সিএনজি উল্টে বেরিয়ে এলো মদ, অভিযান দাবি করে ‘ক্রেডিট’ নিল পুলিশ
সাতকানিয়া প্রতিনিধি
সাতকানিয়া থানা।
কথায় আছে ‘ঝড়ে বক মরে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে’। ঠিক এমন ঘটনা যেন ঘটেছে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়। শুক্রবার বাঁশখালী-গুনাগরি সড়কের দেওদীঘি হাইস্কুলের দক্ষিণ গেটে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চাকা খুলে রাস্তার পাশে পড়ে যায়। গন্ধের রহস্য ভেদ করতে গিয়ে ‘চক্ষুচড়কগাছ’ তাৎক্ষণিক উদ্ধারে ছুঁটে যাওয়া প্রত্যক্ষর্শীদের। চালকের আসনের নিচে লুকানো অবস্থায় উদ্ধার করে চোলাই মদ। পরে খবর দিয়ে চোলাই মদ ও মদ পাচারে ব্যবহৃত সিএনজিটি পুলিশকে হস্তান্তর করে উপস্থিত জনতা। এখন ঘটনার একদিন পর পুলিশ বলছে, ‘গোপন’ সংবাদের ভিত্তিতে উদ্ধার হয়েছে এসব!
শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সাতকানিয়া থানা পুলিশ বলছে, ‘থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইয়াসির আরাফাতের তদারকি ও নেতৃত্বে সাতকানিয়া থানায় কর্মরত এসআই মাজহারুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করিয়া সাতকানিয়া থানার এওচিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেওদীঘি বাজার কেএম উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আবদুর ছবুর প্রকাশ ভেট্টা মিয়া (৪৫) নামে একজনের হেফাজত থেকে ৮০ লিটার চোলাই মদ ও একটি নাম্বারবিহীন সিএনজি উদ্ধার করা হয়।’ তবে উপস্থিত জনতার হাতে পুরো ঘটনা ধরা পড়ার বিষয়টি এড়িয়ে গেছে সাতকানিয়া থানা পুলিশ। অনেকটা ‘ঝড়ে বক মরে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে’।
পুলিশের ‘উল্টে’ যাওয়ার ঘটনায় হতবাক স্থানীয়রা। হাতে আসা একটি ভিডিও দেখে ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় একজনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চোখের সামনে দুর্ঘটনা। তখন আশপাশের মানুষ দৌঁড়ে গেছে কারও কিছু হলো কিনা দেখতে। কিন্তু বেশি গন্ধ উঠায় খুঁজতে খুঁজতে ড্রাইভারের সিটের নিচ থেকে মদ পাওয়া গেছে। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশের একটি টিম এসে সিএনজি চালককে সঙ্গে নিয়ে থানায় চলে যায়। পরে কি হয়েছে জানিনা। পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ওই জায়গা থেকে মদসহ একজনকে আটকের খবর বললে তিনি বলেন, ‘পুলিশ কোত্থেকে, পুলিশই তো জানতো না, ওখান থেকে কারা জানি ফোন করছিল।’
এ বিষয়ে সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইয়াসির আরাফাতের কাছে জানতে ফোন দিলে প্রথমে তিনি ‘প্রেস বিজ্ঞপ্তির’ কথা উল্লেখ করেন। পরে ভিডিও ও স্থানীয়দের বক্তব্য তুলে ধরলে ওসি বলেন, ‘যা জানেন লিখেন’।
পরে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান বলেন, বিষয়টি খোঁজ খবর নিচ্ছি। এ ধরনের ঘটনায় উদ্ধারকারী কিংবা স্থানীয়দের উৎসাহিত করতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, স্থানীয়রা মামলার বাদি হতে চায় না। আমরা সামাজিকভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাই, এরপরও ভবিষ্যতে আমরা বিষয়গুলো আরও গুরুত্বের সাথে দেখব।