Cvoice24.com

চট্টগ্রাম কাস্টমস /
ক্রেতাদের আগ্রহ নেই নিলামের ৯ পণ্যে, ২৫ বারেও মিলেনি সাড়া

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:৪২, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
ক্রেতাদের আগ্রহ নেই নিলামের ৯ পণ্যে, ২৫ বারেও মিলেনি সাড়া

চট্টগ্রাম বন্দর শেডে দীর্ঘ বছর ধরে পড়ে আছে বিভিন্ন নিলামযোগ্য পণ্য। ফাইল ছবি।

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা চেয়ার, এলইডি টিভি, জ্বালানি তেল, পাম অয়েল, পুরাতন মেশিনারি, ফেস ওয়াশ, গার্মেন্টস উপকরণ, রাসায়নিকসহ বিভিন্ন ধরনের নিলামযোগ্য পণ্য পড়ে আছে বিভিন্ন শেডে। বার বার নিলামে তুলেও নয় ধরনের পণ্য বিক্রি করতে পারেনি কাস্টমস। এরমধ্যে জুতার কারখানায় ব্যবহৃত গামজাতীয় পণ্য (গ্রাফট) ২৫ বার নিলামে তুললেও ক্রেতার কাছ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি— এমন রেকর্ডও রয়েছে। 

বর্তমানে বন্দরের বিভিন্ন শেডে পিভিসি শিট, রেজার, প্লাস্টিক হ্যাংগার, প্লাস্টিক বাকল, গার্মেন্টস ফেব্রিক্স, রাইচ মিলস মেশিনারি, ছাপাখানার কালি, প্লাস্টিক জার, প্লাস্টিক জিপার, রাবার রোলার, কম্বলের কাপড়, মেটাল ফ্রেম, ব্যাটারি লিড, ক্যাপিটাল মেশিনারি, পুরাতন মেশিনারি, বাটন, বাইসাইকেল পার্টস, অ্যালুমিনিয়াম পাউডার, ফ্লোর টাইলস, ফেস ওয়াশ, উইন্ডার মেশিন, স্পেয়ার পার্টস, ডেন্টাল এক্সেসরিজসহ বিভিন্ন ধরনের নিলামযোগ্য পণ্য পড়ে আছে। 
এরমধ্যে জুতার কারখানায় ব্যবহৃত গামজাতীয় পণ্য (গ্রাফট) ২৫ বার, ফিনিশিং এজেন্ট ২০ বার, হাইড্রোলিক এসিড পণ্য ১৮ বার, ডায়েসিড এইচপি ১৬ বার, রাইচ মিলস মেশিনারি ১৪ বার, প্লাস্টিক হ্যাঙ্গার পণ্য ১১ বার এবং চেয়ার ও ¬৬ বার নিলামে তুলেও ক্রেতা টানতে পারেনি কাস্টমস। আরো ১২ ধরনের পণ্য রয়েছে যেগুলো তিন দফা নিলামে তুললেও বিক্রি হয়নি। 

কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন— আমদানিকারক যথাসময়ে পণ্য খালাস না করলে তা নিলামে তোলার বিধান রয়েছে। তবে কোন পণ্যের বিপরীতে আমদানিকারকের মামলা থাকলে সে পণ্য নিলামে তোলা যায় না। পাশাপাশি একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পণ্যগুলো নিলামে তুলতে হয়। তার উপর বছরের পর বছর পণ্যগুলো বন্দরের বিভিন্ন শেডে পড়ে থাকায় ময়লাযুক্ত হয়ে পরে। পণ্যের গুণগত মান কমে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে ওসব পণ্য কিনতে ক্রেতারা আগ্রহী হন না।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে শ্রীলঙ্কা থেকে জুতার কারখানায় ব্যবহৃত গামজাতীয় ১৭ কেজি পণ্য (গ্রাফট) আমদানি হয়েছিল। চার বছর অপেক্ষা করার পর বন্দরের এল/এফ শেডে পড়ে থাকা এ পণ্য ২০১৯ সালে প্রথম নিলামে তোলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। চার বছরে ২৫ বার নিলামে তুলেও এ পণ্য বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। অপরদিকে ২০১৫ সালে সুইজারল্যান্ড থেকে আমদানি করা ১৯ কেজি ফিনিশিং এজেন্ট (টেক্সটাইলে ব্যবহৃত কেমিক্যাল) গত আট বছর ধরেই বন্দরের পি শেডে পড়ে আছে। ২০২০ সাল থেকে ২০ বার নিলামে তুলেও এ পণ্য অবিক্রিত রয়ে গেছে। 

বন্দরের পি শেডে জরাজীর্ণ ও ভাঙা বোতলে পড়ে আছে ২৭০ কেজি হাইড্রোলিক এসিড। গতবছর থেকে পর পর ১৮ বার নিলামে তোলা হয়েছিল এ পণ্য। ২০১৫ সালে তাইওয়ান থেকে আমদানি করা ৩৭৮ কেজি ডায়েসিড এইচপি নামের রাসায়নিক পণ্য বন্দরের সি টু শেডে পড়ে রয়েছে। ২০২১ সাল থেকে ১৬ বার নিলামে তুলেও বিক্রি করা যায়নি এ পণ্য। এদিকে ২০১৬ সালে রাইচ মিলসে ব্যবহারের জন্য একটি মেশিনারি পণ্য আমদানি করেছিল আমদানিকারক। পণ্য ছাড় না নেওয়ায় ২০১৮ সাল থেকে ১৪ বার নিলামে তুললেও বিক্রি হয়নি। তাছাড়া ২০১৯ সালে বন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছিল ছয় কার্টন প্লাস্টিক হ্যাঙ্গার। বন্দরের এনসিটি ও সিএফএস শেডে থাকা এ পণ্য গতবছর থেকে ১১ বার নিলামে তোলা হয়েছিল। 

অপরদিকে ১৩৩ কেজি প্লাস্টিক বাকল, ছয় পিস চেয়ার ৬ বার নিলামে তোলা হয়েছিল। তাছাড়া চলতি বছর ৬৬০ কার্টন রেজর, ১৯ কেজি আইসেট মোল্ড (তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রক), ১৭৫ পিস এলইডি টিভি, ছয় জার লুব অয়েল, ৪শ লিটার আলকাতরা, ৩শ লিটার কেরোসিন, ৩৬১ লিটার পামতেল, ৫৯ কেজি থিনার, ৯০ লিটার হাইড্রোলিক অয়েল, ১৩৮ কেজি ফসফরিক ও নাইট্রিক এসিড, ৮ কেজি পটাসয়াম হাইড্রোক্সাইড ও ১শ লিটার ফর্মালডিহাইড পর পর তিন বার নিলামে তুললেও তা বিক্রি হয়নি। 

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিলাম শাখার উপ-কমিশনার সন্তোষ সরেন সিভয়েসকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে কনটেইনার জটমুক্ত রাখতে আমরা প্রতিমাসে নিলামের আয়োজন করে থাকি। কিন্তু বার বার নিলামে তোলার পরও কিছু পণ্য অবিক্রিত থেকে যায়। বন্দরের বিভিন্ন শেডে সাত-আট বছর ধরে পড়ে থাকায় অনেক পণ্য গুণগত মান হারায়। তাই ওসব পণ্যের প্রতি ক্রেতার আকর্ষণ কম। তবুও আমরা বার বার পণ্যগুলো নিলামে তুলি। বিক্রির চেষ্টা করি। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর ১১১ লট পণ্য নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংস কার্যক্রমও আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়