Cvoice24.com

বেপরোয়া চবি ছাত্রলীগ, কমিটি বিলুপ্তিতে ফিরবে কি শৃঙ্খলা?

চবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:৫৬, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
বেপরোয়া চবি ছাত্রলীগ, কমিটি বিলুপ্তিতে ফিরবে কি শৃঙ্খলা?

কেন্দ্রীয় সংগঠনের সতর্কতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বারবার সংঘর্ষে জড়িয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সিট দখল কখনও টেন্ডার বাণিজ্য কিংবা ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত আড়াই বছরে শতাধিকবার সংঘর্ষ হয়েছে তাদের মধ্যে।

বর্তমানে সাংবাদিক নির্যাতনসহ নানা বিতর্কিত ও নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের শিরোনামে মধ্যমণি এই ইউনিটটি। বহিষ্কার, সমঝোতা, আটক করেও টেনে ধরা যাচ্ছে না অস্থিরতার লাগাম। এতে করে সংগঠনের অর্জন, সাফল্য ম্লান হচ্ছে। ছাত্রলীগকে নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে।

সর্বশেষ গত ৭ দিনের ব্যবধানে ৫ বার সংঘর্ষে জড়িয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। যদিও এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় সংগঠন। প্রশ্ন উঠেছে— এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে বিশৃঙ্খল চবি ছাত্রলীগে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে, নাকি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে?

সংঘাত-সংঘর্ষে ছাত্রলীগ

গত আড়াই বছরে শতাধিকবার সংঘর্ষ হয়েছে ছাত্রলীগ বিভিন্ন উপপক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে। এর মধ্যে সাত দিনের ব্যবধানে ৫ বার সংঘর্ষে জড়িয়েছে তারা। সর্বশেষ রবিবার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায় বিজয় ও সিএফসি গ্রুপ। এতে দুই ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়। এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম থেকে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের হাটহাজারী যাওয়ার খবরে সিএফসি ও বিজয় উপগ্রুপের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেট এলাকায় ভিড় জমান। এ সময় উভয়পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রথমে বাকবিতণ্ডা ও পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে তা মারামারিতে রূপ নেয়। উভয়পক্ষের নেতাকর্মীরা একে অপরকে কিল ঘুষি ও লাঠি সোটা দিয়ে মারধর করেন। এছাড়া গত ২১ সেপ্টেম্বর পূর্ব শুত্রুতার জের ধরে সংঘর্ষে জড়ায় সিএফসি ও সিক্সটি নাইনের নেতাকর্মীরা। এ সময় দুপক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পালটা ধাওয়া ১০ ছাত্রলীগ কর্মী আহত হন।


চাঁদাবাজিতে ছাত্রলীগ

চাঁদাবাজিতেও পিছিয়ে নেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ গত ১ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে সব ধরনের মেরামত ও নির্মাণকাজ বন্ধের ঘোষণা দেয় ঠিকাদাররা। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাককে চাঁদার দাবিতে হেনস্তা করেন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু মুন্সি। একই দিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর ফজলও ওই নেতার মারধরের শিকার হন। এ দুই ঘটনায় ওইদিনই হাটহাজারী থানায় রাজু মুন্সি ও অজ্ঞাতনামা দুজনের নামে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সাংবাদিক নির্যাতনে ছাত্রলীগ

গত এক বছরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ জন সাংবাদিক মারধর ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন চবি ছাত্রলীগের হাতে। সর্বশেষ রবিবার সংবাদ প্রকাশের জের ধরে প্রথম আলোর প্রতিনিধি মোশাররফকে মারধর করেছে শাখা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি রেজাউল হক রুবেল অনুসারী সিএফসি কর্মীরা। আহত অবস্থায় মোশাররফকে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

পরে বুক ও হাতে আঘাত থাকার কারণে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর আগে গত ১৯ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন চত্বরের একটি চায়ের দোকানের চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে চবি সাংবাদিক সমিতির সদস্য দোস্ত মোহাম্মদের মুখে গরম চা মেরে দেন শাখা ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক খালেদ মাসুদ। এ সময় সাংবাদিক পরিচয় দিলে উপর্যপুরি লাথি মারতে থাকেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্য ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ ঘটনায় দুইজনকে ৬ মাসের বহিষ্কার করলেও ক্যাম্পাসে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। এসব ঘটনার জন্য প্রশাসনের কঠোর বিচারহীনতা সংস্কৃতিকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

চবিতে ছাত্রলীগের এককআধিপত্যের ইতিহাস

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর শিবিরের শক্ত ঘাঁটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনঠাসা হতে থাকে ছাত্রশিবির। বেশ কয়েক দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ২০১৫ সালে ক্যাম্পাসে একক আধিপত্য বিস্তার করে ছাত্রলীগ। ওই বছরের ২০ জুলাই আলমগীর টিপুকে সভাপতি ও ফজলে রাব্বী সুজনকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যের কমিটি দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। স্থানীয় রাজনীতিতে সুজন মহানগর আওয়ামী লীগ এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী পরবর্তীতে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেল আর টিপু মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিল।

কিন্তু কমিটি ঘোষণার পর থেকে ক্যাম্পাসে বেপরোয়া হয়ে ওঠে দুই গ্রুপ। তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে শাটল ট্রেনের বগি ও ক্যাম্পাসভিত্তিক কমপক্ষে ১১টি উপ-গ্রুপ। পরবর্তী সময়ে তারাই উন্নয়ন কাজের দরপত্র ভাগাভাগি, নিয়োগ বাণিজ্য, আধিপত্য বিস্তার, হলের সিট ও বগি দখল নিয়ে জড়িয়েছেন একের পর এক সংঘর্ষে। এরপর ২০১৯ সালের রেজাউল হক রুবেলকে সভাপতি ও ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। নতুন কমিটি পেয়ে চবিতে থামেনি ছাত্রলীগের সংঘাত।

এক ছাত্রলীগে ১১ উপ-গ্রুপ!

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি দুটি পক্ষে বিভক্ত। একটি পক্ষ সাবেক সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী, আরেকটি পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। এ দুটি পক্ষের মধ্যে আবার ১১টি উপপক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে বিজয় ও সিএফসি নওফেলের অনুসারী। আর সিক্সটি নাইন, ভিএক্স, বাংলার মুখ, একাকার, রেড সিগন্যাল, এপিটাফ ও কনকর্ড উপপক্ষ নাছিরের অনুসারী। 

ব্যর্থ রুবেল-টিপু পরিষদ

২০১৯ সালে নতুন কমিটি গঠনের পর দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন, বগি রাজনীতির সংস্কৃতি বন্ধ করে হল ভিত্তিক রাজনীতি চালু করা, অনুষদ কমিটি গঠনসহ নানা প্রতিশ্রুতি দেন সভাপতি রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক টিপু। তবে এসব প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পারলেও এ কমিটি বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে পত্রিকার শিরোনাম হয়েছে বছরজুড়ে।

নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সাড়ে তিন বছরে একটি বর্ধিত সভা করতে পারেনি এই কমিটি। হল ও অনুষদ কমিটির আশ্বাস দিয়ে পার করেছে বছরের পর বছর।

বিতর্ক যেন ছাত্রলীগ সভাপতি রুবেলের নিত্যসঙ্গী

২০১৯ সালের ১৪ জুলাই চবি শাখার সভাপতির দায়িত্ব পান রেজাউল হক রুবেল। এর পর থেকে বিভিন্ন সময়ে নানা অপকর্মের সাথে সংশ্লিষ্টতায় আলোচনায় আসেন এই নেতা। এরমধ্যে ২০২২ সালের ১৭ জুলাই ক্যাম্পাসেই যৌন হেনস্তার শিকার হন এক ছাত্রী।

প্রক্টর অফিসে এ নিয়ে অভিযোগ দিতে গেলে বাধা দেন শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি রুবেল। সে সময় এ ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে দেশজুড়ে। এসব ঘটনায় ৩ দফা কারণ দর্শানোর নোটিশও পান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকে। এছাড়া ২০২২ সালের শেষের দিকে ২ নেতাকে দিয়ে পা টিপিয়ে আলোচনায় আসেন ছাত্রলীগের এই বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা। এ ঘটনায় বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

শৃঙ্খলায় ফিরবে কি চবি ছাত্রলীগ?

