Cvoice24.com

অজুহাতে অস্থির আট ভোগ্যপণ্যের বাজার, আরো দাম বাড়ার ইঙ্গিত ব্যবসায়ীদের

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:১৮, ১৩ মে ২০২২
অজুহাতে অস্থির আট ভোগ্যপণ্যের বাজার, আরো দাম বাড়ার ইঙ্গিত ব্যবসায়ীদের

ছবি-সংগৃহীত

নানা অজুহাতে দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে ভোজ্যতেলের দাম। সম্প্রতি সরকারের আমদানি অনুমতি বন্ধ রাখার অজুহাতে কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। সে সঙ্গে বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে মসুর ডাল, চিনি, আটা, ময়দা, ডিম ও গুঁড়া দুধের দাম। ডলারের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে পণ্যগুলোতে ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়ানো হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, পণ্যগুলোর দাম আরো বাড়তে পারে-- এমন আশ্বাসও দিয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী।

তেল, ডাল, ডিম, আটা, ময়দাসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন নিম ও মধ্য আয়ের মানুষ। অনেকে করোনাকালে কাজ হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ঋণ করে দিন পার করছেন। কেউবা খেয়ে-না খেয়ে কোনো রকমে দিন পার করছেন। ভোগ্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে সরকারের কাছে জোরালো দাবি জানিয়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (১৩ মে) নগরের কাজীর দেউড়ি ও রিয়াজুদ্দীন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন ১০ টাকা বেড়ে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মসুর ডালে ৫ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক'দিন আগে ৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া চিনি এখন ৮২ টাকায়, ৩৮ টাকায় বিক্রি হওয়া খোলা আটা ৪০ থেকে ৪২ টাকা, খোলা ময়দার কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে বিভিন্ন কোম্পানির গুঁড়োদুধ এখন ৬শ’ ৮০ থেকে সাড়ে ৭শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

তাছাড়া গত সপ্তাহে ১০৫ টাকায় বিক্রি হওয়া ফার্মের মুরগির ডিম ডজন আজ ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

রিয়াজুদ্দীন বাজারে বেসরকারি কর্মকর্তা আরফান উদ্দিন সিভয়েসকে বলেন, জনমন থেকে স্বস্তি উধাও হয়ে গেছে। একটা পণ্যের দাম কমলে আরেকটা বাড়ে। আজ এক কেজি করে তেল, পেঁয়াজ, আটা, ডিম কিনতে গিয়ে গত সপ্তাহের তুলনায় ১শ টাকার বেশি খরচ হয়েছে।

কাজীর দেউড়ি বাজারের ব্যবসায়ী আবু সেকান্দর সিভয়েসকে বলেন, মোকামে কেজিপ্রতি পেঁয়াজে ৬ থেকে ৭ টাকা বাড়ছে। তেল, চিনি, ডাল জাতীয় পণ্যগুলো আমাদেরকেও কিনে এনে বেচতে হয়। মূলত ডলার, জাহাজ ভাড়া বাড়ার কারণে আমদানি খরচ বেড়েছে তাই পণ্যের দামও বেড়ে গেছে। 

কনজ্যুমার এসোশিয়েশন অব বাংলাদেশ চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন সিভয়েসকে বলেন, অতি মুনাফার নেশায় ব্যবসায়ীরা অন্ধ হয়ে গেছেন। তার প্রমাণ তো আমরা ভোজ্যতেলে দেখেছি। তেল মজুদ করে মানুষকে কষ্ট দিচ্ছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। কেন ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ছে, কারা সিন্ডিকেট করছে এসব খতিয়ে দেখে সরকারকেই একটা ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি অপরাধীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

যদিও ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি অনুমতি না পাওয়ায় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে পেঁয়াজ আনা বন্ধ রয়েছে। এ কারণে সরবরাহ সংকটে পণ্যটির দাম বেড়ে গেছে। পাশাপাশি ডলারের দাম, বৃদ্ধি, আমদানি খরচ বাড়ার কারণে আমদানি করা ডাল, চিনিসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বেড়েছে। 

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আনিছুর রহমান সিভয়েসকে বলেন, আমরা তো ভোগ্যপণ্যের বাজারদর নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছি। আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। আমরা অভিযান শেষে চলে আসার পর অনেকে আগের মতোই বাড়তি দরে পণ্য বিক্রি করতে চায়। তাই ভোক্তাদের বলব, আপনারা প্রতারিত হলে বা বাড়তি টাকা আদায় করলে আমাদের কাছে অভিযোগ জানান। আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নিব।

এদিকে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজি। বাজারে প্রতিকেজি বেগুন ৮০, টমেটো ৬০, করলা ৮০ টাকা, গাজর ৯০ থেকে ১শ’ টাকা, চাল কুমড়া ৫০, লাউ ৬০, মিষ্টি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা-পটল ৬০, ঢেঁড়স ৫০, কচুর লতি ৮০, পেঁপে ৪০, বরবটি ৬০, ধুন্দুল ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে গরুর মাংস প্রতিকেজি ৬৮০ থেকে ৭শ’ টাকা ও খাসির মাংস ৯শ’ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজিতে।

তাছাড়া আমদানি করা রসুন প্রতিকেজি ১শ’ থেকে ১২০ ও দেশি রসুন ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দেশি আদা ৮০ ও চায়না আদা ৮০ থেকে ১শ’ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়