Cvoice24.com

রাজস্ব দেয়নি বাংলাদেশ পুলিশসহ ৭ প্রতিষ্ঠান, লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ কাস্টমস

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৩৫, ৩০ জুন ২০২২
রাজস্ব দেয়নি বাংলাদেশ পুলিশসহ ৭ প্রতিষ্ঠান, লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ কাস্টমস

২০২১-২২ অর্থবছরের শেষ দিন আজ বৃহস্পতিবার। তবে এখনো বাংলাদেশ পুলিশসহ ৭ প্রতিষ্ঠানের মোট ৩ হাজার ৮৮৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার রাজস্ব বকেয়া থাকায় এই এক বছরে ৫৯ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। অথচ প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৪ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। ৪ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা ঘাটতি থাকায় চলতি অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। 

চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, রাজস্ব আয়ে এককভাবে শীর্ষে থাকা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট রাজস্ব আয় হয়েছিল ৪১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আয় ৫১ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। যা ২০১৯-২০ অর্থবছর তুলনায় ৯ হাজার ৭১১ কোটি টাকা বেশি। তবে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬৫ হাজার ৭৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও আদায় হয়েছে মাত্র ৫৯ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এখনো পিছিয়ে আছে কাস্টমস। 

সূত্র জানায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে সাত প্রতিষ্ঠান রাজস্ব বকেয়া রেখেছে। এরমধ্যে পেট্রোবাংলার ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি ২৮ লাখ, পদ্মা ওয়েল কোম্পানির ১১৬ কোটি ৭৩ লাখ, মেঘনা পেট্রোলিয়মের ২৮ কোটি ৪০ লাখ, স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক ওয়েলের ৫৭ লাখ, সামিট এলএনজির ৫ কোটি ১১ লাখ, এক্সিলারেট এনার্জির ১৩ লাখ ও বাংলাদেশ পুলিশের ৩৪ কোটি ২১ লাখ টাকাসহ মোট ৩ হাজার ৮৮৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার রাজস্ব বকেয়া রয়েছে।  

দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর ভিত্তিক সিংহভাগ রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। চট্টগ্রাম বন্দরের মাধমে দেশের নৌ-বাণিজ্যের প্রায় ৯৮ শতাংশ কন্টেইনার এবং ৯২ শতাংশ পণ্য হ্যান্ডলিং হয়। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এখনো পর্যন্ত পিছিয়ে থাকলেও চলতি অর্থবছরে পণ্য আমদানিতে অনিয়ম বন্ধ, চোরাচালান রোধ, শুল্ক ফাঁকিতে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কিছু সফলতা দেখিয়েছে কাস্টমস।

জানা গেছে, রাজস্ব দেওয়ায় চট্টগ্রাম কাস্টমসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে দুই হাজার ৬০০ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট। আমদানিকারকের পক্ষে পণ্য ছাড়, শুল্ক দেওয়াসহ যাবতীয় কাজ করে এই সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা।

তবে কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কাস্টমসের একার সিদ্ধান্ত নয়। কারণ প্রতিবছর বাজেটে শুল্কহারে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়। ফলে রাজস্ব আয় কমে যাওয়াটা স্বাভাবিক। এ ছাড়া উচ্চ শুল্কের যে পণ্য আগে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আসত, এখন সেটি আসছে না। পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে জ্বালানি তেল, গাড়ি এবং ইলেকট্রনিক পণ্যের আমদানি কম। তাই এসব খাত থেকে রাজস্ব আয় কমেছে। আবার দেশে বিপুল ভোগ্যপণ্য আমদানি হলেও সেই পণ্যে শুল্কহার অত্যন্ত কম। তাই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যাঘাত ঘটে। 

চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার ফখরুল আলম সিভয়েসকে বলেন, চলতি অর্থবছর ৬৪ হাজার ৭৫ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও আমরা তা অর্জন করতে পারিনি। তবে বিগত অর্থবছরের তুলনায় বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫১ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা এবং এই অর্থবছরে আদায় হয়েছে ৫৯ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। যেসব প্রতিষ্ঠানগুলো রাজস্ব বকেয়া রাখে তাদের আরো বেশি দায়িত্বশীল হবার প্রয়োজন। কাল থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হতে যাচ্ছে। আশা করছি নতুন বছরে আমরা আন্তরিকতার সাথে কাজ করে লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারব।

সিভয়েস/টিএম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়