Cvoice24.com

লকডাউনে কারখানা খুলতে সায় দিচ্ছে না সরকার 

সিভয়েস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:২১, ২৭ জুলাই ২০২১
লকডাউনে কারখানা খুলতে সায় দিচ্ছে না সরকার 

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশব্যাপী চলছে ২৩ জুলাই থেকে সর্বাত্মক লকডাউন। যা চলবে ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত। লকডাউনে সব সরকারি, বেসরকারি অফিস, শিল্প কারখানা, পোশাক শিল্পসহ সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। এরই মধ্যে পোশাক মালিকরা সীমিত জনবল নিয়ে কারখানা খোলা রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই ধরে নিয়েছেন হয়তো দুয়েক দিনের মধ্যে কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তবে বিষয়টিকে নাকচ করে দিয়ে মঙ্গলবার সকালে জনপ্রশাসন মন্ত্রী বলেছেন, ‘এ মাসে সম্ভাবনা খুবই কম। সবাইকে আমরা নিয়ন্ত্রণে আনতে চাচ্ছি। দুই সপ্তাহ পরে গার্মেন্টস খুলে দেব। রপ্তানিমুখী সবগুলো শিল্প কারখানা খুলে দেব। আগামী ১ আগস্ট থেকে খোলা হবে কি না তা পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত হবে।’

যদিও পোশাক কারখানার মালিকরা বলছেন, গত বছরের শুরু থেকে চলা মহামারীর কারণে বৈশ্বিক চাহিদা কমায় ক্রয় আদেশের দীর্ঘদিনের খরা কাটিয়ে কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছিল দেশের রপ্তানিমুখী প্রধান খাত। সংক্রমণ পরিস্থিতি যদি আরও খারাপ হয় এবং ৫ অগাস্টের পরও কারখানা বন্ধ রাখতে হয়, তাহলে তারা বড় ক্ষতির মুখে পড়বেন। সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে তৈরি পোশাক কারখানার কর্মীদের গণটিকাদানের পাশাপাশি শেষ পর্যায়ে থাকা ক্রয় আদেশের কাজগুলো সারতে সীমিত সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে কারখানা খোলার প্রস্তাব রেখেছেন মালিকরা।

টানা এই ১৪ দিনের লকডাউনে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে মানুষের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। অপ্রয়োজনে বাইরে বের হলেই করা হচ্ছে জেল জরিমানা। এমতাবস্থায় জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। আগামী ৫ আগস্টের পর লকডাউন তুলে নেওয়া হবে কিনা? এমন এক প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘ধীরে ধীরে সব খোলা হবে। একবারে না। ধাপে ধাপে সব খোলা হবে। এক সঙ্গে সব খোলা হবে না। আমাদের সবারই সবার জায়গা থেকে চেষ্টা করা উচিত। আমরা তো এভাবে বাঁচতে পারব না। আমাদের মাস্ক পরতে হবে, কাজও করতে হবে। আমাদের টিকার সংকট কেটে গেছে। এখন সবাইকে টিকার আওতায় আনা হবে। অর্ধেক জনবল নিয়ে প্রথম দিকে অফিস খোলা হবে।’

মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, লকডাউনের বিষয়ে অনেকের অনীহা আছে। কিন্তু অনীহা হলে চলবে না। আগে জীবন বাঁচবে তারপর অর্থনীতি। আগে আপনি বেঁচে থাকুন, তার পর আপনার অর্থনীতি। অর্থনীতি দিয়ে কি করবেন? অর্থনীতিকে বাঁচাতে হলে জীবন বাঁচাতে হবে। জীবন বাঁচাতে হলে আপনাদের লকডাউন মানতে হবে এবং ভ্যাকসিন নিতে হবে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে, মাস্ক সবাইকে পরতে হবে। কিন্তু আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি লকডাউন আজ চারদিন চলছে, কিন্তু রাস্তাঘাটে যেভাবে মানুষ চলাচল করছে, গাড়ি বের হচ্ছে, আমরা তাতে খুবই দুঃখিত। তারা লকডাউন ব্রেক করছে। তারা নিজেরা নিজেদের ক্ষতি করছেন।

মন্ত্রী বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে লকডাউনের বিকল্প কিছু নাই। লকডাউন মানাতে হবে। লকডাউন বাস্তবায়নে যারা দায়িত্বে আছেন তাদের আরো কঠোর হতে হবে। জনগণকে একটু সচেতন হতে হবে। বয়স্করা যেন ভ্যাকসিন নেন, টেস্ট করান এটা নিশ্চিত করতে হবে। যেখানে সংক্রমিত হচ্ছে সেখানে যেন বয়স্করা না যায়। সংক্রমণ না কমলে রোগী কমবে না, রোগী না কমলে মৃত্যু কমবে না এবং হাসপাতালে জায়গা হবে না এটিই বাস্তবতা।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, আগামী সপ্তাহে আবারও পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সীমান্ত এলাকাগুলোতে সংক্রমণ বৃদ্ধির মুখে গত এপ্রিল মাসে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন জায়গায় লকডাউন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে ১ জুলাই থেকে দুই সপ্তাহের জন্য ঢাকাসহ সারাদেশকে বিধিনিষেধের আওতায় নেওয়া হয়েছিল। ঈদের সময় সাতদিন বাদ দিয়ে আবার ২৩শে জুলাই থেকে দুই সপ্তাহের লকডাউন বা 'কঠোর বিধিনিষেধ' এখন চলছে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়