Cvoice24.com

চট্টগ্রামে ২৪৬ কারাখানার মধ্যে বেতন-বোনাস হয়েছে ২২৩ টিতে

সিভয়েস, ঢাকা

প্রকাশিত: ১৭:৩৪, ১২ মে ২০২১
চট্টগ্রামে ২৪৬ কারাখানার মধ্যে বেতন-বোনাস হয়েছে ২২৩ টিতে

ফাইল ছবি।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্ততকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সদস্যভূক্ত ৯৮ ভাগ কারখানায় বেতন আর ৯৯ ভাগ কারখানায় বোনাস হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। করোনাকালে চট্টগ্রামে ২৪৬টি চালু রয়েছে। তারমধ্যে বেতনের পাশাপাশি বোনসা দিয়েছে চট্টগ্রামে ২২৩টি কারখানা।  

বুধবার (১২ মে) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এদাবি করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।

তিনি বলেন, বিজিএমইএ’র সদস্যভুক্ত চালু কারখানা এক হাজার ৯১৩টি। এর মধ্যে ঢাকা অঞ্চলে এক হাজার ৬৬৭টি ও চট্টগ্রামে ২৪৬টি। মঙ্গলবার (১১ মে) পর্যন্ত এক হাজার ৮৬৬টি কারখানা বেতন দিয়েছে, যা শতকরা হিসাবে ৯৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আর ঈদের বোনাস দিয়েছে এক হাজার ৮৮২টি কারখানা। এর মধ্যে ঢাকায় এক হাজার ৬৬৯টি  ও চট্টগ্রামে ২২৩টি কারখানা বোনাস পরিশোধ করেছে, যা শতকরা ৯৯ শতাংশ।

অন্যদিকে, ঢাকায় বুধবার ১৫টি কারখানা এবং চট্টগ্রামে ৮টি কারখানা এপ্রিল মাসের বেতন পরিশোধ করেছে। এছাড়া চট্টগ্রামে ৩২টি কারখানা বেতন এবং ২৩টি কারখানা বোনাস পরিশোধ করবে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি।

এর আগে, গত ২৯ এপ্রিল শ্রম মন্ত্রণালয় পোশাক কারখানার মালিকদের ১০ মে’র মধ্যে বেতন-বোনাস দেওয়ার দেওয়ার নির্দেশনা দেয়। সরকার নির্ধারিত সময় ছিল ১০ মে রাত পর্যন্ত। তবে সব কারখানা সে নির্দেশনা মানেনি। বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে মঙ্গলবারও (১১ মে) রাজধানীর কমলাপুরের রাস্তায় বিক্ষোভ করছে বিন্নী গার্মেন্টস নামের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এর আগে কয়েকটি স্থানে বেতন-বোনাস ও ঈদের ছুটি বাড়ানোর দাবিতেও বিক্ষোভ করেছে পোশাক শ্রমিকরা।

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, সমগ্র পৃথিবী এখন করোনা অতিমারির এক চরম ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রম করছে, যার প্রভাব থেকে আমরাও রেহাই পাইনি। গত অর্থবছরে রপ্তানী নজিরবিহীনভাবে ১৮ ভাগ কমে যাওয়ার পর চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে রপ্তানী আরও ৭৮.৭২ ভাগ কমেছে। বিশেষ করে ওভেন খাতে রপ্তানী সংকট চরমে পৌঁছেছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সমযে ওভেন  পোশাক রপ্তানী কমেছে ১৬.৬৪ ভাগ। শুধুমাত্র মার্চ মাসেই কমেছে ২৪.৭০ ভাগ। আর এপ্রিলে কমেছে ৬.৩৭ ভাগ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিজ্ঞ নেতৃত্ব ও দিক নির্দেশনার ফলে আমরা একটি সমূহ বিপর্যয় এড়াতে সক্ষম হয়েছি, আর শত প্রতিকূলতা ও ঝুঁকির মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিল্পের চাকা সচল রাখতে পেরেছি। ফলে অর্থনীতিতেও বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে।’

‘তবে করোনার আঘাতে শিল্পে যে ক্ষতি ও ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে, তা মোকাবেলা করে কারখানাগুলো বর্তমানে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছে। ২০২০ সালের এপ্রিলের শেষ নাগাদ আমাদের
১১৫০টি সদস্য প্রতিষ্ঠান ৩.১৮ বিলিয়ন ডলারের কার্যাদেশ বাতিল ও স্থগিতের শিকার হয়েছিল। পরবর্তীতে ৯০ ভাগ বাতিল প্রত্যাহার হলেও মূল্যছাড় ও ডেফার্ড পেমেন্ট মেনে নিতে হয়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এর পূর্ব থেকেই পোশাকের দরপতন শুরু হতে থাকে, যা করোনার পরে তীব্র আকার ধারন করে। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে আমাদের  পোশাকের দরপতন ৪.৫%-৫% হারে
অব্যাহত আছে।’

তিনি আর বলেন, ‘তৈরি পোশাক শিল্পের আন্তর্জাতিক অনেক ক্রেতা ও ব্রান্ড ক্রয়াদেশ এর বিপরীতে মূল্য পরিশোধ করেনি, অনেকে আবার দেউলিয়া হয়ে গেছে। ফলে অনেক কারখানা আর্থিকভাবে
চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অনেকে তাদের জাহাজীকৃত পণ্য অথবা স্টকের মূল্য পায়নি, কিন্তু বাধ্য হয়ে কাঁচামাল বাবদ খোলা ব্যাক টু ব্যাক এলসি এর দায় মিটাতে ফোর্স লোন এর শিকার হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা পরিচালনা করতে গিয়ে একদিকে যেমন খরচ বেড়েছে,অপরদিকে আমরা কারখানার ক্যাপাসিটি পরিমিত ব্যবহার করতে পারছি না। ক্রেতাদের  সোর্সিং পেটার্ন এ পরিবর্তন এসেছে, তারা কম পরিমানে এবং এসএলটিতে অর্ডার দিচ্ছেন। সেই সাথে তুলা ও সুতার মূল্য আন্তর্জাতিকভাবে বেড়েছে, কনটেইনার ফ্রেইট কস্ট বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র কারখানা চালু রাখার জন্য ও বাজার ধরে রাখতে আমাদের কারখানাগুলো ব্রেক ইভেনের চেয়ে কম মূল্যে অর্ডার নিচ্ছে।  এবং চরম আর্থিক ও ক্যাশ ফলো সংকটের মধ্যে ব্যবসা পরিচালনা করছে।’ 

কোভিড-১৯ মহামারির ফলে সৃষ্ট সংকট থেকে শিল্প যখন ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করছিল ঠিক তখনই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানতে শুরু করে। তবে অত্যন্ত কঠোর নজরদারীর মাধ্যমে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে এখন পর্যন্ত সফলভাবে উৎপাদন কাজ পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছি। তবে উদ্বেগ এখনও কাটেনি। সরকার চলমান লকডাউন আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে। পাশাপাশি আসন্ন উদুল ফিতর উপলক্ষ্যে সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তিন দিনের ছুটি ও কর্মস্থলে অবস্থান করার সরকার নির্দেশনা জারি করেছে। 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়