Cvoice24.com

চট্টগ্রামে আজ, বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪

সময় ঘন্টা মিনিট সেকেন্ড

মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি, টেকনাফে সুপারি-চকলেট-আচার জব্দ

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৪২, ২০ নভেম্বর ২০২২
মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি, টেকনাফে সুপারি-চকলেট-আচার জব্দ

জব্দকৃত সুপারি।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় ডলার সংকট, এলসি খুলতে সমস্যা, বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে ভারত সরকারের নিরুৎসাহ ও পরিবহন খরচ বাড়ার কারণে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক কার্যক্রমে নেমেছে স্থবিরতা। তবে এ সংকটময় সময়ে সীমান্ত দিয়ে যারাই পণ্য আমদানি করছেন, নিচ্ছেন প্রতারণার আশ্রয়। সম্প্রতি টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য এনে খালাসের পায়তারাও করেছেন টেকনাফের অন্তত চার আমদানিকারক। শুল্ক গোয়েন্দার জালে ধরা পড়ে সুপারি, আচার ও চকলেটবাহী অন্তত সাত ট্রাক।  

২০০২ সালের ১২ জানুয়ারি টেকনাফ স্থলবন্দরে শুরু হয় বাণিজ্যিক কার্যক্রম। এ স্থলবন্দর দিয়ে নৌপথে সুপারি, কাঠ, মরিচ, হলুদ, আদা, শুটকি, ছোলা, আচার ও চাল আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির রীতি অসাধু আমদানিকারকদের জন্য বেশ পুরনো। গত ১৪ নভেম্বর মধ্যরাতে শুল্ক গোয়েন্দার হাতে ধরা পড়ে অন্তত সাতটি ট্রাক। এসব ট্রাকে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আনা বিপুল পরিমাণে সুপারি, আচার ও চকলেট জাতীয় পণ্য জব্দ করা হয়। 

কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, টেকনাফের পুরান পল্টন পাড়ার এম/এস কায়েস এন্টারপ্রাইজ নামের প্রতিষ্ঠানটি টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় ২১০ বস্তা (প্রতি বস্তায় ৭৮ কেজি) সুপারি (গোটা আকারে) আমদানি করে। গত ১৪ নভেম্বর চট্টমেট্রো-ট-১১-৭৭৯৫ নম্বরধারী ট্রাকে করে পণ্যগুলো টেকনাফ স্থলবন্দর ছেড়ে যাওয়ার সময় শুল্ক গোয়েন্দার হাতে ধরা পড়ে। ওইদিন চট্টমেট্রো-ট-১২-০৯০৩ নম্বরধারী ট্রাকে ৩৩৯ বস্তা (প্রতি বস্তায় ৫০ দশমিক ৮৭ কেজি) সুপারি (ভাংগা আকারে) আটক করা হয়। 

ঢাকা মেট্রো-১৬-৯৯৩৯ নম্বরধারী ট্রাকে ছিল ২৭১ বস্তা (প্রতি বস্তা ৫০ দশমিক ৮৯ কেজি) সুপারি (ভাঙ্গা আকারে)। টেকনাফের লামার বাজার চৌমুহনী মার্কেট এলাকার এম/এস শোয়েব এন্টারপ্রাইজ মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্যগুলো আমদানি করে। চালানটি গত ২৯ সেপ্টেম্বর বিল অব এন্ট্রি করা হয় যার নম্বর সি-৩৯১৯। পাশাপাশি চট্টমেট্রো-১১-৫১২০ নম্বরধারী ট্রাকে ৩৫০ ব্যাগ (১৬ হাজার ৪৪০ কেজি) সুপারির চালান আটক করা হয়। 

টেকনাফ স্থল বন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পৃথকভাবে ৫০ বস্তা (প্রতি বস্তায় ৮১ দশমিক ৬৩ কেজি) ও ১৫০ বস্তা (প্রতি বস্তায় ৯৮ দশমিক ৫৩ কেজি) সুপারি আমদানি করে টেকনাফের পুরনো পল্টন পাড়ার এম/এস আনাস এন্টারপ্রাইজ। অবৈধভাবে আনা পণ্যবাহী ট্রাকটি (চট্টমেট্রো-ট ১১-৪৮২৪) গত ১৪ নভেম্বর আটক করে শুল্ক গোয়েন্দা। পাশাপাশি চট্টমেট্রো-ট- ১১-৯৯৬০ নম্বরধারী ট্রাকটিতেও মেলে ২০০ ব্যাগ সুপারি যার ওজন ১৭ হাজার ১৫০ কেজি। 

শুধু সুপারিই নয়, অসাধু আমদানিকারকরা মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করেছেন আচার, চকলেট। গত ১৪ নভেম্বর ট্রাকটি (চট্টমেট্রো-১১-৯৮৯১) আটক করলে ১৫৩ বস্তা (প্রতি বস্তায় ৪৫ দশমিক ২০ কেজি) চকলেট ও ৭৪ বস্তা (প্রতি বস্তায় ৪৩ দশমিক ৯৯) আচারের অস্তিত্ব পায় শুল্ক গোয়েন্দা। চালানটি আমদানি করে টেকনাফের মঙ্গী মার্কেট বাস স্টেশন এলাকার প্রতিষ্ঠান এম/এস তৌহিদ এন্টোরপ্রাইজ।  

টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা আচার জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা।  

মিথ্যা ঘোষণায় আনা পণ্যের চালানগুলোর খালাসের দায়িত্বে ছিল ওয়াটারওয়েস শিপিং এজেনিন্সস লিমিটেড, এম/এস এন এইচ ইন্টারন্যাশনাল ও এম/এস সেভেন স্টার ইন্টারন্যাশনাল নামের সিএন্ডএফ এজেন্ট। আটক করা পণ্যের চালানগুলো গত ১৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের নিলাম শেডে ইনভেন্ট্রি করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বশির আহমেদ সিভয়েসকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা গত ১৪ নভেম্বর টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা পণ্যবাহী সাতটি ট্রাক আটক করি। এসব ট্রাকে বিপুল পরিমাণে সুপারি, আচার আর চকলেট রয়েছে। এ জালিয়াতির মাধ্যমে অসাধু আমদানিকারকরা বিপুল পরিমাণে শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আমরা সেটা রুখে দিতে সক্ষম হয়েছি। আমদানিকারকের বিরুদ্ধে প্রথাগত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়