চবি ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘাতের পর কমিটি বিলুপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় সংসদ। তবে প্রশ্ন উঠেছে— এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে বিশৃঙ্খল চবি ছাত্রলীগে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে, নাকি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে?

সংশ্লিষ্টদের মন্তব্য, খুব দ্রুত নতুন কমিটি করা না হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংগঠিত এই সংঘর্ষ আরও বাড়বে। তবে অনেক নেতাকর্মীদের দাবি, নির্বাচনের আগে নতুন কমিটি হলে ত্যাগী অনেক কর্মী নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এখন নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ। কথা কাটাকাটিসহ বিভিন্ন কারণে প্রায় প্রতিদিনই তারা ছোটখাট মারামারিতে লিপ্ত হচ্ছে। আগে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মাধ্যমে তাদের থামানো যেতো। কিন্তু এখন সেই দায়িত্ব নেবে কে? এখন তো কেউ কাউকে মানবে না।

যেমন নেতৃত্ব চায় নেতাকর্মীরা

সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি আবরার শাহরিয়ার বলেন, ‘দীর্ঘদিন মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে। আমরা কেন্দ্রীয় কমিটিকে সাধুবাদ জানায়। সামনে আমরা নতুন নেতৃত্ব চায়। তবে এমন নেতৃত্ব চাই যারা চবির চিরন্তন গ্রুপিং রাজনীতির অবসানকল্পে কার্যকর ভূমিকা নিবে, অস্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করবে, সাধারণ ছাত্রদের অধিকার আদায়ে সদা সোচ্চার থেকে পিতা মুজিবের আদর্শিক কর্মী হয়ে সোনার বাংলা বিনির্মাণের সারথি হবে।’

আরেক সহ-সভাপতি সৈয়দ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড হয়ে আগামী নির্বাচনে দূরদর্শী ভূমিকা পালনে বদ্ধপরিকর, স্মার্ট ও মেধাবী, কর্মীবান্দব এবং সাংগঠনিক দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তির হাতেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দায়িত্ব অর্পণ করা হোক।'

যা বলছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ

কেন্দীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে আমরা বির্বত। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখা ও শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা ইতিবাচক ছাত্ররাজনীতির দায়িত্ব। সাম্প্রতিককালে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলো অনাকাঙ্ক্ষিত এবং আমাদের দলীয় শৃঙ্খলা ও আদর্শের পরিপন্থী। একটি ইতিবাচক ছাত্র রাজনীতি আমাদের প্রত্যাশা। সেটির ব্যত্যয় হওয়ায় আমরা এই ব্যবস্থা নিয়েছি।’

প্রশাসনের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন

অভিযোগ উঠেছে, দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র সংগঠনগুলোর মাঝে কোন্দল চলে এলেও তা নিরসনে প্রশাসনের তেমন কোন কার্যকর পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রশাসন অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত না করে সমঝোতাকেই সমস্যা সমাধানের পথ হিসেবে বেছে নিয়েছে। শাস্তি হলেও তা হয় নিয়ম রক্ষার। ফলে অপরাধীরা বার বার পার পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে আছে।

তবে বিষয়টি অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার বলেন, ‘ছাত্ররা বারবার নিজের মধ্যে মারামারি করে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। ক্যাম্পাসে অস্ত্রবাজির কোনো স্থান হবে না। আমরা নিয়মিত শাস্তি দিচ্ছি। এরপরও যদি না হয় তবে আরো কঠোর হব। যারা ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করবে তাদের কোনো ছাড় নয়।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়