তাদের নাতি নিয়ে বাইরে ছিলেন। সন্ধ্যার দিকে তারা ডাকাডাকি করলে দরজা বন্ধ পান ভেতর থেকে। পরে লোকজন দরজা ভেঙে তাদের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। তবে মেয়ের পরিবারের যে অভিযোগ তা আমি এখনো শুনিনি। আশা করি পুলিশ ময়নাতদন্তের রির্পোট পেয়ে এ মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন করবে।  ’

এদিকে এ ঘটনার পরে রুমা আকতারের পিতা জামাল উদ্দিন থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মিল্কী সিভয়েসকে বলেন, ‘এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত থানায় অপমৃত্যুর একটি মামলা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রির্পোট পাওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে মৃত্যুর রহস্য জানা যাবে। আপাতত এঘটনাকে আত্মহত্যা মনে হলেও বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না।’

-সিভয়েস/এইচবি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়