Cvoice24.com

চট্টগ্রাম বন্দরে কমছে কনটেইনার জট

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৫৪, ২৪ জুলাই ২০২১
চট্টগ্রাম বন্দরে কমছে কনটেইনার জট

মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ইউরোপ ও আমেরিকাতে পণ্য পরিবহনে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। ফলে কনটেইনার জট তৈরি হয় সিঙ্গাপুর ও কলম্বো বন্দরে। যার প্রভাব পড়ে চট্টগ্রাম বন্দরেও। গত এক মাস ধরে রপ্তানি কনটেইনার ও খালি কনটেইনারের পরিমাণ বাড়তে থাকে বন্দরে। এসমস্যা সমাধানে দু’সপ্তাহ আগে চট্টগ্রাম-কলম্বো রুটে ফিডার ভেসেল বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। যার সুফল ইতোমধ্যে পেতে শুরু করেছে বন্দর, কমছে রপ্তানি পণ্য ভর্তি কনটেইনার। 

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা যায়, গত এক মাস আগে রপ্তানি কন্টেইনারের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫ হাজারের বেশি টিইইউএস কনটেইনার। রপ্তানি পণ্য ভর্তি কনটেইনার ও খালি কনটেইনার সংখ্যা কমাতে গত ১২ জুলাই জরুরি বৈঠকে বসে বন্দর কর্তৃপক্ষ। 

সে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে ২৫টি জাহাজে করে ১৯ হাজার রপ্তানি কনটেইনার পরিবহণ করা হয়। তারপর গত ১৬ জুলাই বন্দরের কনটেইনার ডিপোতে রপ্তানি পণ্যভর্তি কনটেইনার ছিল ১৫ হাজার ৫৫৬ টিইইউএস কনটেইনার। গত ২০ জুলাই কোরবানির ঈদের ছুটি থাকায় রপ্তানি পণ্যভর্তি কনটেইনারের সংখ্যা বেড়ে ১৭ হাজারে পৌঁছায়। গত ২১ জুলাই ঈদের দিন কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও ২২ জুলাই রপ্তানি কনটেইনারের সংখ্যা এসে দাঁড়ায় ১৬ হাজার টিইইউএস ও গতকাল শুক্রবার ওই সংখ্যা আরো ২ হাজার কমে ১৪ হাজার টিইইউএস কনটেইনারে নেমে আসে। 

সার্বিক চিত্র দেখে বলা যায়, বন্দরে রপ্তানি পণ্যভর্তি কনটেইনারের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। আগামী সপ্তাহখানেকের মধ্যে কনটেইনারের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে আসবে বলে আশা বন্দর কর্তৃপক্ষের।

এদিকে চলতি মাসের শুরুতে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় ৪০ হাজার টিইইউএস খালি কন্টেইনার ছিল। এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৯ হাজার খালি কন্টেইনার পরিবহন করা হয়েছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় সাড়ে ৩০ হাজার টিইইউএস খালি কন্টেইনার রয়েছে। চট্টগ্রাম-কলম্বো রুটে ফিডার ভেসেল বৃদ্ধি করার কারণে কনটেইনারের সংখ্যা কমছে বলে দাবি করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বন্দরের হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত ১৬ জুলাই সকালে মানাতি, এইচ আর রিহা ও সান আলফানসো নামের তিনটি জাহাজ রপ্তানি পণ্যভর্তি কনটেইনার নিয়ে কলম্বোর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। তারপর দিন অর্থাৎ ১৭ জুলাই সকালে পণ্যভর্তি কনটেইনার নিয়ে কলম্বোর উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে যায় ইস্টাওয়ে যমুনা ও ইএল কলম্বো নামের দুটি জাহাজ। সবশেষ গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে এসে ভিড়েছে এমসিসি টকিও নামের বিশেষ জাহাজ। এ জাহাজটি ১৮শ’ কনটেইনার ধারণ করতে সক্ষম। আগামীকাল ২৫ জুলাই জাহাজটি কলম্বোর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিবহণ শাখা।

এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরে কমেছে পণ্য খালাসের গতি। চট্টগ্রাম বন্দরে স্বাভাবিক সময়ে ছয় থেকে সাড়ে সাত হাজার টিইইউএস কনটেইনার খালাস করা হয়। অথচ ঈদের দিন থেকে বন্দরে পণ্য খালাসে নেমে আসে ধীরগতি। ঈদের দিন দেড় হাজারের বেশি টিইইউএস কনটেইনার, ঈদের পরদিন বৃহস্পতিবার মাত্র ১২৮ টিইইউএস কনটেইনার ও গতকাল শুক্রবার ৫শ’ টিইইউএস কনটেইনার খালাস করা হয়েছে। তবে ঈদের পর সপ্তাহখানেক পণ্য খালাস কিছুটা কম হয়। আগামী ক’দিনের মধ্যে পণ্য খালাসের গতি আগের অবস্থায় ফিরে যাবে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। 

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক সিভয়েসকে বলেন, বন্দরে রপ্তানি কন্টেইনার নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছিল তা সমাধানে কলম্বোগামী ফিডার ভেসেলগুলোকে অগ্রাধিকারভাবে বার্থিং দেওয়া হচ্ছে। চট্টগ্রাম-কলম্বো রুটে নতুন করে ছয়টি জাহাজের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ফলে কলম্বোগামী আটকে পড়া কনটেইনারের সংখ্যা কমছে। পাশাপাশি করোনা ও লকডাউনের মধ্যেও চব্বিশ ঘন্টা সচল রয়েছে বন্দর। বন্দরে কনটেইনার জট কমাতে বন্দর ব্যবহারকারীরা সর্বাত্মক সহযোহিতা করবেন আশা করছি।

সিভয়েস/টিএম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়