আইনের আশ্রয় নেওয়ার সামর্থ্যও নেই নাছরিনের
মহেশখালী প্রতিনিধি

বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হতেন নাসরিন। পিটিয়ে আহত করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে পরে ফিরিয়ে এনে আবারও মারধর করত মহেশখালীর সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। যৌতুকের জন্য উপর্যুপরি পেটানোর পরও ক্ষান্ত হয়নি ওরা, এবার পরকীয়া করে পালিয়েছে লিখে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে স্ত্রী ও তার পরিবারকে অসম্মান ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করছেন বলে অভিযোগ করেছেন নির্যাতনের শিকার নারী।
‘শ্বশুরবাড়ির লোকেরা প্রায় সময় মারতো। তাদের নির্দয় মারধর ও আঘাতে গত বছর আমার মৃত বাচ্চার জন্ম হয়। আমার বাচ্চাকে মেরেও ক্লান্ত হয়নি তারা ৩ লাখ টাকা চায় আমার বাবর কাছে। সেটা এনে দিতে পারলাম না বলে অমানবিকভাবে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে আমাকে। দিনমজুর বাবার মেয়ে আমি এত টাকা কীভাবে দেব?’— সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে প্রতিবেদককে এসব কথা বলছিলেন মহেশখালীর গৃহবধূ নাছরিন আকতার।
ভিকটিম নারী অভিযোগে করে বলেন, ‘শ্বশুরবাড়ির লোকজন পরকীয়া করে পালিয়েছি বলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে।’ নাছরিনের বাবা নেছারুল হক বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই মেয়ের উপর নির্যাতন চালানো হত। সংসার টিকিয়ে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে আমার মেয়ে। কিন্তু তারা আমার মেয়েকে মারধর করে বের করে দিয়েছে। এখন পরকিয়া করে আমার মেয়ে পালিয়ে গেছে বলে ছবি দিয়ে ফেসবুকে লিখেছে।’
স্বামী সাইফুল ইসলাম, ভাসুর জাফর আলম ও শ্বাশুড়িসহ অন্যরা মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে অভিযোগ তুলে এই গৃহবধূ আরও বলেন — এখন আমি ৩ মাসের প্রেগন্যান্ট। আমার গর্ভের বাচ্চাকে মারতে চায় ওরা। এবার টাকা চাইলে আমি বাবার অর্থসংকটের কথা জানিয়ে যৌতুক আনতে পারবো না বলি। টানা তিনদিন আমাকে শারীরিক নির্যাতনের পর ২৪ আগস্ট সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে দেয়া হয়। আইনের আশ্রয় নেওয়ার সামর্থ্যও আমাদের নেই।
অভিযুক্ত স্বামী সাইফুল ইসলামসহ শ্বশুরবাড়ির কেউ সেই বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি। তাদের সাথে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয় নি।