Cvoice24.com

সমুদ্র তীরের পরিত্যক্ত ভবনে মাদকসেবীদের আস্তানা

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:১২, ১৭ জানুয়ারি ২০২২
সমুদ্র তীরের পরিত্যক্ত ভবনে মাদকসেবীদের আস্তানা

ডেসটিনির পরিত্যক্ত ভবন।

কক্সবাজার শহরের সুগন্ধ পয়েন্ট এলাকায় সাগর তীরে দাঁড়িয়ে আছে বিলুপ্ত এমএলএম কোম্পানি ডেসটিনির মালিকানাধীন পরিত্যক্ত বহুতল ভবনটি। কয়েকশো কোটি টাকা মূল্যের বহুতল ভবনটি দীর্ঘ ১০ বছর ধরে এভাবে পড়ে আছে। অব্যবহৃত ভবনটি এখন অপরাধীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। সেখানে প্রায় সময় আসর বসে মাদকসেবী ও পেশাদার ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধীদের। 

ডেসটিনির ভবনের মতো শহরের পর্যটন জোন কলাতলীতে পরিত্যক্ত রয়েছে আরো কয়েকটি বহুতল ভবন। এই তালিকায় রয়েছে, কলাতলী মোড় সংলগ্ন ফকির গ্রুপের বিশাল ভবন। তার পাশে আছে আরো একটি পরিত্যক্ত ভবন। এছাড়া কলাতলী প্রাথমিক সরকারি বিদ্যালয়ের পাশে আরএফ বিল্ডার্সের নির্মাণাধীণ ভবনও অনেকটা পরিত্যক্ত।
 
স্থানীয়রা বলছেন, শহরের যেসব পরিত্যক্ত ভবন রয়েছে, সব ভবন এখন মাদকসেবী ও ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধীদের আস্তানা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব অপরাধীরা সংঘবদ্ধ হয়ে এসব ভবনকে মাদকের আখড়া বানিয়েছে। শুধু পেশাদার অপরাধী নয়; সৈকতের বিচরণ করা ক্যামেরাম্যান, হকারসহ আশেপাশে অবস্থান করা অনেকে এসব পরিত্যক্ত ভবনে গিয়ে নিয়মিত মাদক সেবন করে। 

আদালতের নির্দেশে ভবনটির ডেসটিনির ভবনটি পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করে। তবে একটি সাইনবোর্ড ছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে আর কোনো ধরণের নিয়ন্ত্রণ বা দেখভাল নেই। তবে ডেসটিনির পক্ষ থেকে নিয়োগ করা হয়েছে একজন পাহারাদার। দীর্ঘদিন ধরে বয়স্ক একজন পাহারাদার সেখানে পাহারার কাজ করে যাচ্ছেন।

স্থানীয়রা বলেছেন, ডেসিটিনির ভবনটির বেশ কিছু কক্ষ এখন বহিরাগতরা দখল করে নিয়েছেন। এসব বহিরাগতরা সবাই আশেপাশের ব্যবসায়ী। কিছু কক্ষ বহিরাগতরা দখলে নিলেও পুরো ভবন জুড়ে চলছে অপরাধীদের রাজত্ব। সন্ধ্যায় নামলেই সেখানে আড্ডা বসায় ছিনতাইকারী ও মাদকসেবীরা। এসব অপরাধকান্ডে কারণে বেশ ভোগান্তিতে রয়েছে ব্যবসায়ীসহ আশেপাশের লোকজন। কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারে না। 

  স্থানীয়রা আরও বলেন,মাদক সেবনের জন্য নিরাপদ স্থান এখন এসব পরিত্যক্ত ভবন। একই সাথে ছিনতাকারীরা অপরাধ করে সেখানে গিয়ে গা ঢাকা দিচ্ছে। ফলে অপরাধীরা নির্বিগ্নে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সম্প্রতি পর্যটক ধর্ষণকান্ডের মূলহোতা আশিক ও তার বাহিনী ডেসটিনির ভবনের নিয়মিত আসর বসাতো বলে জানিয়েছেন স্থানীয় দোকানদাররা।এসব পরিত্যক্ত ভবন কেন্দ্রিক অপরাধীদের রোধ করা না গেলে বড় পর্যটন জোনে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না বলে মনে করছেন তারা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘পর্যটন এলাকা হলেও তা ট্যুরিস্ট পুলিশের আওতায় পড়ে না। তারপরও তারা এসব পরিত্যক্ত ভবন কেন্দ্রিক নজরদারি রাখছেন। বিভিন্ন সময় সেখানে অভিযানও চালিয়েছেন। তবে পূর্ণাঙ্গভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা পুলিশকে জানিয়েছি।’ 

কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘থানা পুলিশ নিয়মিত শহরের সব অপরাধপ্রবণ স্থানে টহল জোরদার রেখেছে। ছিনতাইকারী ও মাদকসেবী ধরতে পুলিশের নিয়মিত অভিযান চলে। পরিত্যক্ত ভবনকেন্দ্রিক অপরাধীদের আড্ডা বসানোর কোনো তথ্য নেই। এখন অবগত হয়েছি। ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়