Cvoice24.com

চট্টগ্রাম বন্দরে ‘জনবলের’ জাহাজ ভিড়বে কবে?

তারেক মাহমুদ

প্রকাশিত: ১৯:১৩, ১১ মার্চ ২০২৩
চট্টগ্রাম বন্দরে ‘জনবলের’ জাহাজ ভিড়বে কবে?

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বন্দরে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন, দামি যন্ত্রপাতি সংযোজন ও বড় জাহাজ ভেড়ানোর মতো একের পর এক ‘সফলতার’ জাহাজ ভিড়েছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে যে জনবল শূণ্যতা সেই শূণ্যতা এখনো কাটেনি। প্রায় ৯ হাজার জনের বিপরীতে এখন কাজ করছে মাত্র ৫ হাজার ৭৩৬ জন। বাকি আড়াই হাজারের অধিক কর্মীর ‘জাহাজ’ ভিড়বে কবে জানা নেই কর্তৃপক্ষের।

বন্দর কর্তৃপক্ষ চায় শতভাগ জনবল পূরণ করা না গেলেও অন্তত 
৫ হাজার ৯৩৩ জনের পদ যেন পূর্ণ হয়। অথচ এখানেও ঘাটতি রয়েছে ১৯৭ জন লোকবলের। ২০২১ ও ২০২০ এই দু’বছর ধরে একই জনবলে চলছে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম।  

বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমসে লোকবল সংকটের বিষয়টি বেশ পুরনো। কাস্টমসের অবস্থা তো আরও শোচনীয়। তবে চট্টগ্রাম বন্দর আধুনিকীকরণের দিক দিয়ে এগিয়ে গেলেও জনবল সংকট নিরসনের বিষয়টিকেও এখন আরও গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে। পণ্যের আমদানি কমে যাওয়ায় বন্দরে এখন খুব একটা কাজের চাপ নেই। তবে যখন কাজের চাপ বাড়ে তখন পরিস্থিতি সামাাল দিতে হিমশিম খায় বন্দর কর্তৃপক্ষ। জনবল সংকট নিরসন না করলে ভবিষ্যতেও এ সমস্যায় পড়তে হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে মোট অনুমোদিত পদ ৮ হাজার ৭৪২টি। এর বিপরীতে কর্মরত আছে মাত্র ৫ হাজার ৭৩৬ জন। শূণ্যপদ আছে ৩ হাজার ৬টি।  

জনবল কাঠামো অনুযায়ী, প্রথম শ্রেণির অনুমোদিত মোট ২৮৫ জনবলের বিপরীতে কাজ করছে ১৯৯ জন। যদিও এ পদে বন্দর চায় ২১২ জন কর্মী। দ্বিতীয় শ্রেণির অনুমোদিত ২৩৫ জনবলের বিপরীতে কাজ করছে ১৯৩ জন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এ পদে বন্দর চায় ২শ জন। তাছাড়া তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে অনুমোদিত পদ আছে ৮ হাজার ২২২টি। এর বিপরীতে কাজ করছে ৫ হাজার ৩৪৪ জন। অথচ এসব পদে ৫ হাজার ৫২১ জন লোক চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ। 

গ্রেড অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বন্দরে ১ম থেকে ৫ম গ্রেডে অনুমোদিত পদ রয়েছে ৬২টি, কাজ করছেন ৪৭ জন। ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম গ্রেডে ২২৩টি অনুমোদিত পদের বিপরীতে কাজ করছেন ১৫২ জন। তাছাড়া ১০ম গ্রেডে ২৩৫ জনের বিপরীতে ১৯৩ জন কাজ করছেন। ১১ থেকে ২০তম গ্রেডে ৮ হাজার ২২২ জনের বিপরীতে কাজ করছেন ৫ হাজার ৩৪৪ জন। তবে চট্টগ্রাম বন্দরে দক্ষ শ্রমিক, আধা দক্ষ শ্রমিক, অদক্ষ শ্রমিক ও অনিয়মিত শ্রমিক ক্যাটাগরিতে কোন শ্রমিক নেই।

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাহবুবুল আলম সিভয়েসকে বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ আমাদের আগামীর স্বপ্ন। তাই বন্দর ও কাস্টমসকে দ্রুত কর্মী সংকট নিরসন করতে হবে। কর্মী হতে হবে নলেজ বেইজড। তাহলে বন্দর ও অর্থনীতি দুটোই এগিয়ে যাবে। পাশাপাশি বিগত কয়েক বছর বন্দর দিয়ে কনটেইনারে করে লোক যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তাই বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করতে হবে। এরজন্যও পর্যাপ্ত লোকবলের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।  

বিজিএমইএর প্রথম সহ সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম সিভয়েসকে বলেন, একটি প্রতিষ্ঠানে যখন জনবল বেশি থাকবে তখন সেবাগ্রহীতারা দ্রুত সেবা পাবে। বর্তমানে বন্দরে কোন জট নেই। তাই এখন কোন সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু যখন বন্দরে কাজের চাপ বাড়ে তখন সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় বন্দর কর্তৃপক্ষকে। তাই অনুমোদিত পদের পুরোটাই নিয়োগ দেয়া দরকার। 

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মোহাম্মদ উমর ফারুক সিভয়েসকে বলেন, বন্দরে পূর্ণাঙ্গ জনবল নেই। তবে সম্প্রতি বন্দরে অফিস সহকারী, কম্পিউটার অপারেটর, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, পরিবহন কর্মকর্তা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ), ল্যান্ড সার্ভেয়ারসহ বিভিন্ন পদে কিছুসংখ্যক লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা শিগগিরই কাজে যোগদান করবেন। আশা করছি বন্দরের যে জনবল সংকট রয়েছে তা সহসা কেটে যাবে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়