Cvoice24.com

৭ বছর পর দেশে ফিরলেন রাঙ্গুনিয়ার ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ সন্তেুাষ

সিভয়েস ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:৫২, ১ এপ্রিল ২০২২
৭ বছর পর দেশে ফিরলেন রাঙ্গুনিয়ার ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’  সন্তেুাষ

সংগৃহীত

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থেকে সাত বছর আগে হারিয়ে যাওয়া সন্তোষ দেব অবশেষে দেশে ফিরলেন। শুধু সন্তোষ দেব নয়, ভারতে আটকে পড়া আরও চার বাংলাদেশিকে ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশন তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করেন।

শুক্রবার (১ এপ্রিল) দুপুরে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা থেকে আখাউড়া সীমান্ত চেকপোস্ট দিয়ে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

ভারত থেকে ফেরত আসা অন্য চার বাংলাদেশি হলেন- নারায়ণগঞ্জের বিজয় চুমু, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের ময়না বেগম, পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী এলাকার রোজিনা বেগম ও কুমিল্লা চান্দিনার কুলসুম বেগম। এরা প্রত্যেকেই ৫ বছর থেকে ১০ বছর পর্যন্ত ভারতে আটকা ছিলো।

ত্রিপুরায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনারের সহযোগিতায় ওই ৫ জনকে বাংলাদেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। দুপুরে আখাউড়া স্থলবন্দরের নো-ম্যান্স ল্যান্ডে তাদেরকে ভারত থেকে দেওয়ার সময় ভারতের ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারী কমিশনার কার্যালয়ের হাই কমিশনার আরিফ মোহাম্মদ প্রথম সচিব মো. রেজাউল হক, প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান এস এম আসাদুজ্জামান, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাইফুল ইসলাম, বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মসূচি প্রধান শরিফুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক সৈয়দ খায়রুল আলম, ইমিগ্রেশন পুলিশ ইনচার্জ সাব ইন্সপেক্টর আবু বক্করসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।  


সন্তোষ দেবের ছেলে অন্তু দেব জানান, তার বাবা সন্তোষ দেব আজ থেকে প্রায় ৭ বছর আগে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার তার নিজ বাড়ি থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হন। প্রথমে তারা ভেবেছিলেন তিনি হয়তো তাদের কোনো আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গেছেন। কিন্তু যখন সময় গড়িয়ে যাচ্ছে তার বাবার আর বাড়ি ফেরার কোন নাম নেই। পরে আত্মীয় স্বজনসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ খবর করা হয়। এতে কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারেন তার বাবা ভারতে আছে। এতোদিন পর বাবাকে ফিরে পেয়ে খুব আনন্দ লাগছে। 

এসময় সন্তেুাষ দেবও নিজ দেশে ফিরে এসে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তা দেখে তার আত্মীয় স্বজনরাও আনন্দে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এমন আবেগঘন দৃশ্য দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েন উপস্থিত অনেকে। 

ভারত ফেরত কুমিল্লা চান্দিনার কুলসুম বেগমের ভাই আবুল বাশার জানান, তার বোন কুলসুম বেগম ২০১৪ সালে হঠাৎ করে স্বামীর বাড়ি কুমিল্লার দুর্গাপুর থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। অনেক পরে পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারেন কুলসুম বেগম ভারতের আগরতলায় আছে। কিন্তু কীভাবে গেল তারা বুঝতে পারেননি। 

পটুয়াখালীর রোজিনা বেগমের ভাই সাহাব উদ্দিন জানান, আজ থেকে প্রায় ১২ বছর আগে তার বোন নিখোঁজ হন। খোঁজ খবর করে কোন সন্ধান না পাওয়ায় তারা ধরেই নিয়েছেন হয়তো আর বেঁচে নেই তার বোন। এরপর গত এক বছর আগে জানতে পারেন তার বোন ভারতে আছে। 

ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার আরিফ মোহাম্মদ সাংবাদিকদের জানান, পাঁচ বাংলাদেশিই মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ত্রিপুরায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হতে আটক হন। পরে আদালতের নির্দেশে আগরতলার মডার্ন সাইক্রিয়াটিক হাসপাতালে তারা চিকিৎসাধীন ছিলেন। তবে তারা কিভাবে ভারতে এসেছেন সে ব্যাপারে কিছুই বলতে পারেনি। এদের অনেকেই এই হাসপাতালে চার থেকে পাঁচ বছর বা আরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ার পর তাদেরকে দেশে ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই হাসপাতালে আরও বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি চিকিৎসাধীন আছেন। পর্যায়ক্রমে তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে।

সিভয়েস/এএ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়