Cvoice24.com

চবিতে আন্তর্জাতিক গবেষণাগার, বাহিরের সাহায্য ছাড়াই জিনোম গবেষণা হবে চট্টগ্রামে

চবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:০২, ২৩ মে ২০২২
চবিতে আন্তর্জাতিক গবেষণাগার, বাহিরের সাহায্য ছাড়াই জিনোম গবেষণা হবে চট্টগ্রামে

চট্টগ্রামে বিভিন্ন রকম অণুজীবের সংক্রমণ, পরিবর্তন ও রুপ প্রকৃতির কারণ নিয়ে গবেষণা সহজতর করতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগে প্রথমবারের মত জিনোম গবেষণার আন্তর্জাতিক যৌথ গবেষণাগার স্থাপন করা হয়েছে।

এই গবেষণা নেক্সট জেনারেশন সিকুয়েন্সিং রিসার্চ এন্ড ইনভেশন ল্যাব চিটাগাং (এনরিচ) নামে গবেষণাগারটি চট্টগ্রামের সকল প্রকারের অণুজীব, ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের জিনোম বিন্যাস উন্মোচনে কাজ করবে। এর ফলে বন্দরনগরীতে ভবিষ্যতে যেকোনো মহামারীতে বাহিরের সাহায্য ছাড়াই জিনোম গবেষণা সম্ভব হবে।

সোমবার (২৩ মে) ৬টি নতুন আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান গবেষণাগার নিয়ে বায়োটেকনোলজি রিসার্চ এন্ড ইনোভেশন সেন্টার (ব্রিক) ও ঢাকার চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন (সিএইচআরএফ) এবং সুইজারল্যান্ডের ফাইন্ড ডায়াগনস্টিকের সহায়তায় গবেষণার নতুন দ্বার উন্মোচন হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।

এসব গবেষণাগার উদ্বোধন করেন চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গেষ্ট অব অনার ছিলেন চাইল্ড হেলথ ও রিসার্চ ফাউন্ডেশনের পরিচালক, বিজ্ঞানী, গবেষক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপদেষ্টা সেঁজুতি সাহা।

ড. সেঁজুতি সাহা বলেন, আমরা সবাই জানি সংক্রামক রোগের জন্য জিনোম সিকুয়েন্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেকোন সংক্রামক ব্যাকটেরিয়ার জন্য আমাদের বুঝতে হবে কি জীবাণু দিয়ে রোগগুলো হচ্ছে। জীবাণুগুলোকে বুঝতে হবে। আমরা যদি জীবাণুগুলো বুঝি তাহলে রোগীদের সঠিক চিকিৎসা দিতে পারব।পরবর্তীতে সঠিক ভ্যাকসিন আনতে পারব। যদি পুরো দেশে জিনোম সিকুয়েন্স করতে হয় তাহলে খুবই জরুরি আমাদের নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের ট্রেনিং দিয়ে বের করা। 

তিনি আরও বলেন, এজন্যই চবি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের সঙ্গে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন কোলাবোরেট করছে। সুইজারল্যান্ডের ফাইন্ড ডায়াগনস্টিক এর সহায়তায় জিনোম গবেষণা কেন্দ্র করছি। এখানে জিনোম সিকুয়েন্স করার মেশিন আছে। এছাড়াও যা যা প্রয়োজন আমরা করছি। এই জিনোম সিকুয়েন্স ব্যবহার করে দেশের স্বার্থে, দেশের জন্য গবেষণা করা যাবে। 

ল্যাব নিয়ে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আদনান মান্নান বলেন, বর্তমান সময়ে পুরো পৃথিবীতে সবচেয়ে আলোচিত গবেষণা ক্ষেত্র হচ্ছে জীব প্রযুক্তি। পৃথিবীতে রোগতত্ত্ব, রোগের কারণ, রোগের প্রতিষেধক আবিষ্কার, নতুন নতুন ঔষধের নকশা প্রশিক্ষণ, উন্নতজাতের ধান উৎপাদন, এসব কাজ হচ্ছে বায়োটেকনোলজি ব্যবহার। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো চবির জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে উদ্যোগে বায়োটেকনোলজির ৭টি গবেষণা কেন্দ্র উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এখানে গবেষণা হবে মহামারী, সংক্রামক রোগ, বংশগত রোগ, টিকা ও ঔষধ প্রস্তুত করন, জনস্বাস্থ্য, মানবদেহের জন্মগত ত্রুটি, মানব দেহের দৈহিক বৃদ্ধি বিকাশ। এছাড়াও একটি ক্যানসার বিশেষায়িত ল্যাব হবে। 

তিনি বলেন, এসব ল্যাবগুলোর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মৌলিক গবেষণা শুরু করা। আমাদের এখানে প্রথমধাপে প্রশিক্ষণ নেবে এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি চট্টগ্রামের (ইউএসটিসি) শিক্ষার্থীরা। ধাপে ধাপে চট্টগ্রাম বিভাগের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের জীববিজ্ঞান ও জেনেটিক্সের শিক্ষার্থীদের দিতে চাই। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে চাই।

প্রসঙ্গত, জিনোম সিকুয়েন্সিং প্রক্রিয়াকে সহজ কথায় বলা যায় জিনের গঠন চিহ্নিত করা। একটি ভাইরাসের মধ্যে জিন কীভাবে সাজানো রয়েছে, সেই তথ্যই হলো জিনোম সিকুয়েন্স। সেটি শনাক্ত করতে পারলেই বোঝা সম্ভব হয়, কিভাবে একটি ভাইরাস কিভাবে বেঁচে থাকে কিংবা কিভাবে সংক্রামক হয়ে মানুষ বা অন্য কোনো প্রাণীর শরীরে বেঁচে থাকে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়