চড়ছে মুরগি-ডাল-ছোলার দাম
সিভয়েস প্রতিবেদক
দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র রোজার মাস। এলসি খুলতে পারায় চট্টগ্রামের বৃহত্তর ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জে বেড়েছে পণ্যের সরবরাহ। ইতোমধ্যে কমতে শুরু করছে সব ধরনের মসলার দাম। তবে নির্ধারণের পরেও খুচরা বাজারে বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে চিনি। মুরগির কেজিতেও বেড়েছে ১০ টাকা। স্বস্তি মিলছে না ডাল, ছোলা, চালসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের দামে।
দু'সপ্তাহের ব্যবধানে কমতে শুরু করেছে সব ধরনের মসলার দাম। জিরার কেজিতে ২০ টাকা কমে ৫৮০ টাকা, দারুচিনির কেজিতে ৭ টাকা কমে ৩১৫ টাকা, লবঙ্গের কেজিতে ৫০ টাকা কমে ১৩শ টাকা, জায়ফলে ২০ টাকা কমে ৬৫০ টাকা, জয়ত্রীর কেজিতে ৭০ টাকা কমে ২ হাজার ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিকেজি এলাচ ১ হাজার ৪শ, ধনে ১০৫ টাকা, কালিজিরা ২৩০ টাকা ও সরিষা ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি বাজারে রসুনের কেজিতে ১৫ টাকা কমে ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরায় রসুন বিক্রি হচ্ছে ১শ টাকায় যা আগে খুচরায় ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হতো। সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে পেঁয়াজের দরও। কেজিতে ১০ টাকা কমে বর্তমানে পাইকারিতে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ১৮ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ২৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস সিভয়েসকে বলেন, ডলার সংকটর কারণে এতদিন আমদানিকারকরা এলসি খুলতে পারেননি। কিন্তু এলসি খালা যাচ্ছে। প্রচুর পরিমাণ ভোগ্যপণ্য খাতুনগঞ্জে প্রবেশ করছে। তাই বাজারে মসলাজাতীয় পণ্যের সরবরাহ বাড়ায় দামটা কমে গেছে। আশা করছি রোজার মধ্যেও এসব পণ্যের দাম বাড়বে না।
এদিকে দিনকে দিন চড়া হয়ে উঠছে মাংসের বাজার। গত সপ্তাহেও ২৪০ টাকা কেজিতে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হলেও আজ ১০ টাকা বেড়ে ২৫০ টাকায় দাম ঠেকেছে। আর সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকা কজি দরে।
নগরের কর্ণফুলী বাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. হেলাল সিভয়েসকে বলেন, দুসপ্তাহ আগে মুরগি বিক্রি করছিলাম ২৩০ টাকায়। গত সপ্তাহে ২৪০ আর আজকে ২৫০ টাকায়। মুরগির সংকট আছে বল খামারিরা আমাদের কাছ থেকে বেশি দাম নিচ্ছে। তাই আমরাও বাড়তি দামে মুরগি বেচতেছি।
তবে আগের দরে বিক্রি হচ্ছে গরু-খাসি। আজ হাড়সহ গরুর মাংস ৭২০ টাকায়, হাড়ছাড়া গরুর মাংস ৮৫০ টাকা ও প্রতিকেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১শ টাকায়।
এদিকে ভোগ্যপণ্যের বাজারে বেড়েছে চাল, ডালের দাম। পাইকারিতে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি ছোলায় ৯ টাকা দাম বেড়ে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরায় ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। দেশি মসুর ডালের কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ১২০ টাকা, খেসাারির ডালে ৪ টাকা বেড়ে কেজিপ্রতি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজারেও মিলছে না স্বস্তি। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১শ টাকা বেড়ে মোটা সিদ্ধ চালের বস্তা (৫০ কেজি) ২ হাজার ১শ টাকা, ভারতীয় স্বর্ণা ২ হাজার ৪শ, সিদ্ধ মিনিকেট ২ হাজার ৮শ, গুটি স্বর্ণা ২ হাজার ৩শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া পারি সিদ্ধ চালের বস্তায় ২শ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস এম নিজাম উদ্দিন সিভয়েসকে বলেন, মিল পর্যায়ে চালের দাম বেড়ে গেছে। এখানে আমাদের হাত নেই। তার উপর চাল আনতে আমাদের পরিবহন খরচ আছে। শ্রমিকের মজুরি আছে। তবে পাহাড়তলীতে আমাদর স্টকে যে পরিমাণে চাল আছে তা দিয়ে চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। আশা করছি চালের দাম আর বাড়বে না।
এদিকে সবজির বাজারে প্রতিকেজি ফুলকপি ৩০, বাধাকপি ৩০, শসা ৪০, বেগুণ ৫০, টমেটো ২০, লাউ ৩৫ থেকে ৪০, শিম ৪০, মিষ্টি কুমড়া ৪০, করলা ১শ, পটোল ৬০, চিচিঙ্গা ৬০, ঢেড়শ ৬০, কচুর লতি ৬০, বরবটি ৮০, পেঁপে ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে প্রতিকেজি কাতলা ৩শ, রুই ২৬০, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ১৮০, শোল ৪৮০, পাঙ্গাশ ১৭০, পাবদা ৪৫০, চিংড়ি ৬শ ও শিং মাছ ৫শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তাছাড়া প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল খুচরায় ১৮৬ টাকা ও পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ৯শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়।