Cvoice24.com

জঙ্গল সলিমপুরে ৪০ একর জমিতে হচ্ছে সাফারি পার্ক— প্রাণী থাকবে উন্মুক্ত, দর্শনার্থী খাঁচাতে

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:২৯, ১ আগস্ট ২০২২
জঙ্গল সলিমপুরে ৪০ একর জমিতে হচ্ছে সাফারি পার্ক— প্রাণী থাকবে উন্মুক্ত, দর্শনার্থী খাঁচাতে

সিঙ্গাপুর নাইট সাফারি পার্ক। ছবি: সংগৃহীত।

সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর এলাকার সরকারি প্রায় ৪০ একর জায়গায় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার এক্সটেনশন হিসেবে ‘নাইট সাফারি’ চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। 

সোমবার (১ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় চারটি বিরল প্রজাতির সাদা বাঘের জন্ম এবং চিড়িয়াখানার বর্তমান ব্যবস্থাপনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।

জেলা প্রশাসক বলেন, সিঙ্গাপুরের মান্দাই ওয়াইল্ড লাইফ রিজার্ভ নাইট সাফারির আদলে জঙ্গল সলিমপুরে ‘নাইট সাফারি’ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যা হবে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম নাইট সাফারি পার্ক। এ সাফারি পার্কের জন্য স্থান নির্ধারণ করতে আগামীকাল মঙ্গলবার জঙ্গল সলিমপুর পরিদর্শনে যাওয়ার কথাও জানান তিনি।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে মমিনুর রহমান আরও বলেন, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার জন্য জলহস্তি, সিংহ, জিরাফ, উট, ক্যাঙ্গারু, ওয়াইল্ড বিষ্ট, লামাসহ বিভিন্ন প্রজাতীর আরও পশুপাখি সংগ্ৰহ করে বংশবৃদ্ধি করা হবে এবং যার মাধ্যমে প্রাণী সংরক্ষণ করা হবে। বাঘের খাঁচা সম্প্রসারণ, চিত্রা হরিণের খাঁচা বৃহৎভাবে তৈরি, ভল্লুকের খাঁচা সম্প্রসারণ, কুমিরের খাঁচা আধুনিকীকরণ, বিভিন্ন প্রজাতির সাপের জন্য আলাদা স্নেক সেকশন তৈরি, ময়ূরের জন্য চিড়িয়াখানার নতুন অংশে এভিয়ারি তৈরি, শকুন সংরক্ষণে নতুনভাবে অনুকূল খাঁচা তৈরি করা হবে। বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে প্রাণী সংরক্ষণে ভূমিকা পালন এবং এর সঙ্গে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ করানো হবে। এছাড়া বন্যপ্রাণী ব্যবস্থা বিষয়ে ট্রেনিং কোর্স চালু করা, সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের আরও বড় পরিসরে প্রাণী সচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়ে শিক্ষা প্রদানপূর্বক ফ্রি চিড়িয়াখানা পরিদর্শন ও বিনোদন প্রদান করা হবে। ভবিষ্যতে চিড়িয়াখানার বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি করে তা সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অবমুক্ত করা হবে এবং চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানাকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি অন্যতম সেরা প্রাণী সংরক্ষণ ও বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক বলেন, ১৯৮৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন জেলা প্রশাসক ও বর্তমান সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী আব্দুল মান্নানের উদ্যোগে ও জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় এর মূল উদ্দেশ্য ছিল চট্টগ্রাম জেলার মানুষের জন্য একটি চিড়িয়াখানা তৈরি তথা বিনোদনের ব্যবস্থা করা।

মমিনুর রহমান আরও বলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ও নিবিড় তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রাম জেলার একমাত্র বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, গবেষণা, শিক্ষা ও বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন প্রকার অবকাঠামোগত সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে এবং নতুন নতুন প্রাণি ক্রয় ও সংগ্রহের মাধ্যমে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার পর্যটন সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে ব্যাপক হারে চিড়িয়াখানায় দর্শক সমাগম হচ্ছে। সরকারি অনুদান কিংবা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অনুদান ছাড়া শুধুমাত্র টিকেট বিক্রির টাকা দিয়ে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা সকল অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ, পশু-পাখির খাদ্য ব্যয়, ওষুধ ও পরিচর্যা ব্যয়, প্রাণি ক্রয় ও সংগ্রহ বাবদ ব্যয় এবং কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন দেওয়া হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, চিড়িয়াখানার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বাঘ ও জেব্রা সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া রয়েছে ভল্লুক, সিংহ, হরিণ (চিত্রা, সাম্বার, মায়া), উল্লুক, বানর, মেছোবিড়াল, চিতাবিড়াল, অজগর, বাঘদাশ, উঠপাখি, ইমু পাখি, গয়াল, কুমির, ময়ূর, ঘোড়া ,বক, টিয়া সহ ৬৬ প্রজাতির ৬২০ টি পশুপাখি আছে। এ চিড়িয়াখানায় গড়ে তোলা হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম প্রাকৃতিক এভিয়ারি (পক্ষীশালা) যেখানে তিন শতাধিক পাখি রয়েছে। 

উন্নয়নের কথা তুলে ধরে মমিনুর রহমান বলেন, শিগগিরই অনলাইন টিকেটিং সিস্টেম চালু হতে যাচ্ছে; যার মাধ্যমে দর্শনার্থীরা ঘরে বসেই টিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া কর্মকর্তা/কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড এই মাসেই চালু হবে বলে জানান তিনি।

সিভয়েস/এমএম/এএ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়