Cvoice24.com

কক্সবাজারে ছাত্রলীগ নেতা হত্যা: পুলিশের গাফিলতিকে দুষছে ছাত্রলীগ নেতারা

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:৫৩, ৫ জুলাই ২০২২
কক্সবাজারে ছাত্রলীগ নেতা হত্যা: পুলিশের গাফিলতিকে দুষছে ছাত্রলীগ নেতারা

নিহত ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল

কক্সবাজারের খুরুশকুলে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যোগ দিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় ফয়সাল উদ্দিন (২৬) নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশের গাফিলতিকে দুষছেন ছাত্রলীগ নেতারা। একইসঙ্গে দলীয় নেতাদের প্রতিও ক্ষোভ ঝাড়ছেন তারা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ছাত্রলীগ নেতারা বলছেন— হামলাকারীরা ফয়সালকে মারতে ওৎ পেতে ছিল। আওয়ামী লীগের নেতারা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে ফয়সালের অটোরিকশাটি সামনে দিয়ে তাকে প্রহরায় নিয়ে আসছিলো। কিছুদূর গেলে ওৎ পেতে থাকা হামলাকারীরা আক্রমণ করে বসে। এসময় মাত্র পাঁচ গজ পিছনে ছিলো পুলিশের গাড়ি। কিন্তু পুলিশ ফয়সালকে বাঁচাতে এগোয়নি। পুলিশের সামনেই উপর্যুপরি কুপিয়ে চলে যায় হামলাকারীরা।

পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রতি ক্ষোভ ঝেড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের জবাবদিহিতা ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতারা। এমনকি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মাহমুদুল করিম মাদু ফেসবুক লাইভে এসে ঘটনার পুরো বর্ণনা দিয়েছেন। সেখানেও তিনি পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস.এম সাদ্দাম হোসাইন বলেন, ঘটনার পর থেকে পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ উঠছিলো। এর মধ্যে ঘটনার সময় ফয়সাল উদ্দিনের সাথে থাকা তার এক সহযোগী গণমাধ্যমে যে বক্তব্য দিয়েছে তাতে আরও স্পষ্ট, কি নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। 

জেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ এই নেতার প্রশ্ন— ‘ঘটনার আগে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সম্মেলনে অংশ নেয়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মাহমুদুল করিম মাদু ওসিকে ফোন করলে ওসি অতিদ্রুত আবু রায়হানের নেতৃত্বে পুলিশের টিম পাঠায়। কিন্তু ঘটনার সময় তিনি কেন গাফিলতি করলেন? কেন ফয়সালকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিলেন?’

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান বলেন, ‘নির্দোষ ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল উদ্দীনের হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামবো না। আমরা হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই। একই সাথে গাফিলতির দায়ে পুলিশ কর্মকর্তা আবু রায়হানকেও আইনের আওতায় আনতে হবে।’

এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত  পুলিশ (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে করা এই কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান।

তিনি বলেছেন, ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশের দায়িত্ব পালনে অবহেলা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে কোন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে পুলিশ সুপার বলেন, ‘পুলিশের ৩ সদস্য ঘটনাস্থলে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সালকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষে ১৬ রাউন্ড গুলিও করা হয়। হামলাকারীর সংখ্যা ৫০ জনের বেশি। ঘটনা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ চেষ্টা করলে পুলিশের উপরও হামলা করে। এতে ৩ সদস্য আহতও হয়।’

অন্যদিকে হত্যাকাণ্ডের পর থেকে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ঘটনার পর পর সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল হত্যার প্রতিবাদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তথ্য দিয়ে প্রধান অভিযুক্তসহ ৪ জনকে ধরিয়ে দিয়েছে তারা। তবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা করেনি নিহতের পরিবার।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়