Cvoice24.com

বিবিরহাটে কোরবানি পশু বিক্রি করে স্বাবলম্বী চাঁপাইনবাবগঞ্জের সালমা

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:০২, ৬ জুলাই ২০২২
বিবিরহাটে কোরবানি পশু বিক্রি করে স্বাবলম্বী চাঁপাইনবাবগঞ্জের সালমা

খামারি পেশায় জড়ানো সালমা খাতুন।

পশু পালন অনেকের নেশা তো আবার অনেকের পেশা। অনেকে পশু লালন-পালন করে কোরবানে নিজেদের পালিত পশু বিক্রি করে সংসার চালান আবার অনেক পশু পালনের মায়ায় পড়ে গড়ে তুলেন নিজস্ব খামার। প্রতিবছরই ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে পশু লালন-পালন ও বেচাকেনায় যুক্ত হয়েছেন অনেক ভিন্ন পেশার মানুষ। তবে এবার চট্টগ্রাম নগরের বিবিরহাট পশুর বাজারে গিয়ে দেখে মিলেছে এক নারী বেপারির সাথে। অবাক করা হলেও নির্মম সত্য এই যে পরিবারের দায়িত্ব তুলে নিতেই নিজেকে জড়িয়েছেন খামারি পেশায়। 

নারী বেপারি সালমা বেগমের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে। সালমা খাতুন শিক্ষাজীবনে মাস্টার্স শেষ করে অন্য নারীদের মতো বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন। তবে সেই সংসারের ইতি ঘটে মাত্র ১ বছরেই। স্বামীর নির্যাতন/অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে ছোট্ট শিশু কন্যাকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে আসতে বাধ্য হন। এরপর যোগ দেন চাকরিতে। কিন্তু করোনা সেই চাকরিও কেড়ে নেয়। পরে মন বসান গরু পালনে। প্রথমে ১টি গাভী দিয়ে শুরু হয় তার পশু লালনপালন। পরে ধীরে ধীরে তা পরিণত করেন খামারে। সেই একটি গাভী দিয়েই শুরু হয় সালমা খাতুনের 'মরিয়ম এগ্রো'র যাত্রা।

সালমা খাতুন বলেন, স্বামীর বাড়ি ছেড়ে আসার পর মেয়েক নিয়ে অনেক চিন্তায় ছিলাম। পরে একটি চাকরিতে যোগদান করেছিলাম। করোনার কারণে সেই চাকরিটাও চলে যায়৷ অনেকদিন বেকারত্ব নিয়েই দিন কাটিয়েছি। পরে গরু পালনের ইচ্ছা জন্মায়। তখন ১টি গাভী কিনি। সেই একটি গাভী থেকেই এখন আলহামদুলিল্লাহ একটি খামারও আছে। যার নাম রেখেছি 'মরিয়ম এগ্রো'। খামারে এখন ২১ টি গরু আছে। যা বিক্রির জন্য এখানে (চট্টগ্রাম) নিয়ে এসেছি।

চাকরি চলে গিয়ে খামারে যুক্ত হয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন উল্লেখ করে সালমা বলেন, চাকরি করলে হয়তো নির্দিষ্ট কোনো স্কেলে বেতন পেতাম। কিন্তু এখন সেটা নিজের ওপর ডিপেন্ড করছে। আমি যত গরু খামারে যুক্ত করতে পারবো, ততই আমার ইনকাম বাড়ছে। ধরেন, আমি যদি ২০টি গরু লালনপালন করি তাহলে সেই গরুগুলো থেকে ২০টি বাছুর হবে। আর সেই ২০টি বাছুরের দাম ১ লাখ টাকা করে ধরলেও ২০ লাখ টাকা হবে।   ১ বছরে খামার থেকে যে অর্থ উপার্জন করতে পারবো সেই টাকা কখনও চাকরি থেকে সম্ভব নয়।

কোনও হয়রানির সম্মুখিন হতে হয় কিনা-- এমন প্রশ্নের জবাবে সালমা খাতুন বলেন, ‘কোনও সমস্যা হয় না। উল্টো সবাই সাহায্য করার চেষ্টা করেন। অনেকে স্যালুট জানান। এসবে অনেকটা ভালো লাগা কাজ করে এবং কনফিডেন্স পাই।'

গরু কিনতে আসা নগরের হামজারবাগ এলাকার মিজানুর রহমান বলেন, এখানে লজ্জার কিছু নেই। পুরুষ বেপারিরা পারলে নারীরা কেন পারবে না। আজ উনি এ পেশায যুক্ত হয়েছেন বলে জীবনে সফলতার মুখ দেখছেন। পরিবারের দায়-দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে তিনি আজ সফল। ওনাকে দেখে বাকি নারী উদ্যোক্তারাও উৎসাহিত হবেন। 

-সিভয়েস/এমএম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়