Cvoice24.com

বীমার আওতায় আসছে দেড় লাখ পোশাক শ্রমিক

সিভয়েস ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:৪৩, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১
বীমার আওতায় আসছে দেড় লাখ পোশাক শ্রমিক

পোশাক শ্রমিকরা বছরে কোন না কোন সময় অসুস্থতায় ভোগেন। পরিশ্রম ও কাজের পরিবেশের ওপর তাদের অসুস্থতার ধরন নির্ভর করে। অন্যদিকে, মাত্রাতিরিক্ত সেবা মূল্যের কারণে তারা ঠিকমতো চিকিৎসা পায় না। এমনকি সরকারি হাসপাতালগুলোতেও তাদের চিকিৎসা নিতে নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। তাই বৃহৎ এই জনগোষ্ঠীর জন্য চালু করা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিমা। 

ইস্যুটি নিয়ে আইএলওর সঙ্গে সরকারের আলোচনা চলছে। শুরুতে এক লাখ ৫০ হাজার শ্রমিকের মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে বীমা সুবিধা চালু হবে। তিন থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি এই কার্যক্রম সফলভাবে শেষ হওয়ার পর সব পোশাক কারখানায় এটি চালু হবে।

পোশাক শ্রমিকদের জন্য বীমা চালুর লক্ষ্য হলো কেন্দ্রীয়ভাবে তহবিল সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দুর্ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যু বা আহত হওয়ার ক্ষেত্রে এই বীমা ব্যবস্থা থেকে তাঁদের কিংবা পরিবারের সদস্যদের সহায়তা করা।

সূত্র জানায়, এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্কিম (ইআইআই) নামে চালু হওয়া বীমায় প্রাথমিক অর্থায়ন আসবে ব্র্যান্ড ও বায়ারদের কাছ থেকে। পুরোদমে চালু হওয়ার পর এটির দায়িত্ব কারখানা মালিকদেরই নিতে হবে। তবে বীমা চালুর বিষয়টি মেনে নিলেও এর অর্থায়নের উৎস নিয়ে দ্বিমত রয়েছে কারখানা মালিকদের।

জানা গেছে, প্রতিবেশী ভারত ছাড়াও বাংলাদেশের প্রতিযোগী অনেক দেশেই কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নিহত কিংবা আহত হওয়া শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সুরক্ষায় এ ধরণের বীমা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। একেক দেশে একেক নামে থাকলেও এসব বীমার অর্থায়ন ও তদারকি কেন্দ্রীয়ভাবেই হয়ে থাকে। এর অর্থায়নও সাধারণত কারখানা মালিকপক্ষই করে থাকে। বাংলাদেশেও রানা প্লাজা ও তাজরীনের মতো দুর্ঘটনার পর এই ইস্যুটি সামনে আসে। তখন দেখা যায়, বেশির ভাগ শ্রমিকই বীমার আওতায় নেই। আবার বীমা দাবির টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রেও নানা রকম জটিলতা দেখা দেয়। বর্তমান বাস্তবতা ও আইএলওর মানদণ্ড অনুযায়ী, এই টাকা খুবই অপ্রতুল।

হিসাব করে দেখা গেছে, এই বীমা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হলে ব্যয় হবে রপ্তানির ০ দশমিক ০১৯ শতাংশ টাকা বা প্রতি ১০০ টাকায় প্রায় দুই পয়সা। দেশে বর্তমানে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা রপ্তানিমূল্যের ওপর ০ দশমিক ০৩ শতাংশ হারে সরকারের কেন্দ্রীয় তহবিলে টাকা দিচ্ছেন। এই টাকা থেকে নিহত শ্রমিকের পরিবারকে তিন লাখ টাকা করে দেওয়া হয়।

দেশের শ্রম আইন অনুযায়ী, কর্মক্ষেত্রে নিহত হওয়ার ক্ষেত্রে শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ দুই লাখ এবং কর্মহীন হওয়ার মতো আহত হলে আড়াই লাখ টাকা পায়।

শ্রমিক নেতা রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, শিল্প দুর্ঘটনার কারণে বাংলাদেশে এ ধরনের বীমা চালু করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অন্য দেশে সাধারণত মালিকপক্ষই এটির ব্যয় বহন করে। তবে আমাদের বাস্তবতায় কারখানা মালিকের পাশাপাশি সরকার ও বায়ারদেরও এগিয়ে আসা উচিত।

তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, ‘এটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা একটি ইস্যু। আমরা ধরে নিচ্ছি, বাংলাদেশ সরকার এই উদ্যোগকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানাতে যাচ্ছে। বীমা স্কিমের এই উদ্যোগে ব্র্যান্ড ও বায়ারদেরও অংশগ্রহণের অনুরোধ আমাদের। একই মনোভাব শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধিদেরও।’ 

শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম বলেন, ইস্যুটি নিয়ে আইএলওর সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে এখানে কার অংশগ্রহণ কেমন হবে, তা আলোচনায় আসা দরকার। মালিকপক্ষের সঙ্গেও বসতে হবে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়