Cvoice24.com

‘অসত্য’ তথ্য দিয়ে ছেলের নাম পুরস্কারের তালিকায়, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ

মহেশখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:১৭, ২৪ মার্চ ২০২৩
‘অসত্য’ তথ্য দিয়ে ছেলের নাম পুরস্কারের তালিকায়, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ

মেধা তালিকায় পিছিয়ে থাকা সত্ত্বেও ‘অসত্য’ তথ্য দিয়ে নিজের ছেলের নাম পুরস্কারের তালিকায় তোলার অভিযোগ উঠেছে কুতুবজুম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদুল করিমের বিরুদ্ধে। 

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার কুতুবজুম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক।

অনুষ্ঠানে স্কুলের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়া ৫ শিক্ষার্থীকে বাইসাইকেল উপহার দেন প্রধান অতিথি। তবে নবম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণিতে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে যে শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন তার নাম বাদ দিয়ে নিজের ছেলের নাম পুরস্কারের তালিকায় রাখেন খোদ প্রধান শিক্ষক মাহমুদুল করিম। তাই প্রধান অতিথির কাছ থেকে তাঁর ছেলেই বাইসাইকেল গ্রহণ করে।

তবে দশম শ্রেণিতে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পরও পুরস্কারের তালিকা থেকে বাদ পড়েন শিক্ষার্থী সামিয়া সোলতানা সোমা। ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিদায় অনুষ্ঠানের পুরোটা সময় আমি উপস্থিত ছিলাম এবং শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মানপত্রও পাঠ করেছি। যখন মেধাবীদের বাইসাইকেল গ্রহণের জন্য স্কুলের শিক্ষক আবদুল হামিদ মাইকে নাম ঘোষণা করেন; তখন আমার নামের জায়গায় প্রধান শিক্ষকের ছেলের নাম ঘোষণা করা হয়।’

ওই সামিয়া সোলতানা সোমা আরও বলেন, ‘সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ার পরেও আজ এতিম, অসহায় ও গরীব বলে আমাকে সম্মাননা স্মারক বাইসাইকেল নিতে দেয়নি। আর প্রধান শিক্ষক স্যার আমার পরের অবস্থানে উনার ছেলের অবস্থান হওয়া স্বত্বেও তথ্য গোপন করে তাকেই সর্বোচ্চ নম্বরধারী বলে সম্মাননা স্মারক নেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। আমার সঙ্গে চরম বৈষম্য করা হয়েছে।’

এদিকে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজের ছেলেকে বাইসাইকেল পাইয়ে দেওয়ার ঘটনাটি জানাজানি হলে বিষয়টি নিয়ে সর্বমহলে নানান সমালোচনার সৃষ্টি হয়। আবদুল গফুর নামের একজন জানান, শিক্ষকরা সর্বদা সম্মানের পাত্র। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি করা কোনভাবেই শিক্ষকদের কাজ নয়। একটি সামান্য সাইকেলের লোভ সামলাতে না পারা ব্যক্তি কিভাবে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক হন এবং ওই প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত। 

অভিযোগের বিষয়ে কুতুবজুম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদুল করিম সিভয়েসকে বলেন, ‘অনুষ্ঠানের দিন দশম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন না। তার পক্ষ হয়ে আমি পুরস্কারটি গ্রহণ করে স্কুলে রেখে দিয়েছি। শিক্ষার্থীকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলবেন, সাইকেল দিয়ে দিবো।’

ওই শিক্ষার্থী অনুষ্ঠানে থাকা স্বত্বেও আপনার ছেলে কিভাবে প্রধান অতিথির কাছ থেকে সাইকেল গ্রহণ করেছেন— সেই বিষয়ে জানতে চাইলে ওই প্রধান শিক্ষক এড়িয়ে যান।

এ ব্যাপারে কথা হলে মাধ্যমিক একাডেমিক সুপার ভাইজার ফজলুল করিম জানান, ঘটনাটি সম্পর্কে শুনেছেন এবং ওই বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। সত্যতা পাওয়া গেলে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বস্থ করেন।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়