দখল নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ
পেকুয়ায় ছুরিকাঘাতে শ্রমিকদল নেতা খুন
পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
কক্সবাজারের পেকুয়ায় ছুরিকাঘাতে শহিদুল ইসলাম শওকত (৪০) নামে এক শ্রমিকদল নেতা খুন হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে নিহতের ভাইসহ দুইজন। সোমবার (২৬ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে পেকুয়া বাজারের পশ্চিম পাশে ওয়াপদা অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শহিদুল ইসলাম শওকত ভোলাইয়াঘোনা এলাকার মৃত শফিউল আলমের ছেলে। তিনি থানা সদরের পশ্চিম জোন শ্রমিকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আহতরা হলেন— নিহতের ভাই শাকের (২৭) ও একই এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে তারেক (১৮)।
স্থানীয়রা জানায়, রবিবার (২৫ আগস্ট) রাতে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে শহিদুল ইসলাম শওকত এবং সাজ্জাদুল ইসলামের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে সেটা ধাক্কাধাক্কিতে রূপ নেয়। বিষয়টি উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও পেকুয়া সদর ইউপির চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহর কানে গেলে তিনি সোমবার সকাল ১০টার দিকে দুই পক্ষকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ডেকে মীমাংসা করে দেন এবং একই সঙ্গে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে দল থেকে বহিষ্কারের হুঁশিয়ারি দেন।
কিন্তু সোমবার রাত আটটার দিকে ভোলাইয়াঘোনা রাস্তার মাথায় সাজ্জাদুল ইসলামের এক চাচাতো ভাইকে শওকত ও তাঁর ভাই শাকের মারধর করে। খবর পেয়ে সাজ্জাদুল ইসলাম দলবদ্ধ হয়ে শওকত, শাকের ও তারেকের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনজন ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন।
এ সময় আশপাশের লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে শওকতের মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, পেকুয়া সদর পশ্চিম জোন শ্রমিকদলের দুটি পক্ষ রয়েছে। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন পশ্চিম জোন শ্রমিকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, অপর পক্ষটির নেতৃত্ব দেন সাবেক সহসভাপতি বদিউল আলম ও সাজ্জাদুল ইসলাম। দুপক্ষই পেকুয়া উপজেলা শ্রমিকদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ওসমান ও ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হারুনুর রশিদের অনুসারী। সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে শ্রমিকদলের দুই পক্ষই পেকুয়া সিএনজি, টেম্পু ও অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের লাইন দখল নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এর জের ধরে এ ঘটনা ঘটে।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, ‘খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কারা খুন করেছে, কি কারণে এবং কেন খুন করা হয়েছে তথ্য নিচ্ছি। মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’