Cvoice24.com

মেয়রের মধ্যস্থতায় ফলাফল শুন্য, শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৫৭, ১৫ মে ২০২৩
মেয়রের মধ্যস্থতায় ফলাফল শুন্য, শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

কারখানা বন্ধ হয়ে গেলেও মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর মধ্যস্থতায় ঈদের আগমুহুর্তে আংশিক বকেয়া বেতন- বোনাস নিয়ে বাড়ি ফিরেছিল বাকলিয়ার ডায়নামিক নিটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকরা। মেয়রকে মালিকপক্ষের দেয়া আশ্বাস অনুযায়ী ১৫ মে বাকি বকেয়া বেতন-বোনাস দেয়ার কথা। তবে মালিকপক্ষ বেতন-বোনাস না দিয়ে কালক্ষেপণ করায় মেয়রের বাসভবনের সামনে সড়ক অবরোধ করেছে কারখানাটির শ্রমিকরা। 

সোমবার সকাল থেকে মেয়রের বাসভবনের সামনে আরাকান সড়ক অবরোধ করে রাখে তারা। সন্ধ্যা ৭টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তারা সড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। 

জানা গেছে, নগরের শাহ আমানত ব্রিজ লিংক রোড এলাকায় গড়ে ওঠা ডায়নামিক-৫ নিটওয়্যার লিমিটেড নামের ওই পোশাক কারখানা গত কয়েক মাস ধরে শ্রমিকদের বেতন বকেয়া রেখেছে। নগর পিতা হিসেবে গতমাসে তাদের পাওনার দাবি নিয়ে মেয়রের দ্বারস্থ হয়েছিল ওই কারখানার শ্রমিকরা। ওই সময় মেয়র শ্রমিকদের পাওনা মিটিয়ে দেয়ার জন্য কারখানার মালিক মো. আবু তাহেরকে অনুরোধ করেন। মেয়রের মধ্যস্থতায় সেসময় বেতন-বোনাসের আংশিক পরিশোধ করে ১৫ মে পর্যন্ত বাকি পাওনা পরিশোধে সময় নিয়েছিল মালিকপক্ষ। কিন্তু কথানুযায়ী মালিকপক্ষ তা পরিশোধ করেন নি। তাই ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকরা মেয়রের বাসার সামনে অবস্থান নেয়। এসময় তীব্র গরমে অজ্ঞান হলে নিপা আক্তার নামে এক শ্রমিককে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডায়নামিক-৫ নিটওয়্যার লিমিটেড নামের কারখানার মালিক মো. আবু তাহেরের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি তা রিসিভ করেননি। 

কারখানা শ্রমিক রোজিনা আক্তার সিভয়েসকে বলেন, আমরা বকেয়া বেতন আদায় করতে গত কয়েক মাস ধরে শিল্প পুলিশ, মালিকসহ বিভিন্ন জায়গায় বলেও কোন সমাধান পাইনি। তখন আমরা মেয়রের কাছে গিয়েছিলাম। মেয়রের সহযোগিতায় আজ ১৫ তারিখ বাকি বেতন পরিশোধ করার কথা থাকলেও মালিকপক্ষ এখন বলছে ২৫ তারিখ দেবেন। তাই আমরা মেয়রের কাছে এসেছি। 

গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসরিন রহমান সিভয়েসকে বলেন, গত মাসের ১২ তারিখে ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসের বেতন পরিশোধের কথা ছিল। অথচ ওই সময় বেতন না দিয়ে মালিকপক্ষ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে। ওইদিন শ্রমিকরা কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের গেল এবং আমাকেও বিষয়টা জানায়। এপ্রিলের ১৮ তারিখ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিবুল হাসান, মালিকপক্ষের প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম, কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের ডিআইজি সাকিব মোবারক, আমরা কয়েকজন শ্রমিক নেতা ও কিছু শ্রমিকদের নিয়ে একটা বৈঠক হয়। কিন্তু ওই সময় কোন সমাধান না হওয়ায় সব শ্রমিকরা মেয়রের কাছে যান। তখন মেয়র বললেন শ্রমিকদের কিছু টাকা দিতে হবে। তখন শবে কদরের রাত ৩টা পর্যন্ত শ্রমিকদের ৬ লাখ টাকা দেয়া হয়। বাকি টাকা এবং শ্রমিকদের ঈদ বোনাস আজকে পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু মালিকপক্ষ আমাকে, চসিক মেয়র, শিল্প পুলিশ, কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর ও চান্দগাঁও থানায় চিঠি দিয়ে জানায় তারা আজ বেতন পরিশো্ধ করতে পারবে না। আগামী ২৫ মে বেতন দিবে। তাই শ্রমিকরা মেয়রের বাসার সামনে অবস্থান নেন। 

চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (ইন্টেলিজেন্স এন্ড মিডিয়া) মো. সেলিম নেওয়াজ সিভয়েসকে বলেন, ওই কারখানার শ্রমিকরা গত কয়েক মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। ঈদের সময় তারা বোনাসও পায় নি। মালিকপক্ষ তাদেরকে আজ বকেয়া অর্থ পরিশোধ করবে বলে দিনক্ষণ নির্ধারণ করে দিয়েছিল। কিন্তু টাকা না পাওয়ায় তারা মেয়রের বাসার সামনে অবস্থান নেয়। যেহেতু তারা নগর পিতা হিসেবে আগেও মেয়রের সাথে দেখা করেছিল। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি বিষয়টি দ্রুত সমাধান করার। 

এবিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী সিভয়েসকে বলেন, আমি তো গার্মেন্টস মালিক না। ঈদের আগে শিল্প পুলিশ, গার্মেন্টস মালিক ও শ্রমিকরা আমার কাছে এসেছিল। কোথাও জায়গা না পাওয়ায় আমার বাড়ির উঠানে বৈঠক হয়েছিল এবং শ্রমিকদের কিছু অর্থ দেয়া হয়েছিল। আমার সাথে এ বিষয়ে কোন সম্পৃক্ততা নেই। যেহেতু আমি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি আমার মনে হয় তারা অসহায় হয়েই আমার কাছে এসেছিল।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়