Cvoice24.com

দিয়াজ হত্যার ছয় বছর: গরজ নেই তদন্তে

চবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:৫০, ১৯ নভেম্বর ২০২২
দিয়াজ হত্যার ছয় বছর: গরজ নেই তদন্তে

দিয়াজ ইরফান চৌধুরী

তদন্ত কর্মকর্তার হাত বদলালেও আটকে আছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জট। ছয় বছরেও নেই তদন্তে অগ্রগতি। 

দিয়াজের পরিবারের দাবি, হত্যায় অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় এগুচ্ছে না তদন্ত। বারবার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন, মামলার আলামত নষ্টসহ নানা কারণে পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন দিয়াজের পরিবার।

মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে দিয়াজের বড় বোন জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী নিপা সিভয়েসকে বলেন, ‘সিআইডিতে বারবার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন ছাড়া মামলার আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। উনারা তদন্তও করছেন না।’

তিনি আরও বলেন,‘আসামিরা সবাই প্রভাবশালী। তারা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে। সিআইডি আনঅফিশিয়ালি আমাদেরকে বলছে মামলাটি পিবিআই’কে হস্তান্তরের জন্য আবেদন করতে। তারা আন্তরিক না।'

এদিকে তদন্ত চলছে দাবি করলেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতির কথা জানাতে পারেনি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

বর্তমানে মামলার তদন্ত করছেন সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আবদুস সালাম মিয়া। তিনি বলেন, ‘মামলার তদন্ত চলছে। তদন্তের অগ্রগতি আছে। আরও সময় লাগবে।’

২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ক্যাম্পাসে নিজ বাসা থেকে দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে হাটহাজারী থানা পুলিশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দিয়াজ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ছিলেন। একইসঙ্গে ছিলেন চবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক। তিনি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারি হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

শুরু থেকেই দিয়াজের পরিবার ও চবি ছাত্রলীগের একাংশ দাবি করে আসছিলেন, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। লাশ উদ্ধারের পরদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে প্রথম ময়নাতদন্ত হয়। প্রতিবেদনে দিয়াজকে হত্যার আলামত মেলেনি বলে উল্লেখ করা হয়। ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখান করে দিয়াজের পরিবার।

দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী ২০১৬ সালের ২৪ নভেম্বর ১০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আসামিরা হলেন— বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন, চবি ছাত্রলীগের সে সময়ের সভাপতি আলমগীর টিপু, ছাত্রলীগ নেতা আবুল মনসুর জামশেদ, তাদের অনুসারী রাশেদুল আলম জিশান, আবু তোরাব পরশ, মনসুর আলম, আবদুল মালেক, মিজানুর রহমান, আরিফুল হক অপু ও মোহাম্মদ আরমান। অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

জাহেদা আমিনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত দিয়াজের লাশ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের আদেশ দেন। ২০১৬ সালের ১০ ডিসেম্বর লাশ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ। ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের পর প্রতিবেদনে বলা হয়, দিয়াজের শরীরে আঘাতজনিত জখমের মাধ্যমে হত্যার আলামত আছে।

আদালতের নির্দেশে হাটহাজারী থানায় হত্যা মামলা রেকর্ড হয়। ওই সময়কার ওসি বেলাল উদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর নিজেই তদন্ত শুরু করেন। পরে মামলার ভার যায় সিআইডির কাছে। সিআইডির প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার অহিদুর রহমান তদন্ত শুরুর পর বদলি হন। এরপর থেকে আরও দু’জন কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। এতকিছুর পরও তদন্তে নেই অগ্রগতি।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়