Cvoice24.com

চবিতে ৪ সপ্তাহেও হয়নি আসন বরাদ্দের ২য় তালিকা, বিপাকে শিক্ষার্থীরা 

রেফায়েত উল্যাহ রুপক, চবি

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ২ নভেম্বর ২০২৪
চবিতে ৪ সপ্তাহেও হয়নি আসন বরাদ্দের ২য় তালিকা, বিপাকে শিক্ষার্থীরা 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) দীর্ঘ ৮ বছর পর আবাসিক হলগুলোতে আসন বরাদ্দ দিয়ে প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশ করে প্রশাসন। আসন ফাঁকা সাপেক্ষে পরের সপ্তাহে দ্বিতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ করার কথা ছিল। কিন্তু চার সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ২য় মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়নি। এতে বিপাকে পড়েছেন অপেক্ষমান শিক্ষার্থীরা। অধিকাংশ বিভাগের বর্ষ পরীক্ষা শুরু হওয়ায় বাধ্য হয়েই কষ্ট করে হলের বাইরে থাকতে হচ্ছে। তবে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে দ্বিতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ করতে সময় লাগছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

শিক্ষার্থীরা বলেন, কোনো বিভাগ থেকে ৫০ জন, আবার কোনো বিভাগের অল্প কয়েকজন সিট পেয়েছে। আবার অনেক শিক্ষার্থী হলে আসন নিয়েও অবস্থান করে না। এছাড়া এক শিক্ষার্থী দুই হলে আসন পেয়েছে। অন্যদিকে, দীর্ঘ সময় পর বছরের শেষ দিকে ক্যাম্পাস সচল হওয়ায় প্রায় সব বিভাগে পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে। এ অবস্থায় আবাসন ব্যবস্থার দ্রুত সুরাহা না হওয়ায় হতাশায় পড়েছেন অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীরা।

মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. রিয়াদ বলেন, ‘জীববিজ্ঞান অনুষদে অন্যান্য বিভাগের তুলনায় মনোবিজ্ঞান বিভাগের রেজাল্ট খারাপ হয়, এতে রেজাল্টের ভিত্তিতে সিট দেওয়ায় আমাদের ব্যাচের কেউই হলে সিট পায়নি। আর আমার আর্থিক অবস্থা খারাপ ও বাড়ি অনেক দূরে হওয়ায় একধরনের দুর্বিষহ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি।’ 

একই বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী আদিবুজ্জামান তিতাস বলেন, ‘হলে সিট দেওয়ার ক্ষেত্রে ফলাফল, দূরত্ব, আর্থিক অবস্থা, সহ-শিক্ষা কার্যক্রম এসব কিছু বিবেচনা করা দরকার ছিল। তা না করে শুধু রেজাল্টের ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে। এরপর বলা হয়েছিল উনারা ১ সপ্তাহ পরেই আবার ২য় তালিকা দিবেন, তারও কোন খোঁজ-খবর নেই।’ 

জানা গেছে, ছাত্রী হলগুলোর মধ্যে আগে থেকেই প্রায় সিটে শিক্ষার্থীরা বৈধভাবে হলে অবস্থান করছেন। নতুন করে কিছু আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ছাত্র হলগুলোর মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ আসন খালি রয়েছে। এর মধ্যে আলাওল ও এ এফ রহমান হলে প্রায় অর্ধেক আসন খালি। অন্য হলগুলোর মধ্যে সোহরাওয়ার্দী হলে তেমন আসন খালি নেই। আমানত, শাহজালাল ও আব্দুর রব হলে কিছু আসন খালি রয়েছে। অন্যদিকে, নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু হল ও অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলের কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। 

আইসিটি সেল এবং বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশের পর বিভিন্ন সমস্যা ও অভিযোগ নিয়ে প্রায় ৭০০টি আবেদন পড়েছে। এগুলো সমাধান করে দ্বিতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ করতে সময় লাগছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের প্রতিটি অভিযোগ আমলে নিয়ে কাজ হচ্ছে বলেও জানানো হয়। 
 
এ বিষয়ে আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক সাইদুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের আইসিটি সেলে যেসব অভিযোগ পড়েছে তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করছি। এসব কাজ শেষ করতে এক সপ্তাহ সময় লাগবে। আমাদের কাজ শেষ হওয়া মাত্রই আমরা দ্বিতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ করবো।’

চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশের পর বেশকিছু অভিযোগ পড়েছে। এগুলো বিবেচনায় নিয়ে কাজ চলছে। আমরা চাচ্ছি যে অভিযোগগুলো এসেছে পরবর্তী ফলাফলে এগুলোর পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে। শতভাগ স্বচ্ছতা বজায় রেখে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে।’

এর আগে গত ৪ অক্টোবর হলের আসন বরাদ্দ দেওয়ার পরে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ জানানো হয়। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে মেধার ভিত্তিতে দ্বিতীয় মেরিট দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা প্রকাশ করেনি প্রশাসন। 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়

: