চবিতে উদ্ধার হলো ১১ ফুটের বার্মিজ পাইথন
চবি প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বার্মিজ পাইথন জাতীয় ১১ ফুট লম্বা একটি অজগর সাপ উদ্ধার হয়েছে। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ সংলগ্ন হিল বটম কলোনির পাশ থেকে সাপটি উদ্ধার করা হয়। পরে অজগরটি পাশের জঙ্গলে জনমানবহীন স্থানে অবমুক্ত করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ভেনম রিসার্চ সেন্টারের শিক্ষানবিশ গবেষক রফিকুল ইসলাম বলেন, এটি বার্মিজ পাইথন প্রজাতির সাপ। লম্বায় ১১ ফুট ও ওজন প্রায় ১৩ কেজি। সাপটি খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে চলে এসেছে বলে ধারণা করছি। আমরা সাপটি উদ্ধার করে গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দিয়েছি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অজগর সাপ ধরা পড়ার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে সাপ রাখার একটি কেন্দ্র আছে। গত দশ বছরে অন্তত ২০টি অজগর সাপ ধরা পড়ার কথা জানিয়েছেন চবির নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক।
বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, বার্মিজ অজগর (Burmese python) সাধারণ অজগর (Rock Python) বা ময়াল সাপের চেয়ে তুলনামূলক ভারী। সুন্দরবনে এই প্রজাতির অজগরের আধিক্য বেশি। নির্বিষ এই সাপটি নিশাচর ও খুবই অলস প্রকৃতির, প্রয়োজন ছাড়া খুব একটা নড়াচড়া করে না। এই প্রজাতিটি একাকী বাস করলেও শুধু প্রজননকালে জোড়া বাঁধে। সাধারণত মার্চ থেকে জুনের মধ্যে এদের প্রজননকাল।
দেশের ম্যানগ্রোভ বন, ঘাসযুক্ত জমি, চট্টগ্রাম ও সিলেটের চিরসবুজ পাহাড়ি বনে এদের দেখা পাওয়া যায়। সাপটি সাধারণত মানুষের ক্ষতি করে না। খাদ্য হিসেবে এরা সাধারণত ইঁদুর, মুরগি, শূকর, শিয়ালসহ ছোট থেকে বড় আকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী, সরীসৃপ প্রাণী ইত্যাদি খেয়ে থাকে। এটি নিজের আকারের চেয়েও অনেক বড় প্রাণী খুব সহজেই গিলে খেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, চামড়ার জন্য সাপটি পাচারকারীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। ফলে আমাদের বনাঞ্চল থেকে এটি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর তফসিল-২ অনুযায়ী এ বন্যপ্রাণীটি সংরক্ষিত, তাই এটি হত্যা বা এর যে কোনো ক্ষতি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।
সম্প্রতি অজগরের লোকালয়ে চলে আসার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পাহাড় ও বন উজাড় হওয়ার কারণে সাপের আবাসস্থল সংকুচিত হয়ে গেছে। এতে তাদের খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই খাবারের সন্ধানে সাপগুলো লোকালয়ে আসছে।