Cvoice24.com

বিদেশযাত্রায় চট্টগ্রামের নারীদের আগ্রহ তিন দেশে

তারেক মাহমুদ

প্রকাশিত: ২১:৩১, ৬ জানুয়ারি ২০২২
বিদেশযাত্রায় চট্টগ্রামের নারীদের আগ্রহ তিন দেশে

চট্টগ্রামে বেড়েছে নারীদের বিদেশযাত্রা

এক সময়ে বিদেশযাত্রা তো দূরের কথা দেশের ভেতরে চাকরি করতে নানা ধরনের বাধা বিপত্তিতে পড়তে হতো নারীদের। কালের বিবর্তনে পরিবারের বাধা ও রক্ষণশীলতার বৃত্ত ভেঙে চট্টগ্রাম থেকে বিদেশ যাওয়া নারী শ্রমিকের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। শুরুতে চট্টগ্রামের নারীরা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরবকে বেছে নিলেও এখন তাদের পছন্দের তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে জর্দান ও ওমান। 

জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে ৫৩ হাজার নারী শ্রমিক নারী সৌদি আরবে যান। তার আগের বছর প্রায়  ১২ হাজার ৭৩৫ জন।  অন্যদিকে ২১ সালে ওমানে পাড়ি জমিয়েছেন ১০ হাজার ৩৫ জন নারী। তারও আগে ৩ হাজার ৩৫৮ জন। এছাড়া ২০২১ সালে জর্ডানে যান ১৩ হাজার ৬৪৩ জন। যেখানে আগের বছর এ সংখ্যা ছিল মাত্র ৩ হাজার ৬৬১। সবমিলিয়ে গত বছর এ তিন দেশে গড়ে তিন থেকে চারগুণ বেশি নারী পাড়ি জমিয়েছেন।

জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৭৭৭ জন, কুয়েতে ৩৫, কাতারে ১ হাজার ৯৯৭, লেবাননে ১৪৭, মালয়েশিয়া ৩, সিঙ্গাপুর ২৫, দক্ষিণ কোরিয়া ৩, যুক্তরাজ্যে ৮, ইতালিতে ৭, হংকংয়ে ২৪, সাইপ্রাসে ১৪, মরিশাসে ৮ ও বিশ্বের অন্যান্য দেশে ৩৩৫ জন নারী জীবিকার তাগিদে প্রবাসে পাড়ি জমান। 

সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক ইয়াছিন চৌধুরী সিভয়েসকে বলেন, কর্মসংস্থানের জন্য আরব আমিরাতে নারীদের আনাগোনা তেমন নেই বললেই চলে। নারীরা বেশিরভাগই কাজের জন্য সৌদিআরব যান। সেখানে তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গৃহপরিচারিকার কাজ পান। তবে নারীদের অসচেতনতার কারণে দালালের খপ্পড়ে পড়ে অনেক নারী শ্রমিক প্রতারিত হচ্ছেন। তাদেরকে এক রকম কাজের কথা বলে অন্য কাজ দেয়া হয়। এতে অনেক নারী বিভ্রান্তিতে পড়েন। অনেকে বেশি সময় ধরে টিকে থাকতে পারেন না। তাই নারীদের উদ্দেশ্যে বলবো সচেতন থাকলে ও বৈধ এজেন্সির মাধ্যমে প্রবাসে আসলে প্রতারণা হবার সম্ভাবনা থাকবে না। 

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির সচিব (অর্থ) ড. আবদুল জলিল সিভয়েসকে বলেন, করোনার কারণে ২০২০ সালে নারীদের বিদেশগমনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। কিন্তু পুরুষের পাশাপাশি দিন দিন কাজের জন্য নারীদেরও প্রবাসে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। তবে অসচেতনতার কারণে ভুয়া এজেন্সির খপ্পড়ে পড়ে প্রতারিত হচ্ছেন অনেকেই। তাই নারীদের উদ্দেশ্যে বলব, বায়রার নিবন্ধিত এজেন্সীর মাধ্যমে প্রবাসে গেলে প্রতারণার শিকার হবার কোন সম্ভাবনাই নেই। যেসব নারী বায়রার মাধ্যমে গিয়েছেন তারা ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা উপার্জন করতে পারছেন। পাশাপাশি সরকারের সাথে মালয়েশিয়ার জি টু জি চুক্তি হয়েছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে সেখানেও কাজের জন্য নারীরা যেতে পারবেন। জর্দানে প্রচুর পোশাককর্মী নেওয়া হয়েছে। এই দেশে বাংলাদেশি ৫১ হাজার টাকায় নারী শ্রমিক নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই শত শত নারী প্রবাসে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ভিড় জমাচ্ছেন। নারীদের বিদেশযাত্রার যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে সামনে তা আরও বাড়বে বলে আমরা মনে করি।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়