Cvoice24.com

‘কি লিখস তোরা? গুলি করে মেরে ফেলবো’— বলেই মহেশখালীতে চার সাংবাদিকদের ওপর হামলা

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:২১, ১৪ জানুয়ারি ২০২২
‘কি লিখস তোরা? গুলি করে মেরে ফেলবো’— বলেই মহেশখালীতে চার সাংবাদিকদের ওপর হামলা

মহেশখালীতে সাংবাদিকের উপর হামলায় ক্যামেরা ভাংচুর

বন্ধুর বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে রাত আড়াইটায় বাড়ি ফিরছিলেন মহেশখালীর চার সাংবাদিক। শাপলাপুরের রসিদ মিয়া ব্রিজের কাছে পৌঁছালে অস্ত্র উঁচিয়ে তাদের গতিরোধ করে ১০/১২ সন্ত্রাসী। শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার পর হুমকি দিয়ে বলে, ‘কি লিখস তোরা? গুলি করে মেরে ফেলবো’, ‘ওসমানকে চিনস, ওসমান শাপলাপুরের বাঘ, লিখলে একদম গুলি মেরে ফুটো করে দিব।' এসব সন্ত্রাসী কক্সবাজারের মহেশখালীর শাপলাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ডা. ওসমান সরওয়ারের অনুসারী বলে অভিযোগ ওঠেছে। 

বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে শাপলাপুরের রসিদ মিয়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় চার সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলার শিকার সাংবাদিকরা হলেন- স্থানীয় দৈনিক কক্সবাজার বার্তার ও সিভয়েস এর প্রতিনিধি এসএম রুবেল, দৈনিক জনকণ্ঠের মহেশখালী প্রতিনিধি ফারুক ইকবাল, দৈনিক ইনানীর প্রতিনিধি আ ন ম হাসান এবং কক্সবাজার লাইভ ২৪ এর প্রতিনিধি একে রিফাত।

সাংবাদিকরা বলেন, শাপলাপুরের এক বন্ধুর মেহেদী অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে পূর্ব পরিকল্পনামাফিক একদল বন্দুকধারী সন্ত্রাসী আমাদের উপর অতর্কিতভাবে হামলা করেছে। এসময় আমাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে ক্যামেরাগুলো ভাংচুর করে। শাপলাপুরে না যেতে আমাদের হুমকি দেয়। হামলাকারীরা শাপলাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির অনুসারী। 

দৈনিক জনকণ্ঠের মহেশখালী প্রতিনিধি ফারুক ইকবাল বলেন, ‘আমরা মনে করেছিলাম ডাকাত দল। কিন্তু না, তারা আমাদের কিছু নেয়নি, শুধু হামলা করে। বারবার ডাক্তার ওসমানের নাম উচ্চারণ করে বলেন, ওচমান হলো বাঘ। কি লিখস তোরা? মেরে ফেলব। 'ওসমানকে চিনস, ওসমান শাপলাপুরের বাঘ, লিখলে একদম গুলি মেরে ফুটো করে দিব।'

কক্সবাজার বার্তার ও সিভয়েজ প্রতিনিধি এসএম রুবেল বলেন, ‘গতবছর শাপলাপুরে একজন কলেজ ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তার পরিবারের দাবি ছিল, ওসমান তার গ্যাং নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। তারপরে ওসমান এক দিনমজুরকে রাস্তায় একা পেয়ে মারধর করেন। এই সংবাদ প্রচার না করতে আমাদের বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখায়, কিন্তু আমরা তাতে রাজি না হয়ে সংবাদ লিখেছিলাম। সেটার প্রতিশোধ নিতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমাদের উপর হামলা করে। এখন আমরা জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছি।’

তবে এমন অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে ডা. ওসমান বলেন, ‘এই ঘটনার সাথে আমি জড়িত নই। আমাকে ফাঁসানোর জন্য আমার প্রতিপক্ষরা আমার নাম ব্যবহার করছে। আমিও হামলাকারীদের বিচার চাই।’

মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হাই সিভয়েসকে বলেন, ‘হামলার শিকার সাংবাদিকরা রাতে থানায় এসেছিল। সকালে অভিযোগ দেওয়ার কথা, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে সাংবাদিকদের উপর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে মহেশখালী উপজেলা প্রেসক্লাব ও রিপোটার্স ইউনিটি মহেশখালী শাখার নেতৃবৃন্দ। দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়