Cvoice24.com

মংডুতে রাতভর গুলির শব্দ, আতঙ্কে সীমান্তবাসী

প্রতিনিধি, সিভয়েস২৪

প্রকাশিত: ১৭:২৩, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪
মংডুতে রাতভর গুলির শব্দ, আতঙ্কে সীমান্তবাসী

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য মংডুতে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর চলমান যুদ্ধে নির্ঘুম রাত কেটেছে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাত থেকে গোলার বিকট শব্দ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ভোর পর্যন্ত শোনা গেছে। এতে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পাশাপাশি আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তারা। 

জানা গেছে, দীর্ঘ চলমান যুদ্ধে মিয়ানমারের জান্তাবাহিনীর অধিকাংশ এলাকা দখলে নেয় বিদ্রোহী আরাকান আর্মি। এসব জায়গা পুনরুদ্ধারে কয়েকদিন ধরে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে দেশটির জান্তা সরকার। গোলার বিকট শব্দে এপারের সীমান্ত এলাকা টেকনাফ পৌরসভা, হ্নীলার জাদিমুড়া, দমদমিয়া, হোয়াইক্যংয়ের খারাংখালী, পৌরসভার নাইট্যংপাড়া, জালিয়াপাড়া, সদরের নাজিরপাড়া, সাবরাংসহ আশপাশের এলাকা কেপেঁ উঠছে। 

সীমান্তে বসবাসকারী বাসিন্দারা বলছেন, কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এবং সাবরাং এর পূর্বে নাফনদীর ওপারে রাখাইনে মংডু টাউনশিফের বিপরীতে মংডু শহরের অবস্থান। শুক্রবার রাত থেকে ওই সীমান্ত এলাকায় প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। 

টেকনাফ সীমান্তে বসবাসকারী আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘মিয়ানমারের গোলার কারণে নির্ঘুম রাত কেটেছে। সকাল পর্যন্ত বড় বড় গোলার বিকট শব্দে সারারাত জেগে ছিলাম। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা ভয়ে ছিল।

মো. আলম নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘রাতভর সীমান্তের গোলার বিকট শব্দে মানুষ ঘুমাতে পারেনি। একটু পরপরই গোলার বিকট শব্দ ভেসে আসছে এপারে। এমন গুলির শব্দ আগে কখনও শুনেনি। এ অবস্থায় ভয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ি। এ পরিস্থিতিতে যেকোনও মুহূর্তে সীমান্তে আবারও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে।’

ক্যাম্পে বসবাসকারী এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, ‘রাখাইনে কয়েকদিন ধরে ফের যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে। এ জন্য সে দেশে ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গারা স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে পালিয়ে আসার জন্য। কিন্তু তাদের এদেশে  আসতে নিরুসাহিত করছি। তবু মানুষ প্রাণের ভয়ে পালিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছে।’

সীমান্তের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, মিয়ানমারে এখনও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। বর্তমানে মংডুতে গোলাগুলি হচ্ছে, যেখানে অধিকাংশ রোহিঙ্গা নাগরিকের বসবাস। এভাবে যুদ্ধ চলতে থাকলে ফের নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে। 

তবে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর ইশতিয়াক মুরর্শেদ জানিয়েছেন সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তিনি জানান, টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার এবং সীমান্ত সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা দিনরাত টহল বৃদ্ধি করেছেন। একই সঙ্গে যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি ও কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছেন।

এ ব্যাপারে নবাগত টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘আমিও গোলার বিকট শব্দ শুনেছি। মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে এ ধরনের বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। আমরা সীমান্তে বসবাসকারী মানুষের খোঁজখবর রাখছি। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আমাদের বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা সর্তক অবস্থানে রয়েছে’।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়

: