Cvoice24.com

পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের উদ্বোধন পেছালো

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:১৯, ২০ জুলাই ২০২২
পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের উদ্বোধন পেছালো

জেটি নির্মাণের কাজ পুরোপুরি শেষ। তবে আন্ডারগ্রাউন্ড ও ওভারহিট ওয়াটার ট্যাংক এবং ইয়ার্ড নির্মাণের কাজ এখনো শেষ হয়নি। তাই আগামীকাল বহুল প্রতীক্ষিত পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে প্রথম পণ্যবাহী জাহাজ ভেড়ানোর কথা থাকলেও সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। সে সঙ্গে আগামী মাসের তৃতীয় সপ্তাহে জাহাজ ভেড়ানোর পাশাপাশি সেপ্টেম্বরে টার্মিনালটি উদ্বোধনের পথে হাঁটছে বন্দর। 

পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের কাজ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। সবচেয়ে বড় কথা টার্মিনাল ইয়ার্ডে বসানো হয়নি গুরুত্বপূর্ণ স্ক্যানার মেশিন। এ কারণে প্রথমে শুধু স্ক্র্যাপ বা লোহাজাতীয় পণ্যবাহী জাহাজ ভেড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু টার্মিনালের ভেতরে কাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় সে সিদ্ধান্ত থেকেও সরে আসে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চুক্তি অনুসারে প্রকল্পটির কাজ চলতি বছরের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা। সেখান থেকে পরে জুলাই মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ করার ঘোষণা দেয়। এবারো সে সিদ্ধান্ত থেকে সটকে গিয়ে আগস্ট মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ হবার কথা জানায় বন্দর কর্মকর্তারা। 

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের কাজ ইতোমধ্যে ৯৬ ভাগ শেষ হয়েছে। টার্মিনালের ভেতরে আন্ডারগ্রাউন্ড ও ওভারহিট ওয়াটার ট্যাংক এবং ইয়ার্ড নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি। তাই যথাসময়ে পণ্যবাহী জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। অসমাপ্ত কাজগুলো দ্রুত শেষ করতে ৪ ঘণ্টা কাজ চলছে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে খোলা পণ্যবাহী বা বাল্ক জাহাজ ও কনটেইনারবাহী জাহাজ ভেড়ানো যাবে। পাশাপাশি নিজস্ব ক্রেনযুক্ত ইয়ার্ড জাহাজও এখানে ভেড়ানো সম্ভব হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক সিভয়েসকে বলেন, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে আমরা আগামীকাল পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম পণ্যবাহী জাহাজ ভেড়ানোর জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। তবে টার্মিনালের ভেতরের কিছু কাজ এখনো শেষ করা সম্ভব হয়নি। তাই যথাসময়ে প্রথম পণ্যবাহী জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব হবেনা। তবে স্ক্যনার মেশিনসহ অন্যান্য কাজ শেষ করে আগামী মাসে অবশ্যই আমরা প্রথম জাহাজ ভেড়ানোর মত পরিবেশ তৈরি করতে পারবো। পাশাপাশি টার্মিনাল উদ্বোধনের বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তবে সেপ্টেম্বর মাসে আমাদের বহুল প্রতীক্ষিত এ টার্মিনালটি উদ্বোধনের চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। এই টার্মিনালের মাধ্যমে চার লাখ টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে। এতে করে বন্দরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে ও বন্দরের লজিস্টিক সক্ষমতা বাড়বে।

বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল প্রকল্পে রয়েছে ৩২ একর জায়গায় ৬০০ মিটার দীর্ঘ জেটি। যেখানে তিনটি জাহাজ বার্থিং করতে পারবে। এছাড়া থাকবে ২২০ মিটার দীর্ঘ একটি ডলফিন জেটি। থাকছে ১ লাখ ১২ হাজার বর্গমিটার অভ্যন্তরীণ ইয়ার্ড এবং রাস্তা। পাশাপাশি ২ হাজার ১২৮ বর্গমিটার কনটেইনার ফ্রেইট স্টেশন শেড (সিএফএস), ছয় মিটার উচ্চতার ১ হাজার ৭৫০ মিটার কাস্টমস বন্ডেড ওয়াল, ৫ হাজার ৫৮০ বর্গমিটার পোর্ট অফিস বিল্ডিং, ১ হাজার ২০০ বর্গমিটার যান্ত্রিক ও মেরামত কারখানা, ২ হাজার ৫০০ মিটার রেলওয়ে ট্রেক নির্মাণ, ৪২০ মিটার ফ্লাইওভার নির্মাণ, চার লেনবিশিষ্ট শূন্য দশমিক ৭৫ কিলোমিটার এবং ছয় লেনবিশিষ্ট ১ কিলোমিটার আগের রাস্তা স্থানান্তর করে পুননির্মাণ, সিকিউরিটি পোস্ট, গেস্ট হাউস, ফুয়েল স্টেশন এবং লেবার শেড করা হচ্ছে। 

টার্মিনাল পরিচালনা কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির মধ্যে থাকবে দুটি ফায়ার ট্রাক, একটি ফায়ার কার, তিনটি নিরাপত্তা পেট্রোল কার, একটি আম্বুলেন্স, চারটি গ্যান্ট্রি ক্রেন, চারটি স্ট্রাডেল কেরিয়ার, চারটি রিচ স্ট্যাকার, আটটি রাবার টায়ারড গ্যান্ট্রি ক্রেন (আরটিজি), চারটি লো-মাস্ট ফর্ক লিফট, চারটি ফর্ক লিফট, একটি রেইল মাউন্টেড গ্যান্ট্রি ক্রেন (আরএমজি), দুটি টাগ বোট, দুটি পাইলট বোট এবং দুটি ফাস্ট স্পিডবোট। আর রেললাইন সংযুক্ত থাকবে সাউথ কনটেইনার ইয়ার্ডের সঙ্গে।

চট্টগ্রাম বন্দরে যে ড্রাফটের জাহাজ আসে, তার চেয়েও বড় আকারের জাহাজ পিসিটিতে ভেড়ানো যাবে। বর্তমানে বন্দরে সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফট ও ১৯০ মিটার পর্যন্ত দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভিড়তে পারে। কিন্তু পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল চ্যানেলের গভীরতা বেশি হওয়ায় এখানে সাড়ে ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে জাহাজও ভিড়তে পারবে।
 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়