Cvoice24.com

চাকসু ভবনে কর্মচারী সমিতির নির্বাচন, ক্ষুব্ধ ছাত্রসংগঠনগুলো

চবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:৩৯, ৯ ডিসেম্বর ২০২১
চাকসু ভবনে কর্মচারী সমিতির নির্বাচন, ক্ষুব্ধ ছাত্রসংগঠনগুলো

চাকসু ভবন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) এর সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯০ সালে। এরপর কেটে গেছে ৩১টি বছর। কোন ধরনের কার্যক্রম না থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা চাকসুকে চেনেন ক্যান্টিন অথবা একটি কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে। এবার এসব পরিচয় ছাপিয়ে নির্বাচনী কার্যালয় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে চাকসু। জানা গেছে, আগামী ১১ জানুয়ারি চাকসুতে কর্মচারী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। 

আজ বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত নির্বাচনী তফসিলে এমনটা উল্লেখ করেছেন নির্বাচন কমিশনার সৈয়দ মনোয়ার আলী। তবে চাকসুতে নির্বাচনের বিষয়ে কিছুই জানেন না খোদ চাকসুর পরিচালক। অথচ কর্মচারী সমিতির নির্বাচন সংগঠনটির অফিসে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, চাকসু কেন্দ্রকে নির্বাচনী কার্যালয় বানিয়ে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের বিধিবদ্ধ ব্যবস্থাকে হেয় করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাদের অভিযোগ, 'যাচ্ছেতাই' ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতেই চাকসু নির্বাচন দিচ্ছেনা প্রশাসন। কারণ চাকসু কার্যকর থাকলে জবাবদিহিতা থাকবে। 

ছাত্র সংগঠনগুলো বলছে, চাকসু মানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের স্থান। কিন্তু প্রশাসন চাকসু ভবনকে এখন বিনোদন কেন্দ্র বানাতে চাচ্ছে। না হয় এই ভবনে কেন বিয়ের আয়োজন কিংবা অন্য সমিতির নির্বাচন হবে?

শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু সিভয়েসকে বলেন, ‘চাকসুতে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের কথা বলা হবে। যেখানে গত ৩১ বছর চাকসু নির্বাচন হচ্ছে না, সেখানে অন্য কোনো সংগঠনের নির্বাচন সত্যি দুঃখজনক।’

শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রত্যয় নাফাক বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্য হলো ছাত্রদের অধিকার নিশ্চিত করা৷ কিন্তু গত ৩ দশক ধরে চাকসু নির্বাচন হচ্ছে না। কিন্তু কর্মচারীদের নির্বাচন চাকসুতে হবে। এই ঘটনা চাকসুর জন্য লজ্জা।’

চাকসু কেন্দ্রের পরিচালক শাহেদ বীন ছাদেক বলেন, ‘চাকসুতে কোনো সংগঠনের নির্বাচনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমাকে কোনো চিঠিও দেয়া হয়নি।’

নির্বাচন কমিশনার সৈয়দ মনোয়ার আলী বলেন, ‘কর্মচারী সমিতির গঠনতন্ত্রে নির্দিষ্ট কোনো স্থানে নির্বাচন করার কথা উল্লেখ নেই। কর্মচারীরা বেশিরভাগই বিভিন্ন অনুষদে কাজ করে। তাই সবার সুবিধার্থে চাকসুতে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

চাকসুর পরিচালক বিষয়টি না জানার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রশাসনকে মৌখিক জানিয়েছি। কাল চাকসুর পরিচালকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মনিরুল হাসান সিভয়েসকে বলেন, ‘আমরা কর্মচারীদের সুবিধার্থে চাকসুতে নির্বাচনের অনুমতি দিয়েছিলাম। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তুললে আমরা নির্বাচনের স্থান পরিবর্তন করে দিব।’

প্রসঙ্গত, ডাকসু নির্বাচনের পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ২০১৯ সালের ২০ মার্চ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দেয় তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। পরদিন চাকসুর নীতিমালা পর্যালোচনা করতে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু সে কমিটি দুইবছর পেরিয়ে গেলেও কার্যক্রমের কোনো অগ্রগতি নেই। বর্তমান প্রশাসনও আপাতত চাকসু নির্বাচন নিয়ে ভাবছে না।
 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়